শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

শিমুল ফুলে লাল রাস্তার দুই পাশ

দিনাজপুর প্রতিনিধি

শিমুল ফুলে লাল রাস্তার দুই পাশ

কালের বিবর্তনে এখন আর যেখানে-সেখানে চোখে পড়ে না রক্ত লাল শিমুল গাছ। কয়েক দশক আগেও গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় গাছে গাছে ঝুলে থাকত শিমুল ফুল। তবে শিমুল গাছ এখন অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। তবে এর পরেও শিমুল গাছের দেখা মেলে দিনাজপুর থেকে বীরগঞ্জ ২৮ কিলোমিটার রাস্তার দুই পাশে। সেখানে রক্তিম রঙে রঙিন হয়ে আছে শিমুল ফুল। এ মহাসড়কের বিভিন্ন গাছের ফাঁকে ফাঁকে শতাধিক শিমুল গাছ রয়েছে। শুধু ফুল আর ফুল, পাতা নেই। এ ফুল যেন দৃৃষ্টি কেড়ে নেয় সবার মন। পাখিরা উড়ে এসে বসছে লাল শিমুল ফুলের ওপর। ঝরে পরা শিমুলের লাল গালিচা দেখা যায় শিমুলতলায়। মোহনীয় রূপে প্রকৃতিকে রাঙিয়েছে শিমুল। যা পথচারীসহ বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীদের দৃষ্টি কাড়ছে। গাছে গাছে এখন পরিপক্ব শিমুল ফুল। কাকডাকা ভোরে রাস্তায় ঝরে পড়া ফুল দেখে মনে অন্য রকম অনুভূতি জাগে। মনে হয় যেন রক্তিম রাঙা পথ। গাছে গাছে এ শিমুলের লাল রং যেন চারদিকে ছড়িয়ে দিচ্ছে।

এরপর এ রক্ত লাল থেকে সাদা ধূসর হয়ে তৈরি হয় তুলা। শিমুলের তুলার রয়েছে আলাদা কদর। কিন্তু এখন বিভিন্ন প্রযুক্তিতে তুলা তৈরি ও ফোম ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় শিমুল তুলা ব্যবহার অনেক কমে গেছে। চাহিদা থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় এ তুলার ব্যবহার কমে গেছে। কয়েক দশক আগেও দিনাজপুরের গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা শোভাবর্ধন করত শিমুল ফুল। এখন আর সেভাবে চোখে পড়ে না শিমুল গাছ।

স্থানীয় আবদুর রাজ্জাকসহ কয়েকজন জানান, এ মহাসড়কে শিমুল ফুলের লাল রঙ দৃষ্টিনন্দন রূপ দিয়েছে রাস্তার দুই পাশের প্রকৃতিকে। গ্রাম বাংলায় এ শিমুল গাছ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এনে দিত। এক সময় মানুষ এ শিমুলের তুলা কুড়িয়ে বিক্রি করত। অনেকে তুলা দিয়ে বানাত লেপ, তোশক, বালিশ। ছোট শিমুল গাছের মাটির নিচের অংশ মূলের উপকারিতা অনেক। ভেষজ চিকিৎসা কাজে এ গাছের রয়েছে নানাবিধ ব্যবহার। গ্রামাঞ্চলের মানুষ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে শিমুলের রস ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে গাছের মূল ব্যবহার করত।

বিরল উপজেলা উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা শাহজাহান আলী জানান, শিমুল ফুল শুধু সৌন্দর্য বর্ধনই করে না। শিমুল গাছের রয়েছে নানা উপকারিতা। শিমুল গাছ ঔষধি গাছ হিসেবে পরিচিত। শিমুলের তুলা বিক্রি করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছে, এমন নজিরও আছে। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন আর তেমন চোখে পড়ে না শিমুল গাছ। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে শিমুল গাছ। শিমুল গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি ফার্নিচারের স্থায়ীত্ব বেশি হয় না। এ ছাড়া বিভিন্ন ফোমের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় শিমুল তুলা ব্যবহার কমে গেছে। ফলে শিমুল গাছ হারিয়ে যাওয়ার পথে।

সর্বশেষ খবর