শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

খাল দখল করে মাছ চাষ

সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা, বাধাগ্রস্ত হচ্ছে কৃষিকাজ, হুমকির মুখে মৎস্যজীবীদের জীবন-জীবিকা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

খাল দখল করে মাছ চাষ

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় শতাধিক খাল দখল করে মাছ চাষ করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা এর সঙ্গে জড়িত। খালে বাঁধ দেওয়ায় পানি নিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে অর্ধশতাধিক বিলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। নৌ চলাচল ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি কৃষিকাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার কৃষকরা। বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বিলের পরিবেশ। ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য, হারিয়ে যাচ্ছে দেশি মাছ। এতে মুক্ত জলাশয় থেকে মাছ ধরে সংসার চালানো মৎস্যজীবীরা জীবনজীবিকা নিয়ে হুমকির মুখে পড়েছেন। তারা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ- দখল করা খাল উদ্ধারে প্রশাসন থেকে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এসব খাল উদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ ও মৎস্যজীবীরা। দখলকৃত খাল উদ্ধারে প্রশাসন থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। মুক্ত জলাশয় থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা মৎস্যজীবী ও সাধারণ মানুষ দ্রুত সময়ের মধ্যে দখলকৃত খাল উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন। এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা গেছে, বুধবার উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলার পিঞ্জুরী ইউনিয়নের দেওপুরা খাল, সোনাখালী কুমলাবতী খাল, তারাইল খাল, ফুলবাড়ি খাল দখলমুক্ত করা হয়েছে। তবে কুঞ্জবনের খাল দখল করে এখনো মাছ চাষ করছেন বিপুল বাড়ৈ। অদৃশ্য কারণে এসব খাল উদ্ধারে উপজেলা প্রশাসন আগে কোনো পদক্ষেপ না নিলেও এখন দখলমুক্ত করতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাছ চাষিরা প্রভাবশালী হওয়ায় এবং অদৃশ্য কারণে এসব খাল উদ্ধারে প্রশাসন থেকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। এসব খাল দখলের কারণে নৌ চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। খালগুলোর আশপাশের এলাকার কৃষকদের কৃষিকাজও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এসব খাল থেকে আগে যেসব মৎস্যজীবী মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন, তারা ওইসব প্রভাবশালীর বাধার মুখে খাল থেকে মাছ ধরতে পারছেন না। তারা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গজালিয়া গ্রামের সুরেশ বাড়ৈ বলেন, আগে আমরা এলাকার বিভিন্ন খাল বিল থেকে দেশি মাছ ধরে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করতাম। এ মাছ বিক্রির টাকা দিয়ে আমাদের সংসার চলত। এখন আমরা আর এসব খাল-বিল থেকে মাছ ধরতে পারছি না। ফলে আমরা এখন বেকার হয়ে পড়েছি। উপজেলার দেশীয় মাছ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম হাজরা মন্নু বলেন, উপজেলার ছোট-বড় শতাধিক খাল দখল করে মাছ চাষ করা হচ্ছে। এতে দেশি মাছ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস এবং নৌ চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নকশা দেখে দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব খাল উদ্ধারের দাবি জানাই। তবে দখলকারীদের কাছে খাল দখলের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ইউএনও শাহীনুর আক্তার বলেন, দখল করা খাল উদ্ধারে আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নেব।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর