রবিবার, ২২ জুন, ২০১৪ ০০:০০ টা
ধর্ম

হিংসা এবং বিদ্বেষ মানবতার হত্যাকারী

মুফতি আব্দুর রশিদ তত্ত্ববাদী

হিংসুক ব্যক্তি অন্যকে ক্ষতি করার আগে সে নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কেননা শুরুতেই সে হিংসার আগুনে জ্বলতে থাকে। হিংসা দূর না হওয়া পর্যন্ত এটাই তার জন্য স্থায়ী দুনিয়াবী শাস্তি। তার চেহারা সর্বদা মলিন থাকে। তার সঙ্গে তার পরিবারে হাসি ও আনন্দ থাকে না। অন্যের ক্ষতি করার চক্রান্তে ও ষড়যন্ত্রে সে সর্বদা ব্যস্ত থাকে। প্রতিপক্ষের হামলার ভয়ে সে সর্বদা ত্রস্ত ও ভীত থাকে। নিশুতি রাতে বাঁশঝাড়ে কঞ্চির শব্দে জিনের ভয়ে হার্টফেল করার মতো হিংসুক ব্যক্তি সর্বদা কল্পিত শত্রুর ভয়ে শঙ্কিত থাকে। তার অন্তর সদা সঙ্কুচিত থাকে। তারই মতো শঠেরা তার বন্ধু হয়। ফলে সৎ সংসর্গ থেকে সে বঞ্চিত হয়। ঘুণ পোকা যেমন কাঁচা বাঁশকে ভেতর থেকে কুরে কুরে খায়, হিংসুক ব্যক্তির অন্তর তেমনি হিংসার আগুন কুরে কুরে খায়। এক সময় সে ধ্বংস হয়ে যায়, যেমন ঘুণেধরা বাঁশ হঠাৎ ভেঙে পড়ে যায়। এভাবে দুনিয়ায় সে এসি ঘরে শুয়ে থেকে হিংসার আগুনে জ্বলে-পুড়ে মরে। আর মৃত্যুর পর তাকে গ্রাস করে জাহান্নামের ভয়াবহ আগুন। দুনিয়ায় সে যেমন ছিল সর্বদা মলিন চেহারার অসুখী মানুষ, আখেরাতেও সে উঠবে তেমনি মলিন চেহারায় অধোমুখী হয়ে।

'আপনি যা দেখছেন, তা তো দেখেছেন। তবে আমি আমার অন্তরে কোনো মুসলিমের প্রতি কোনোরূপ বিদ্বেষ রাখি না এবং আমি কারও প্রতি আল্লাহপ্রদত্ত কোনো কল্যাণের ওপর হিংসা পোষণ করি না।' এ কথা শুনে আবদুল্লাহ বিন আমর বললেন, 'এটিই আপনাকে উক্ত স্তরে পৌঁছেছে। এটি এমন এক বস্তু যা আমরা করতে সক্ষম নই। (সূত্র : হাকেম ৩/৭৯, আহমাদ হা/১২৭২০, আরনাউত্ব ছহিহ বলেছেন, আলবানী প্রথমে ছহিহ পরে যঈক বলেছেন (তারাজু'আতুল আলবানী হা/৪৮), হাকেম ছহিহ বলেছেন এবং যাহাবি তাকে সমর্থন করেছেন)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত- রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, 'কোনো বান্দার অন্তরে ইমান ও হিংসা একত্রিত হতে পারে না।' (সূত্র : নাসাঈ হা/৩১০৯, সনদ হাসান) অর্থাৎ একটি অন্তরে হয় ইমান থাকবে, নয় হিংসা থাকবে। ইমানদারের অন্তরে হিংসা থাকবে না, হিংসুকের অন্তরে ইমান থাকবে না। মুমিন কখনো হিংসুক নয়, হিংসুক কখনো মুমিন নয়। অর্থাৎ পূর্ণ মুমিন নয়।

লেখক : খতিব, সারুলিয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, ঢাকা।

 

 

 

সর্বশেষ খবর