বুধবার, ৫ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

তিস্তার ভাঙনে দিশাহারা মানুষ

♦ তিন দিনে বিলীন ১৭ বসতবাড়ি ♦ হুমকিতে শতাধিক বাড়িঘর ♦ ভিটেমাটি রক্ষার দাবি

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

তিস্তার ভাঙনে দিশাহারা মানুষ

লালমনিরহাটে তিস্তা নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীর পানি বাড়া-কমার সঙ্গে তীব্র হচ্ছে ভাঙন। বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, ফসলি জমি ও গাছপালা। তিন দিনে জেলার আদিতমারী, পাটগ্রাম ও সদরের ১৭টি বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। সেই সঙ্গে নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে আবাদি জমিও। ভিটে-মাটি রক্ষায় ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থার দাবিতে মানববন্ধন-সমাবেশ করছেন স্থানীয়রা। পাউবো বলছে, বরাদ্দ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, তিন দিনে জেলার আদিতমারী, পাটগ্রাম ও সদরের আটটি পয়েন্টে তীব্র ভাঙনে ১৭টি বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, কয়েকদিনে নদীতে বিলীন হয়েছে জেলার আদিতমারীর বাহাদুরপাড়া ও গরিবুল্লাহপাড়ার বসতভিটা। এ ছাড়া বিলীন হচ্ছে ধান, ভুট্টা, পাট, মরিচ খেতসহ ফসলি জমি। হুমকিতে রয়েছে শতাধিক পরিবারের বাড়িঘর। স্থানীয়রা আরও জানায়, উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তার চর ও তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। চরাঞ্চলের বাদাম, মিষ্টি কুমড়া, ভুট্টা খেতসহ বিভিন্ন ফসলি জমি পানিতে ডুবে যায়। এতে কৃষকদের উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। আদিতমারীর গোবর্ধনের কৃষক মতি মিয়া বলেন, চরে এ বছর মরিচ, ভুট্টা ও পিঁয়াজ চাষ করেছিলাম। হঠাৎ পানিতে ডুবে আমার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে বারবার পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। নদীভাঙন রোধে ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দারা মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন। বক্তারা অভিযোগ করেন, দুই সপ্তাহ ধরে ভাঙন চললেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পাউবো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে শতাধিক বাড়িঘর নদীতে বিলীন হতে পারে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, আমরা ভাঙনের ভিডিওসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়েছি। বরাদ্দের আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু হবে। ইতোমধ্যে কিছু এলাকায় বরাদ্দ আসায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হচ্ছে।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ জানান, ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে যথাযথ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর অব্যাহত রয়েছে।

সর্বশেষ খবর