মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

গরমে হাসপাতালে রোগী বেড়েছে

♦ বয়স্ক ও শিশুরা বেশি আক্রান্ত ♦ চিকিৎসকরা হিমশিম

দিনাজপুর প্রতিনিধি

গরমে হাসপাতালে রোগী বেড়েছে

‘সর্দি-জ্বর, ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি অনেকেই। রোগীর চাপ বাড়ায় হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে’

গরমের তীব্রতায় বিপাকে পড়েছে দিনাজপুরের মানুষ। তার সঙ্গে বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় চলছে লোডশেডিং। গরমে ডায়রিয়া, পেটের পীড়া, জ্বর-কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টের রোগী বেড়েছে। বয়স্ক ও শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। বিভিন্ন উপজেলার হাসপাতালে রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো কোনো হাসপাতালে মেঝেতে রোগী রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি ও তরল খাবার গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। অসহনীয় গরম থেকে একটু স্বস্তি পেতে ভিড় করছে রাস্তার পাশে বিভিন্ন পানীয়, লেবুর শরবত, আখের রস, বেল, তরমুজ, ডাব এ দোকানে। শহরের বিভিন্ন স্থানে গাছের ছায়ায় রিকশা ও অটোচালকদের বিশ্রাম নিতে দেখা যায়। গতকাল চিরিরবন্দরের রানীবন্দর কলেজ মোড় এলাকায় ভ্যাপসা গরমে একটু আরামে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন রানীপুরের ভ্যানচালক মো. লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, ভ্যাপসা গরমে গলা শুকিয়ে আসছে, ভ্যান চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তাই ভাড়া যাওয়া বাদ দিয়ে ছায়ায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছি। দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, সোমবার দুপুর ৩টায় দিনাজপুরে ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের আর্দ্রতা ২৮ শতাংশ এবং বাতাসের গড় গতিবেগ ১১ কিলোমিটার। এ অবস্থা থাকবে আরও কিছুদিন। আপাতত দিনাজপুরে বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখা যায়, ফাঁকা নেই হাসপাতালের বেড। জরুরি বিভাগ এবং বহির্বিভাগে রোগীর চাপ। সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমে সর্দি-জ্বর, ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছে অনেকেই। রোগীর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালে নির্ধারিত বেড ছাড়াও মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে অনেককে। অসুস্থদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু ও বৃদ্ধ বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিশ্চিত করে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে বিভিন্ন রোগে চিকিৎসা নিচ্ছে এখন প্রতিদিনই ৫০০-৫৫০ জন রোগী। জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছে ৬০-৬৫ জন। ভর্তি রোগী রয়েছে ৮৫ জন, এর মধ্যে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি রয়েছে ১৪ জন। অনেক রোগীকে মেঝেতে থাকতে হচ্ছে। তিনি আরও জানান, এ হাসপাতালে আসার আগেই প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে দুজন মারা গেছেন। এদের একজন ২০ এপ্রিল সন্ধ্যায় এবং অপরজন একই দিন রাতে মারা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত গরমে হিট স্ট্রোকে তাদের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- পৌর এলাকার চকসাবাজপুর গ্রামের সাবেক পৌর কাউন্সিলর মোতাহার আলী (৫৮) এবং অপরজন যশোর কোতোয়ালি থানা এলাকার রাজারহাট গ্রামের ট্রাকচালক বিল্লাল হোসেন (৫২)।

সর্বশেষ খবর