বুধবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৩ ০০:০০ টা

এডিপির বাস্তবায়ন

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) প্রায় চার হাজার কোটি টাকা কমিয়ে আনার প্রয়াস চলছে বলে সহযোগী দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। দুটি কারণে এডিপিতে কাঁচি চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর একটি হলো- অর্থ সংকট, আরেকটি হলো- এডিপি সূচারুভাবে সম্পন্ন করা। স্মর্তব্য, চলতি অর্থবছরে এডিপি ধরা হয়েছিল ৫৫ হাজার কোটি টাকা। এর বাস্তবায়নে ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বৈদেশিক সহায়তার প্রত্যাশাও করা হয়েছিল। বাদ বাকি ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করার কথা। বাস্তবায়নের পর্যায়ে বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ হ্রাস পাওয়ায় এডিপিতে তার প্রতিক্রিয়া অনুভূত হচ্ছে। নির্বাচনের বছর হওয়ায় সরকার সূচারুভাবে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে এমনটিই প্রত্যাশিত। একইভাবে বাধ্য না হলে কোনো প্রকল্পই তারা কাটছাঁট করবে না এমনটিই স্বাভাবিক। পত্রিকান্তরে প্রকাশ, গত ২৩ থেকে ২৬ ডিসেম্বর এডিপি সংশোধনের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রাথমিকভাবে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি তিন হাজার কোটি টাকা হ্রাসের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে এডিপি ২৪ শতাংশ বাস্তবায়িত হওয়ায় বাকি সাত মাসে বাদ বাকি ৭৬ ভাগ যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় থাকায় এ ক্ষেত্রে কাটছাঁটের কথা ভাবা হচ্ছে। বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনার সঙ্গে দেশবাসীর সরাসরি স্বার্থ জড়িত। অর্থবছরের জন্য দেড় লাখ কোটি টাকার যে বাজেট তৈরি করা হয় তাতে জনগণের প্রাপ্তি হলো সর্বসাকুল্যে এই বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (এডিপি)। এর যথাযথ বাস্তবায়নের পর সাধারণ মানুষের কল্যাণ জড়িত। তাদের ভাগ্যোন্নয়নও সংশ্লিষ্ট। দুর্ভাগ্যজনক হলো, এডিপি বাস্তবায়নে অতীতের প্রতিটি সরকারই যথেচ্ছতার পরিচয় দিয়েছে। এডিপির এক বড় অংশ কাটছাঁট, সাংবার্ষিক নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান সরকার আমলে এডিপির আকার এবং বাস্তবায়নের গতি দুই-ই বৃদ্ধি পেলেও তাতে আত্দপ্রসাদের অবকাশ থাকা উচিত নয়। জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে বা তাদের উন্নয়নের কাজে বরাদ্দকৃত অর্থ যাতে সঠিকভাবে ব্যয় হয়, সেদিকে সংশ্লিষ্ট সবারই লক্ষ্য থাকা উচিত। আমাদের বিশ্বাস, এডিপি পুনর্বিন্যাসের ক্ষেত্রে জনচাহিদার দিকে সবিশেষ নজর রাখা হবে। বাস্তবতার খাতিরে কাটছাঁটের পর যে এডিপি থাকবে, তার বাস্তবায়ন যাতে শতভাগ সূচারুভাবে হয় সেদিকে নজর রাখা হবে।

সর্বশেষ খবর