মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

যমুনার কোলঘেঁষে শিল্পপার্ক

হবে লাখো মানুষের কর্মসংস্থান শিল্পনগরী হবে সিরাজগঞ্জ

আবদুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

যমুনার কোলঘেঁষে শিল্পপার্ক

সিরাজগঞ্জ বিসিক শিল্পপার্ক -বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রমত্তা যমুনার কোলঘেঁষে নির্মাণ হয়েছে সিরাজগঞ্জ বিসিক শিল্পপার্ক। শত শত শিল্প কারখানায় লাখো মানুষের কর্মসংস্থান ও ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন দ্বার উন্মোচন হবে। শিল্পপার্কটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এবং ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের মাঝে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হবে চলতি বছরেই। ৮২৯টি প্লটে ৫৭০টি ছোট-বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে এখানে। এতে সিরাজগঞ্জ শিল্পনগরী হিসেবে গড়ে উঠবে। অর্থনীতির গতি বাড়বে। বদলে যাবে যমুনা পাড়ের মানুষের জীবনমান।

জানা যায়, উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার যমুনা নদী বিধৌত সিরাজগঞ্জ জেলা শিল্প-ব্যবসা ও বাণিজ্যের দিক দিয়ে অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু উদ্বোধনের পর ঢাকার সঙ্গে সিরাজগঞ্জসহ সমগ্র উত্তরাঞ্চলের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তখন থেকে নদীভাঙন কবলিত সিরাজগঞ্জ জেলার মানুষ উন্নয়নের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে যমুনা নদীর পশ্চিম কোলঘেঁষে বিসিক শিল্পপার্ক নির্মাণ প্রকল্প নেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই সময় বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড়ে বিসিক শিল্পপার্ক নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। নির্মাণ করা হয় বাউন্ডারি ওয়াল ও অফিসঘর। কিন্তু ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আবারও প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড়ে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলী ও পশ্চিম মোহনপুর এবং কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের বনবাড়িয়া, বেলুটিয়া ও মোড়গ্রাম মৌজার ৪০০ একর জমির ওপর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। ৭১৯ কোটি ২১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পটির কাজ এখন শেষ। সরকার পরিবর্তন, আমলাতান্ত্রিক নানা জটিলতাসহ বিভিন্ন প্রতিকূলতা পেরিয়ে ২৪ বছর পর সিরাজগঞ্জবাসী তাদের স্বপ্নের শিল্পপার্কটির বাস্তবায়ন দেখতে পাচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরাফাত কনসালটেন্ড মফিজুল ইসলাম ও সাইড ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম সবুজ জানান, সড়ক, ড্রেন, গাইড ওয়াল ও কালভার্ট নির্মাণে প্রায় ১২০০ শ্রমিক কাজ করছেন। কাজের প্রায় ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। সড়ক ও ড্রেনের কিছু অংশ এবং গাইড ওয়ালের কিছু কাজ বাকি আছে যা কয়েক দিনের মধ্যে হয়ে যাবে।

সিরাজগঞ্জের বিসিক শিল্প পার্কের উপ-মহাব্যবস্থাপক ও প্রকল্প পরিচালক জাফর বায়েজিদ বলেন, ৪০০ একর ভূমির ওপর স্থাপিত প্রকল্পের ২৭৫ একর জমিতে এ বি ও এস (স্পেশাল) এই তিন ক্যাটাগরির ৮২৯টি প্লট প্রস্তুত করা হয়েছে। বাকি জমির মধ্যে ১০ একর জায়গাজুড়ে সবুজ বৃত্তসহ একটি লেক থাকবে যাতে শিল্পপার্কের সৌন্দর্য বাড়াবে। পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য ড্রেন, পরিবহনের রাস্তাঘাট বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। ৮২৯টি প্লটে ছোট, বড় ও মাঝারি ৫৭০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যাবে। দেশীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে রপ্তানি ও আমদানিমুখী শিল্প প্লট অনুমোদনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। খুব শিগগিরই প্লট বরাদ্দের দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি চালু হলে এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সংসদ সদস্য জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী জানান, শিল্প পার্কটি এমন স্থানে নির্মাণ হচ্ছে যেখান থেকে সড়ক, রেল ও নৌপথের সুব্যবস্থা রয়েছে।

 

 

সর্বশেষ খবর