রবিবার, ২২ জুন, ২০১৪ ০০:০০ টা

রাজনৈতিক সংলাপ

গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংলাপ একটি চলমান বিষয়। দেশের যে কোনো সমস্যা নিয়ে সরকার সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী এমনকি প্রয়োজনে সংসদবহির্ভূত দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করবে এমনটিই গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে কাঙ্ক্ষিত। বাংলাদেশে নব্বই দশক থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে সংসদীয় গণতন্ত্র চালু থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সুস্থতার অভাব থাকায় সংলাপের বিষয়টি উপেক্ষিত হয়েছে। ফলশ্রুতিতে সরকার কিংবা বিরোধী দল দুই পক্ষের মধ্যেই আপসহীনতা নামের গণতন্ত্র বিবর্জিত চিন্তাভাবনার থাবা বিস্তার ঘটেছে বেপরোয়াভাবে। যে কারণে দশম সংসদ নির্বাচন কীভাবে হবে সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিরোধী দলকে সংলাপের জন্য আহ্বান করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। বিরোধী দলের এই আপসহীন মনোভাবকে সরকারি দল নিজেদের জন্য সুযোগ হিসেবে বেছে নেয়। বিরোধী দলের বর্জনের কারণে একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতায় আসার সুযোগ পায় তারা। ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচনে বেশির ভাগ আসনে একাধিক প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার বিশ্বরেকর্ড স্থাপিত হয়। যে সব আসনে ভোট গ্রহণ হয় তার কোনো কোনোটিতে ভোটার উপস্থিতির হার ছিল প্রকৃত অর্থে ৫ শতাংশের কম। দশম সংসদ নির্বাচনের আগে সংলাপে অনীহা দেখালেও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট এ মুহূর্তে সংলাপের ব্যাপারে অতি উৎসাহী। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সমাজও চায় স্থিতিশীলতার স্বার্থে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের সূচনা হোক। জাতিসংঘ সফরকাল অনুষ্ঠিত বৈঠকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে এ বিষয়ে তাগিদ দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। রাষ্ট্রপতি এ প্রসঙ্গে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়ে বলেছেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষে পরবর্তী নির্বাচন প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ হতে পারে। আমরা মনে করি, রাষ্ট্রপতির বক্তব্যে সঙ্গতভাবেই সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ ঘটেছে। স্বীকার করতেই হবে দশম সংসদ নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল নির্বাচনের পর বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপে বসা হবে। দেশ পরিচালনায় যেহেতু সংলাপের বিকল্প নেই, সেহেতু নির্বাচনপূর্ব প্রতিশ্রুতি পূরণে সরকার সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের উদ্যোগ নেবে এমনটিই কাঙ্ক্ষিত।

 

 

 

সর্বশেষ খবর