গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া-জুমারবাড়ী রাস্তার ওপর নির্মাণ করা পূর্ব আমদিরপাড়া ব্রিজটি দেবে গিয়ে জনসাধারণের চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগে ব্রিজটির ওপর কাঠের সাঁকো তৈরি করে চলাচলের ব্যবস্থা করেন। ওই সাঁকোর ওপর দিয়ে চলাচল করছে মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও অটোভ্যান। যে কোনো মুহূর্তে এ কাঠের সাঁকোটিও ভেঙে পড়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। বিকল্প পথ না থাকায় ও প্রয়োজনের তাগিদে সেখান দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে দুই ইউনিয়নের অন্তত আট গ্রামের মানুষকে।
স্থানীয়রা জানায়, এ সড়ক ও ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন হলদিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুর, বেড়া, গারামারা, দক্ষিণ দীঘলকান্দি, উত্তর দীঘলকান্দি, পাতিলবাড়ী ও জুমারবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব আমদিরপাড়ার মানুষ চলাচল করে। এসব মানুষের চলাচলের একমাত্র পথ এ রাস্তা। ১৯৯৮ সালে সড়কটির পূর্ব আমীদরপাড়া এলাকায় খালের ওপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় ১৯ মিটার দৈর্ঘ্য ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। তাদের অভিযোগ, সে সময় নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও দায়সারা কাজ করায় ব্রিজটি অল্প সময়ের মধ্যে নড়বড়ে হয়ে পড়ে। এরপর সংস্কার না করায় চলতি বছর বন্যায় পানির স্রোতে ব্রিজটি দেবে ও ভেঙে পড়ে।
এলাকাবাসী জানায়, বন্যার পানির স্রোতে ব্রিজের পূর্ব প্রান্তের নিচ থেকে মাটি সরে গভীর হওয়ায় দেবে ভেঙে পড়ে। এরপর এ পথে জনসাধারণের চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্থানীয়রা বাধ্য হয়ে ভাঙা ব্রিজটির ওপর একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করেন। ব্যাটারিচালিত অটোভ্যান চালক আবদুল হালিম বলেন, যাত্রী বা মাল বোঝাই ভ্যান নিয়ে কাঠের সাঁকো পার হওয়া যায় না। যাত্রী নেমে পারাপার হতে হয়। মাল বোঝাই ভ্যান পার হওয়ার সময় ভয় লাগে, কখন ভেঙে পড়ে।সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী প্রধান বলেন, আট থেকে নয় গ্রামের শত শত মানুষ ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলাচল করে। এলাকার ব্যবসায়ীরা মালামাল আনা-নেওয়া ছাড়াও কৃষকরা উৎপাদিত শস্য বাজারে বিক্রির জন্য গ্রামীণ যানবাহনে করে নিয়ে যায়। জন গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তায় ভেঙে পড়া ব্রিজের ওপর যে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে তা গ্রামীণ যানবাহন চলাচলের জন্য যথেষ্ট নয়। এসব যানবাহনের চাপে যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এখানে একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণ করার উদ্যোগ না নিলে আরও জনদুর্ভোগ বাড়বে।
হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ব্রিজ ভেঙে পড়ার বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা প্রকৌশলীকে অবগত করেছি। পাশাপাশি জনদুর্ভোগ লাঘবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রায় ৭০ হাজার টাকা ব্যয়ে ভাঙা ব্রিজের ওপর অস্থায়ী কাঠের সাঁকো তৈরি করে দিয়েছি। কেননা ব্রিজটি জুমারবাড়ী ইউনিয়নের এলাকার মধ্যে হলেও আমার ইউনিয়নের মানুষ এ রাস্তায় চলাচল করে। ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় আমার ইউনিয়নের অন্তত সাত গ্রামের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে।
সাঘাটা উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) নয়ন রায় বলেন, এই মুহূর্তে নতুন করে ব্রিজ তৈরি করার মতো বাজেট আমাদের নেই। তবে ব্রিজ নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দপ্তরে ইতোমধ্যে কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে।