শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

খুনোখুনির জনপদ মর্দানা

দুরাচার দমনে প্রয়োজন কঠোর পদক্ষেপ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মর্দানা গ্রাম। চলাচলে ভালো রাস্তা নেই। তবে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এখানে দুই গ্রুপের মধ্যে চলছে নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। গ্রামটিতে রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া আর ককটেল ফাটানোর মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া বিরোধ এখন রূপ নিয়েছে গুম-খুনে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে আতঙ্কে সাধারণ মানুষ। পুলিশ ক্যাম্প বসিয়েও কোনো ফল পাচ্ছে না। আর এ জন্য সাধারণ মানুষ অনেকেই এলাকা ছাড়ছেন। গ্রামবাসীর বক্তব্য, আধিপত্য বিস্তারে সাবেক কাউন্সিলর পাসবান ও বর্তমান কাউন্সিলর সালামের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলছে অস্ত্রের মহড়া, বোমাবাজিসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন মর্দানা গ্রামের শফিকুল ইসলাম পাসবান। তাকে গত নির্বাচনে পরাজিত করে বিজয়ী হন আবদুস সালাম। ঘটনার সূত্রপাত মূলত তখন থেকেই। আবদুস সালাম ওই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর পাসবানের সমর্থকদের দমিয়ে রাখতে নানা তৎপরতা চালান। পাসবানও সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন। ফলে দুই পক্ষে সংঘর্ষ লেগেই আছে। সালাম কাউন্সিলর হওয়ার পর গ্রামের শালিস থেকে শুরু করে হাট-ঘাট, বাজার, জলকর সব কিছুই নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে থাকেন। আর এসব নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনি গড়ে তুলেছেন সন্ত্রাসী বাহিনী। এরপর শুরু করে ভূমি দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ। এ বছরের শুরুর দিকে তিনি সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে শিবগঞ্জের দেবোত্তর মন্দিরের ৬৮ বিঘা কৃষি জমি, আমবাগান, ইটভাটা ও পুকুর জবরদখল করে নেন। এ রকম দখল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিনিয়তই সংঘর্ষ হচ্ছে দুই বাহিনীতে। হামলার শিকার হচ্ছে শিশু-নারীসহ সাধারণ মানুষ। গত তিন মাসে দুই পক্ষের হামলায় আহত হয়েছে অন্তত অর্ধশত মানুষ। শতাধিক বাড়িঘরে দেওয়া হয়েছে আগুন। মর্দানা গ্রামে জনমনের আতঙ্ক দূর করার জন্য সেসব দুর্বৃত্তকে দমন করা প্রয়োজন যারা সন্ত্রাস-অশান্তি টিকিয়ে রেখেছে। কর্তৃপক্ষের কাছে আশা, তারা ওই গ্রামে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।

সর্বশেষ খবর