শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

যমুনার ভাঙন ভয়াবহ

১০ দিনে বিলীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হাসপাতাল, ৫ শতাধিক বসতভিটা শত শত বিঘা জমি

আব্দুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

যমুনার ভাঙন ভয়াবহ

যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে সেই সঙ্গে ভাঙন বেড়েছে। ১০ দিনের ভাঙনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ৫ শতাধিক বসতভিটা, শত শত বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন রোধে কয়েকটি পয়েন্টে পাউবো জিওব্যাগ ফেলেছে। তবে চরাঞ্চলে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে ভাঙনকবলিতদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। ভাঙনের কারণে দিশাহারা যমুনা তীরের বাসিন্দারা। তারা ঘরবাড়ি সরিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। ঘর তোলার জায়গা না থাকায় ঘরবাড়ি স্তূপ করে রেখে অনেকে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে ভাঙনকবলিতরা। পাউবো কর্মকর্তারা বলছেন, ডান তীরে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চরাঞ্চলে ভাঙন রোধে প্রকল্প নেই। তাই ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনার পানি বৃদ্ধি পায়। তবে তিন দিন ধরে পানি কমছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে চরাঞ্চলের সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়ন, কাজিপুর উপজেলার রাজবাড়ী, খাসরাজবাড়ী, চরমিয়াখোলা, যুক্তিগাছা, যমুনার ডান তীরের শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর, কৈজুরী, আড়কান্দি ও পাঁচিলে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ১০ দিনে ভাঙনে প্রায় ৫০০ বসতভিটা, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি, বহু স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে হাজার হাজার বসতভিটা ও ফসলি জমি, অসংখ্য স্থাপনা। ভাঙনকবলিতরা বলছে, ভাঙনের কারণে বসতভিটা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। জায়গা না থাকায় স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বহু স্থাপনা বিলীন হয়ে হাজার হাজার মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাবে। খাসরাজবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব, ঘুটু ও ওসমান জানান, ১০ দিন ধরে খাসরাজবাড়ী গ্রামে তীব্র ভাঙন চলছে। ভাঙনের কবলে পড়ে বসতভিটা, ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াব, কীভাবে সংসার চালাব সে দুশ্চিন্তায় আছি। চরমিয়াকোলা গ্রামের শাহাদাত হোসেন ও বেলাল হোসেন জানান, ব্যাপক হারে নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলেও এখন পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো কর্মকর্তা দেখতেও আসেননি। এমনভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে কাজিপুর উপজেলার মানচিত্র থেকে খাসরাজবাড়ী ইউনিয়ন হারিয়ে যাবে। হাসপাতাল, বিদ্যুতের খুঁটি, বসতভিটা, ফসলি জমি সবকিছু বিলীন হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, পানি কমাবাড়ায় যমুনার ডান তীরে ভাঙন শুরু হয়েছে। সেখানে জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে চরাঞ্চলের ভাঙন রোধে কোনো প্রকল্প নেই। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত জানানো হয়েছে। জরুরি প্রকল্প নেওয়া হলে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা হবে।

সর্বশেষ খবর