আষাঢ় মাস পার হয়ে শ্রাবণেও দেখা মেলেনি বৃষ্টির। ধানের জমি শুকিয়ে আছে। আমন মৌসুমে ধানের চারা রোপণ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন দিনাজপুরের কৃষকরা। তারা বৃষ্টির অপেক্ষায় রয়েছেন। যারা আলু চাষ করার জন্য আগাম চারা রোপণ করেছেন তাদের সেচ দিতে হচ্ছে। অনেকেই সেচ দিয়ে চারা রোপণের চেষ্টা করছেন। এতে আমন চাষে খরচ বেড়ে যাবে, বলছেন কৃষকরা। বৃষ্টির অপেক্ষায় তারা আমন চাষে পিছিয়ে পড়ছেন।
বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, কেউ কেউ আষাঢ় মাসের বৃষ্টিতে সুগন্ধি জাতীয় ধান ব্রি-৯০ (৯০ জিরা) ও ব্রি-৫১ (হাইব্রিড) জাতের ধানের চারা রোপণ করেছেন। কিন্তু খেত শুকিয়ে যাচ্ছে। কেউ শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দিচ্ছেন। কেউ সেচ দিয়ে জমিতে আমন চারা রোপণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শ্রাবণের দ্বিতীয় সপ্তাহ পার হলেও বৃষ্টির দেখা না পাওয়ায় খরার কবলে পড়েছে আমন চাষ। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, এখনো সময় আছে। যেসব জমিতে আমন চারা রোপণ চলছে সেসব আগাম জাতের। তারা আগাম জাতের ধান তুলে আলু চাষ করবেন। চিরিরবন্দরের নশরতপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, শ্রাবণেও বৃষ্টি নেই, তীব্র রোদে জমির খেত শুকিয়ে গেছে। সেচ দিলেও পানি থাকছে না। এরপরেও সেচ দিচ্ছি। তা না হলে আমন চারা নষ্ট হয়ে যাবে। খরচ বেড়ে যাবে। আরেক কৃষক আজগার আলী জানান, আষাঢ়ের বৃষ্টিতে চার বিঘা জমিতে ব্রি-৫১ (হাইব্রিড) জাতের ধান রোপণ করেছেন। হাইব্রিড ধান চাষে পানি বেশি প্রয়োজন। তাই জমিতে সেচ দিচ্ছেন। এখনই আমন চারা রোপণ করতে না পারলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে না। কাহারোলের বাইশপুর গ্রামের কৃষক হবিবর রহমান জানান, এবার চার একর জমিতে ৫১ জাতের আমন ধান রোপণ করেছেন। হাটিয়ারী গ্রামের উজ্জ্বল চন্দ্র রায় এক একর জমিতে আগাম জাতের বিনা-৭৫ চাষ করেছেন। আবহাওয়া অফিস জানায়, তাপমাত্রা ৩০-৩৭ ডিগ্রি পর্যন্ত ওঠানামা করছে। দিনাজপুরে মৌসুমি বায়ু বিরাজ করছে। দু-এক দিনের মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান মিয়া বলেন, জেলায় চলতি আমন মৌসুমে ২ লাখ ৭০ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ ফলনশীল জাতের ২ লাখ ৩৬ হাজার ২৫০, হাইব্রিড জাতের ২৫ হাজার ১৫০ ও স্থানীয় জাতের ৯ হাজার ১৫০ হেক্টর জমি। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টন চাল।
