বুধবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৩ ০০:০০ টা

সয়াবিনে অস্থিরতা

সয়াবিন তেলের বাজারে সৃষ্টি হয়েছে অস্থিরতা। বিশ্ববাজারে সয়াবিনের দাম কমলেও অযৌক্তিকভাবে বাংলাদেশে এই নিত্যপণ্যের দাম আরও বেড়েছে। গত সপ্তাহে এর বৃদ্ধির পরিমাণ ছিল প্রতি লিটারে ১৪ টাকা। সহযোগী দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে গত তিন মাস ধরে সয়াবিনের দাম পড়তির দিকে। গত দুই বছরের মধ্যে সয়াবিনের দাম এখন সবচেয়ে কম। ডলারের বিপরীতে টাকা শক্তিশালী হওয়ায় তাতেও টাকার হিসাবে এই নিত্যপণ্যের দাম কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু এসবের কোনো সুবিধাই পাচ্ছে না দেশের সাধারণ মানুষ। বাজারে এক লিটার সয়াবিন কিনতে ১২৮ টাকা গুনতে হচ্ছে। টিসিবির তালিকা অনুযায়ী এক সপ্তাহ আগে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১১০ থেকে ১১২ টাকা, মঙ্গলবার নাগাদ তা বেড়ে দাঁড়ায় ১২৬ থেকে ১২৮ টাকা। বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের দ্রব্যমূল্য মনিটরিং সেলের মূল্যায়ন অনুযায়ী প্রতি লিটার খোলা সয়াবিনের দাম ১১৫ টাকা হওয়া উচিত। বোতলের উৎপাদন খরচ সাত টাকা ১২ পয়সা ধরলে এক লিটার তেলের দাম হওয়া উচিত ১২৩ টাকা। কিন্তু বাজারে দাম রাখা হচ্ছে ১৩৪ টাকা। স্মর্তব্য, টাকার বিপরীতে ডলারের দাম কমায় সয়াবিনের দামে তার প্রভাব পড়ার কথা থাকলেও ঘটছে বৈপরীত্যের ঘটনা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী গত বছরের জানুয়ারিতে এক ডলার কিনতে আমদানিকারকদের ৮৪ টাকা ৪৫ পয়সা ব্যয় করতে হতো। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডলারপ্রতি ৪ টাকা ৪২ পয়সা ব্যয় হ্রাস পেয়েছে। সে হিসেবে এক টন সয়াবিন আমদানিতে আগের চেয়ে ৫ হাজার ৫৪৩ টাকা কম লাগছে। লিটারের হিসাবে কম লাগছে ৫ টাকা ৫৪ পয়সা। একদিকে ডলারের হিসাবে বিশ্ববাজারে সয়াবিনের দাম কমে যাওয়া এবং অন্যদিকে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম কমে গেলেও কোন অজুহাতে দেশে এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা বৃদ্ধি পেল সে বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। এ বাড়তি অর্থ কোন লুটেরাদের পকেটে যাচ্ছে, সে বিষয়টিও যথাযথ অনুসন্ধানের দাবি রাখে। জনস্বার্থে এটি সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর