শুক্রবার, ১২ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

রেলের কোয়ার্টার বেদখল

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

রেলের কোয়ার্টার বেদখল

রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলীয় লালমনিরহাট বিভাগের আওতাধীন রেলের ৭০০ আবাসিক কোয়ার্টার দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। ভবনগুলোর ছাদ ও ওয়ালে ফাটল ধরেছে, জানালা-দরজা নেই। আগাছায় ভরে গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ এসব কোয়ার্টারে রেলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা থাকেন না। এগুলো এখন নেশাখোর ও সাধারণ মানুষের দখলে। অভিযোগ উঠেছে রেলওয়ের কয়েক হাজার কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি দিন দিন হাতছাড়া হলেও অদৃশ্য কারণে নীরব রয়েছে রেলওয়ে প্রশাসন।  স্থানীয়রা বলছেন, সন্ধ্যার পর ভবনের পাশের রাস্তা দিয়ে চলতে গেলে গা শিউরে ওঠে। দেখে মনে হয় ভূতুড়ে বাড়ি। এসব ভূতুড়ে পরিত্যক্ত ও জীর্ণ কোয়ার্টারগুলোতে বসবাস করছেন কিছু বহিরাগত অসহায় পরিবার। কিছু ভবন নেশাখোরদের দখলে। সন্ধ্যা হলেই এসব পরিত্যক্ত ভবনে আসে নেশাখোররা। গভীর রাত পর্যন্ত চলে তাদের আড্ডা। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে রেলওয়ের অধিকাংশ আবাসিক কোয়ার্টারের এ অবস্থা সৃষ্টি বলে অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, রেলওয়ে বিভাগীয় শহর লালমনিরহাট। রেল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বসবাসের জন্য সরকার রেলওয়ের মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানোর জন্য আবাসিক কোয়ার্টারগুলো তৈরি করে। এ বিভাগের আওতাধীন ৯১০টি কোয়ার্টারের মধ্যে ৭০০টি চলে গেছে রেলের বেদখলে। পুরনো ও জীর্ণ অধিকাংশ ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হলেও তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লালমনিরহাট জেলার সীমানাজুড়ে রেলস্টেশন রয়েছে। এসব স্টেশন সংলগ্ন আবাসিক কোয়ার্টারগুলোয় স্টেশন মাস্টারসহ অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীর বসবাসের জন্য রেলওয়ে বিভাগ কোয়ার্টারগুলো তৈরি করে। কিন্তু রেল কর্মকর্তাদের উদাসীনতা ও সঠিক তদারকির অভাবে কোটি কোটি টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রেল বিভাগ। সরকার হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব।  ব্রিটিশ আমলে তৈরি লাল রঙের ভবনগুলো থেকে চুরি হয়ে যাচ্ছে ইটসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি। এগুলো এখন মাদক ব্যবসাসহ নানা অনৈতিক কাজে ব্যবহার হচ্ছে। কয়েকটি কোয়ার্টারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, মুহুরী, মুদি-দোকানদার বছরের পর বছর ধরে আছেন। ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম স্বপন এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি। লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার মোহাম্মদ আবদুস সালাম বলেন, রেলওয়ের কোয়ার্টারগুলোর বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। কোয়ার্টারগুলো বসবাসের অযোগ্য হওয়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সেখানে বসবাস করতে চান না। এখন রেলের জনবল বৃদ্ধি পাওয়ায় এগুলো সংস্কার করে চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর