শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৩ ০০:০০ টা

সরকারি পে-কমিশন

সরকারি কর্মচারীদের বহুল প্রতীক্ষিত স্থায়ী পে-কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বুধবার বঙ্গবাজারের কাছে ১৫০ আসনের সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের পে-কমিশন পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। তাদের বেতন কখন বাড়বে সে জন্য তারা দীর্ঘ সময় প্রতীক্ষা করেন। যে কারণে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিয়মিতভাবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়ানোর জন্য একটি স্থায়ী পে-কমিশন গঠন করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। সরকারি কর্মচারীদের স্থায়ী পে-কমিশন গঠন অবশ্যই একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারি কর্মচারীদের বেতন পুনঃনির্ধারণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সরকার কখন পে-কমিশন গঠন করবে সে আশায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাতক পাখির মতো অপেক্ষা করতে হবে না। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সর্বশেষ বেতন কাঠামো ঘোষণা করা হয়েছিল ২০০৯ সালের ১১ নভেম্বর। ওই সময় তাদের বেতন সর্বোচ্চ ৭৪ শতাংশ ও সর্বনিম্ন ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ২০১৩-১৪ সালের বাজেট ঘোষণার সময় অর্থমন্ত্রী পে-কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। স্মতর্ব্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ১৩ লাখ। এর মধ্যে চাকরিতে সক্রিয় ১১ লাখ। বর্তমান সরকারের আমলে সরকারি চাকরিজীবীদের কল্যাণে বেশকিছু তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থায়ী বেতন কমিশন গঠন এ তালিকাকে আরও সমৃদ্ধ করবে। এর আগে তাদের অবসরে যাওয়ার সময়সীমা ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অবসরের সময়সীমা করা হয়েছে ৬০ বছর। সরকারি কর্মচারীদের সুযোগ- সুবিধা শনৈঃশনৈঃ বাড়ানো হলেও তাদের সেবার মান নিয়ে সংশয় রয়েছে। সরকারি অফিসগুলোতে সেবা পেতে গেলে সিংহভাগ ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষকে হয় উৎকোচ দিতে হয় নতুবা হয়রানির শিকার হতে হয়। বহু অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব অফিসে আসা-যাওয়া আর বেতন নেওয়ার মধ্যেই সীমিত। স্থায়ী বেতন কমিশন গঠনের পাশাপাশি জনগণের ট্যাঙ্রে টাকার সদ্ব্যবহারে এসব বিচ্যুতির অবসান ঘটবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই। সরকারি অফিসগুলোতে যে সীমাহীন দুর্নীতি বাসা বেঁধেছে তার অবসান না হলে স্থায়ী পে-কমিশন গঠন জনস্বার্থের সহায়ক হবে কি-না সে প্রশ্ন থেকেই যাবে।

সর্বশেষ খবর