বুধবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৩ ০০:০০ টা
ধর্ম

বিশ্ব ইজতেমা মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের প্রতীক

মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন

মহান আল্লাহর একমাত্র মনোনীত ধর্ম ইসলাম। ইসলাম ছাড়া কোনো ধর্ম আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। মুসলিম উম্মাহকে মহান আল্লাহ সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে_ 'তোমরা আল্লাহর রুজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ কর; পরস্পর বিচ্ছিন্ন হইও না' (সূরা আলে ইমরান)। এই আয়াত দ্বারা বুঝা যায়, মুসলমানরা একে অপর হতে বিচ্ছিন্ন হওয়া উচিত নয়। সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকা উচিত। দাওয়াতে তাবলিগের মেহনত দ্বারা পৃথিবীর মুসলমানদের আবার ঐকবদ্ধ করার প্রয়াস চলছে। তাবলিগ জামাতের সর্ববৃহৎ সম্মেলন বিশ্ব ইজতেমা এর জ্বলন্ত প্রমাণ। বিশ্ব ইজতেমায় পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশ থেকে মুসলমানরা আসেন। তারা মুসলিম উম্মাহর এই বৃহত্তম সম্মেলনে অংশ নেন। সব মাজহাবের এবং সব মত ও পথের মুসলমানরা এখানে আগমন করেন। খোলা আকাশের নিচে সবাই একসঙ্গে অবস্থান করেন। এখানে আমির-ফকির, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, যুবক-বৃদ্ধ, ধনী-দরিদ্র, সাদা-কালো কোনো ভেদাভেদ নেই। সব মুসলমানকে হুজুর (সা.)-এর উম্মত এবং কালিমাওয়ালা ভাই মনে করা হয়। কাউকে অবহেলা করা হয় না। বিশ্ব ইজতেমার একটা বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে কোনো মুসলমানকে ছোট করে দেখা হয় না। আল্লাহর কাছে প্রত্যেক মুসলমানের মূল্য আছে, এখানে এটা ভালোভাবে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। মুসলমানদের কোনো ভাগে বিভক্ত করা হয় না। কারও সমালোচনা করা হয় না। সবাইকে সমান চোখে দেখা হয়। এক মুসলমান যেন আরেক মুসলমানকে সম্মান করে সে জন্য জোর তাগিদ দেওয়া হয়। কোনো মাজহাবের মুসলমানকে খাটো করা হয় না। বরং সবাইকে ইমান ও আমলের মেহনতের প্রতি আহ্বান করা হয়। এর ফলে দেখা যায়, তাবলিগের কাজে বেরিয়ে যাওয়া একই জামাতে বিভিন্ন দেশের সাথীরা থাকেন। তারা একই প্লেটে খাবার খাচ্ছেন। কারও মধ্যে কোনো হিংসা থাকে না। ঘৃণা থাকে না। সাদা-কালোর মাঝে কোনো পার্থক্য থাকে না। সবার মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ থাকে। জামাতের মধ্যে হানাফি মাজহাবের অনুসারী যেমন থাকেন, তেমনি শাফেয়ি মাজহাবের অনুসারীও থাকেন। কেউ হাম্বলি মাজহাবের, আবার কেউ মালেকি মাজহাবের অনুসারী থাকেন। সবাই মিলেমিশে দাওয়াতের কাজ করেন। তাদের মধ্যে কোনো বিরোধ থাকে না। সবাই একে অপরকে আপন ভাইয়ের মতো মনে করে। বর্তমান পৃথিবীতে এটি এক আশ্চর্যজনক বিষয়। মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ করার এর চেয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেই। এই চমৎকার একতা ও পারস্পরিক ভালোবাসা সৃষ্টি হয় তাবলিগের মেহনতের মাধ্যমে। পৃথিবীর সব জায়গায় যেন তাবলিগের কাজ গুরুত্বের সঙ্গে চালু হয় সে জন্য সবার চেষ্টা করা উচিত। মহান আল্লাহ আমাদের সেই তৌফিক দান করুন। আমিন। লেখক : খতিব, বাইতুর রহমত জামে মসজিদ, গাজীপুরা, টঙ্গী।

সর্বশেষ খবর