শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

সাদা সেমাইর চাহিদা দেশ-বিদেশে

তৈরি হচ্ছে বগুড়ার আড়াই শতাধিক কারখানায়

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

সাদা সেমাইর চাহিদা দেশ-বিদেশে

সেমাই শুকানোর কাজে ব্যস্ত শ্রমিক -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বগুড়ার সাদা চিকন সেমাই চাহিদা বেড়ে এখন দেশ-বিদেশে যাচ্ছে। দিন যাচ্ছে কদর বেড়েই চলছে। এ এলাকার চিকন সেমাই এখন দেশখ্যাত। জেলার চাহিদা মিটিয়ে এখন যাচ্ছে বিদেশেও। এটা পরিচিতি পেয়েছে বাণিজ্যিকভাবেও। রমজান ও ঈদ উপলক্ষে কয়েক কোটি টাকার এ সেমাইয়ের ব্যবসার আশা করছেন এখানকার কারখানা মালিকরা। আধুনিক মেশিনে মানসম্মত উপায়ে তৈরি হচ্ছে এসব সেমাই।

জানা যায়, বগুড়া জেলার সদর, শাজাহানপুর, গাবতলী, কাহালু উপজেলায় গড়ে উঠেছে সেমাই পল্লী। এসব উপজেলার গ্রামগুলোতে দুই থেকে আড়াই শতাধিক কারখানা গড়ে উঠেছে। তবে গত বছর ময়দার দাম ও শ্রমিক মজুরি বেশি থাকায় অধিকাংশ কারখানা সাদা সেমাই তৈরি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। চাহিদা থাকলেও সরবরাহ করতে পারেনি তারা। অনেক ব্যবসায়ীকে লোকসান গুনতে হয়েছিল। তবে এ বছর ময়দার দাম কিছুটা কমেছে। ফলে অনেক কারখানা নতুন করে চালু হয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, শাজাহানপুর উপজেলার সেমাই পল্লী খ্যাত মাদলা, বেজোড়া, ঢাকন্তা, শ্যাওলাকাথিপাড়া, কালসিমাটি, রবিবাড়িয়াসহ আশপাশের প্রায় ৮ থেকে ১০ গ্রামের নারীদের হাতে প্রায় ৫০ বছর ধরে তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু চিকন সেমাই। এ সেমাই এখন দেশখ্যাত। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিন পাইকাররা নিয়ে যাচ্ছে সাদা সেমাই। প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে সেমাই কারখানার সঙ্গে যুক্ত গ্রামগুলোর নারী-পুরুষরা। প্রতি বছর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পাল্লা দিয়ে কাজ চলে সেমাই পল্লীর কারিগরদের। তারা দিনরাত তৈরি করেন এ সেমাই। প্রতি বছর ঈদ উৎসব ঘিরে রঙিন স্বপ্নে বিভোর থাকেন সেমাই পল্লীর মানুষ। শ্যাওলাকাথিপাড়া গ্রামের কারখানার মালিক জাহাঙ্গীর আলম জানান, রোজার এক-দেড় মাস আগে থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে চিকন সেমাইয়ের অর্ডার আসতে শুরু করে।                ঈদের আগে সাদা সেমাইয়ের চাহিদা ব্যাপক বেড়ে যায়। এ সময় উৎপাদনও বেড়ে যায়। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা আসেন সাদা সেমাই নিতে। বর্তমানে বিভিন্ন দেশেও যাচ্ছে এই সেমাই। এ মৌসুমকে ঘিরে জেলাজুড়ে কয়েক কোটি টাকার সাদা সেমাইয়ের ব্যবসা হবে। দিনাজপুর থেকে আসা পাইকার আকবর হোসেন জানান, প্রায় ১০ বছর ধরে এ এলাকা থেকে সাদা নিয়ে যাই। এখানকার সেমাইয়ের চাহিদা প্রচুর। প্রতি সপ্তাহে ৩০ থেকে ৪০ মণ সেমাই নিয়ে দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করি। শাজাহানপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ছান্নু জানান, স্বাধীনতার পর থেকেই এসব গ্রামে চিকন সেমাই তৈরি হয়। সময়ের ব্যবধানে এ শিল্প বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে এখানকার তৈরি চিকন সাদা সেমাইয়ের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে দেশের নানা প্রান্তে। সারা বছরই কমবেশি সাদা সেমাই তৈরি করা হয় গ্রামগুলোতে।

সর্বশেষ খবর