রবিবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

সন্ত্রাসকবলিত লক্ষ্মীপুর

লক্ষ্মীপুরকে রক্তাক্ত জনপদ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে বাংলাদেশ প্রতিদিনের এক প্রতিবেদনে। চলতি বছরের তিন মাস ১০ দিনে এ জেলায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন অন্তত ২৭ জন। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাতজন এবং বিএনপির সাতজন নেতা-কর্মীও রয়েছেন। গুপ্তহত্যার পাশাপাশি সন্ত্রাস উপদ্রব এ জনপদে সন্ত্রাসী বাহিনীর সঙ্গে পুলিশের বন্দুকযুদ্ধ ও বিভিন্ন বাহিনীর হামলায় গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক মানুষ। বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে জানুয়ারিতে ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে ছয়জন, মার্চে ১১ জন এবং এপ্রিলের ১০ তারিখ পর্যন্ত চারজন। রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের ছত্রছায়ায় জেলার বিভিন্ন স্থানে ২০ থেকে ২৫টি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে উঠেছে। সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধে তারা জড়িত। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ এবং নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে সন্ত্রাসী বাহিনীগুলোর প্রধানরা একের পর এক মারা গেলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। বাহিনীর অন্য সদস্যরা চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দিতে সামনে এগিয়েছে। লক্ষ্মীপুরকে সন্ত্রাসী জনপদে পরিণত করার ক্ষেত্রে দেশের শীর্ষ দুই রাজনৈতিক দলের অবদান প্রায় সমানে সমান। চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা দলের সাইনবোর্ড ব্যবহার করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নতজানু ভূমিকার জন্য সন্ত্রাসীদের দাপট কিছুতেই কমছে না। লক্ষ্মীপুরের আইনশৃঙ্খলার অবনতিশীল অবস্থা জেলার সাধারণ মানুষের জীবনে বিড়ম্বনা ডেকে আনছে। সন্ত্রাসী নামের মানুষ শকুনদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। অবস্থা এতটাই নাজুক হয়ে উঠেছে যে, সরকারি দল বিরোধী দল কোনো পক্ষেরই কেউ নিজেকে নিরাপদ ভাবতে পারছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রাজনৈতিক দলের বি-টিমের ভূমিকা পালন করায় জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে যথাযোগ্য ভূমিকা পালন করা সম্ভব হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে এই মৎস্যন্যায় অবস্থার অবসান হওয়া দরকার। এ ব্যাপারে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সুনজর কাম্য।

সর্বশেষ খবর