রবিবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

প্রাথমিক শিক্ষায় সাফল্য

দেশের প্রায় ৯৬ শতাংশ শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষিত করার সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। নিরক্ষরতা দূরীকরণেও অর্জিত হয়েছে তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য। বাংলাদেশে বয়স্ক শিক্ষার হার উন্নীত হয়েছে ৫৯ শতাংশে। জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠন ইউনেস্কোর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ইউনেস্কোর এডুকেশন ফর অল গ্লোবাল মনিটরিং কর্মসূচির আওতায় প্রণীত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নিম্ন আয় সত্ত্বেও অল্প যে কয়েকটি দেশ জাতীয় বাজেটে শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছে, বাংলাদেশ সেসব দেশের একটি। সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার প্রতিও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ১৯৯৯ সালে যেখানে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার হার ছিল ১৮ শতাংশ, ২০১২ সালে তা ২৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গ্রাম-শহর উভয় অঞ্চলেই বেড়েছে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার হার। মানের দিক থেকেও এগিয়েছে এ পর্যায়ের শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষার ব্যাপারে ইউনেস্কোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০০ সালে বাংলাদেশে স্কুলে যেত না এমন শিশু ছিল ২০ শতাংশ। ২০১০ সাল নাগাদ এর সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে। উপবৃত্তির কারণে স্কুলগামী মেয়েশিশুর হার বেড়েছে উল্লেখ করার মতো। স্কুলে খাবার কর্মসূচিও এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। এসব কর্মসূচির ফলে ঝরে পড়া শিশুর হার কমেছে। সেই সঙ্গে এটাও বলা হয়, উপবৃত্তি কার্যক্রম মেয়েদের ঝরে পড়া রোধে সহায়ক হয়েছে। প্রতিবেদনের মতে, ছেলেদের জন্য এ কার্যক্রম না থাকায় দরিদ্র পরিবারের ছেলেরা তুলনামূলক পিছিয়ে পড়ছে। বাংলাদেশ সরকারের ২০১৩ সালের শিক্ষাবিষয়ক এক জরিপের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের ৫০ শতাংশ ও পুরুষের ৫৭ শতাংশ শিক্ষিত। জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন নারী ৩৬ শতাংশ এবং পুরুষ ৪৪ শতাংশ। তারা দক্ষতার সঙ্গে লিখতে, পড়তে ও গাণিতিক হিসাব সম্পন্ন করতে পারে এবং ভবিষ্যতে এ দক্ষতার উন্নয়ন ঘটাতে তারা সক্ষম। ইউনেস্কোর প্রতিবেদনকে প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রতিকৃতি বলে অভিহিত করা গেলেও এতে আত্দপ্রসাদের কোনো সুযোগ থাকা উচিত নয়। দেশের ৪ শতাংশ শিশু এখনো স্কুলে যাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। তাদের স্কুলে যাওয়া নিশ্চিত করার পাশাপাশি শিক্ষার মান বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও এগিয়ে যেতে হবে।

সর্বশেষ খবর