শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

জাদুর লাঠি

অমিত কুমার কুণ্ডু

জাদুর লাঠি

একদিন একটা বালক রাস্তা থেকে একটা একশ টাকার নোট কুড়িয়ে বাড়ি নিয়ে এলো।

পরদিন একটা মানিব্যাগ কুড়িয়ে নিয়ে এলো। পরদিন একটা ফুটবল নিয়ে এলো। পরদিন এক জোড়া স্যান্ডেল নিয়ে এলো। পরদিন একটা লাঠি নিয়ে এলো। একশ টাকা মানিব্যাগে রেখে দিল। যেদিন রাখল তার পরের দিন দুশ হয়ে গেল। তারপরের দিন চারশ। তার পরের দিন আটশ। একি ম্যাজিক নাকি? বালক বিস্মিত হয়ে গেল।

ম্যানি ব্যাগ একটা থেকে দুটো, দুটো থেকে চারটা, চারটা থেকে আটটা হয়ে গেল। টাকা ও ম্যানিব্যাগের সংখ্যা প্রতিদিন দ্বিগুণ হতে লাগল। স্যান্ডেল পায়ে দেওয়ার পর যেখানে যেতে চাইল বিনা পরিশ্রমে চলে গেল। ফুটবল নিয়ে মাঠে গেলেই প্রতিপক্ষকে গোলের পর গোল দিতে লাগল। টাকা নিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো জিনিস কিনে খেতে লাগল। পছন্দমতো পোশাক কিনে পরতে লাগল। এভাবে মনের আনন্দে দিন চলতে লাগল তার।

একদিন বাড়িতে চোর এলো। বালকটি লাঠি দিয়ে চোরকে মারতে গেল। লাঠির বাড়ি চোরের পিঠে না পড়ে নিজরে পিঠে পড়ল। আবার মারতে গেল, আবার লাঠির বাড়ি নিজের কাছে ফিরে এলো। শুধু তাই নয়। লাঠি যেন থামতেই চাচ্ছে না। একের পর এক মেরেই চলেছে।

বালক চিৎকার করে বলল, এমন হচ্ছে কেন? লাঠি তুমি থামছ না কেন? আমাকে মারছ কেন?

লাঠি বালকের কথা শুনে বলল, তুমি যা পেয়েছ তা পরের। পরের জিনিস পড়ে পাওয়াও যা, চুরি করাও তাই। তুমি কুড়িয়ে না আনলে, অন্য কেউও যদি কুড়িয়ে না আনত, তবে যার জিনিস সে খুঁজলে অবশ্যই পেত। তোমার পড়ে পাওয়া সবকিছুই ক্রমশ বেড়েছে। তোমার উপকারে লেগেছে। তুমি খুশি হয়েছ। সেগুলো ছিল ভালো জাদুকরের সম্পদ। তাই তোমার ভালো হয়েছে।

তুমি লাঠিও কুড়িয়ে এনেছিলে। এই লাঠি ছিল এক দুষ্টু জাদুকরের। সে এই লাঠি দিয়ে অনেক নিরীহ প্রাণীকে মেরেছে। অনেক অন্যায় করেছে। এই লাঠিতে কারও ভালো হয়নি। তোমারও ভালো হবে না।

যখন অন্যায় পথে সুবিধা পেয়েছ, তখন কতই না খুশি হয়েছ। এখন তোমার পাপের শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে। এই লাঠির বাড়ি তুমি ততক্ষণ খাবে, যতক্ষণ তোমার শাস্তি পূর্ণ না হয়।

বালক আর কী করবে? লাঠির মার খেতে লাগল। আর ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কাঁদতে লাগল। যতক্ষণ না, যেখান থেকে জিনিস কুড়িয়ে এনেছিল, সেখানে জিনিস রেখে এলো। ততক্ষণ মার চলতেই থাকল।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর