বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

স্কুলের পাশে ময়লার ভাগাড়

♦ ছড়াচ্ছে উৎকট গন্ধ ♦ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে হাজারো কোমলমতি শিক্ষার্থী

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি

স্কুলের পাশে ময়লার ভাগাড়

ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার শুভাঢ্যা ইউনিয়নের নয়াশুভাঢ্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ময়লা-আবর্জনার বিশাল স্তূপ। ময়লার ভাগাড় থেকে ছড়াচ্ছে উৎকট গন্ধ। দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ। মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ছে। গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে এ বিদ্যালয়ের হাজারো কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ আশপাশের বাসিন্দারা। ক্লাসরুমে বসে থাকতে কষ্ট হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ। বাড়ছে মশার উপদ্রব। ইতোমধ্যে অনেক শিক্ষার্থী ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। এ নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে বিদ্যালয়টিতে কমছে শিক্ষার্থী।

সূত্র জানান, এ বিদ্যালয়ে ১ হাজার ৩৪৫ জন শিক্ষার্থী দুই শিফটে পড়াশোনা করে। এখানে শিক্ষক রয়েছেন ২১ জন। সরেজমিনে দেখা যায়, স্কুলের উত্তর ও পূর্ব পাশ ঘেঁষে ময়লা-আবর্জনার বিশাল ভাগাড় রয়েছে। দিন যত যাচ্ছে রাস্তার পাশে ময়লা-আবর্জনা ততই বাড়ছে। মুরগি, গরুর নাড়িভুঁড়ি, বাসাবাড়ির ময়লা, কাঁচাবাজারের উচ্ছিষ্ট শাকসবজি, হোটেলের পচা-বাসি খাবারসহ সব ধরনের আবর্জনা এখানে ফেলা হচ্ছে। ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই এগুলো পচে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হচ্ছে। উৎকট দুর্গন্ধে ওই রাস্তায় পথচারীদেরও সমস্যা হচ্ছে। দুর্গন্ধে ক্লাসরুমে বসে থাকা দায় হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীদের। প্রতিদিন ময়লা ফেলায় শিক্ষার্থীদের মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। ওই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আলিফা আক্তার জানায়, ‘ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে ক্লাসরুমে বসা খুবই কষ্টের। স্কুলে যতক্ষণ থাকি ততক্ষণ আমাদের দুর্গন্ধের মধ্যে কাটাতে হয়। দুর্গন্ধে বমি চলে আসে। এ রকম অবস্থা অনেক দিন থেকে চলছে। এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করা ও স্কুলে ক্লাস করা অনেক কষ্টকর।’ খাদিজা বেগম নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘দুর্গন্ধে টেকা যায় না। তার পরও মেয়েকে জোর করে স্কুলে পাঠিয়েছিলাম। কয়েকদিন পর পরই মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ত। এখন আর সে স্কুলেই যায় না। অন্য স্কুলে পড়াব সেই সামর্থ্যও আমার নেই।’ প্রধান শিক্ষক কণিকা রানী রায় বলেন, ‘ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধের ফলে আমাদের ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস ও রাস্তায় চলাচল করতে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে ভবনের নিচতলার ক্লাসরুমগুলো ব্যবহার করতে পারছি না। মশার উপদ্রব বাড়ছে। অনেক শিক্ষার্থী ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ময়লার কারণে ভুক্তভোগী হচ্ছে, অসুস্থ হয়ে পড়ছে, এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের জোর দাবি-বিদ্যালয়ের পাশে দ্রুত ময়লা ফেলা বন্ধ করতে হবে।’ কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু রিয়াদ বলেন, ‘শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য শিগগির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্কুলের আঙিনার আশপাশে কেউ কোনো ধরনের ময়লা ফেলতে পারবে না।’

সর্বশেষ খবর