রবিবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা
ইতিহাস

সফল ব্যক্তিত্ব

সামান্য ক্রীতদাসরূপে জীবন আরম্ভ করে নানা বিপর্যয় ও ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে কুতুবউদ্দীন স্বীয় প্রতিভাবলে সৌভাগ্যের স্বর্ণশিখরে আরোহণ করেছিলেন। দিলি্লর প্রথম স্বাধীন সুলতান হিসেবে সিংহাসনে আরোহণ করে তিনি স্বীয় যোগ্যতা ও দক্ষতা দ্বারা সমগ্র উত্তর ভারতে মুসলিম শাসনের ভিত্তিকে দৃঢ় করে গেছেন। এ কথা সত্য যে, তার সুলতানি আমলে নতুন কোনো রাজ্য বিজিত হয়নি এবং গজনীর বিরুদ্ধে অভিযানেও তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন। এতদসত্ত্বেও তার সামরিক কৃতিত্বকে অবহেলা করা যায় না। মুহম্মদ ঘুরীর আমলে রাজ্য জয়ের ক্ষেত্রে তিনি অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন। সেনানায়করূপে তার খ্যাতি অবিস্মরণীয়। তার সম্বন্ধে 'তারিখ-ই-মুবারক শাহী'র রচয়িতা বলেন, 'তিনি এমন তেজস্বিতা ও উৎসাহের অধিকারী ছিলেন যে, রুস্তম যদি বেঁচে থাকতেন, তাহলে তিনিও তার একজন হাযিবের পদ লাভ করে গৌরববোধ করতেন।' ড. আবু মুহম্মদ হাবীবউল্লাহ তার সম্বন্ধে মন্তব্য করেন, 'এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে, মুইযউদ্দীনের ভারত অভিযানের অধিকাংশ সাফল্যই তার নিরলস চেষ্টা ও একনিষ্ঠ খেদমতের কাছে ঋণী, কেননা মুইযউদ্দীন কেবল অভিযান-শক্তির জোগান দিয়েছেন, আর তিনি দিলি্ল রাজ্যের বিস্তারিত পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নের সূচনা করেছেন।' সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর কুতুবউদ্দীন সাম্রাজ্যের সংহতি বিধান ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার দিকে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিলেন। তার শাসনকাল সংক্ষিপ্ত হলেও তিনি স্বীয় যোগ্যতা দ্বারা গজনী ও বহিঃশত্রুদের আক্রমণের হাত থেকে সাম্রাজ্যকে নিরাপদ রেখে এর ভিত্তিকে মজবুত করে গিয়েছিলেন। তিনি বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের দ্বারা সাম্রাজ্যের বুনিয়াদ শক্তিশালী করেছিলেন। এটি তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতার পরিচয় বহন করে।

সর্বশেষ খবর