সোমবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

গণতন্ত্র ও জীবনের দাম কেবলই কমে আসছে

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ

গণতন্ত্র ও জীবনের দাম কেবলই কমে আসছে

দেশের রাজনৈতিক অবস্থা আপাতদৃষ্টিতে এখন একেবারেই শান্ত। কোনো উত্তাপ-উত্তেজনা নেই। বিরোধী রাজনৈতিক জোটের কোনো কর্মসূচি না থাকায় আন্দোলন-সংগ্রামও নেই। হরতাল-অবরোধও নেই। সঙ্গত কারণেই রাজপথে নেই কোনো মিছিল-মিটিং বা প্রতিবাদের ঘটনাও। দুই-একটি প্রেস ব্রিফিং, বিবৃতি প্রদান আর ঘরোয়া আলোচনা ছাড়া কার্যত বিরোধী জোট রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অস্তিত্বহীন।  সত্যিই এমন এক দৈন্য রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেশের মানুষ অনেক দিন দেখেনি। এখন অবশ্য দেখছে। ক্ষমতাসীন দল তাদের রাজনৈতিক কর্মকৌশলতার মধ্যদিয়ে রাজনীতিটাকে এমনই ভোঁতা বা অকার্যকর করে ফেলেছে। রাজনীতি তাই এখন একক কক্ষপথে চলমান। অর্থাৎ ক্ষমতাসীন দল যেভাবে চাচ্ছে সেভাবেই চলছে রাজনীতি আর রাষ্ট্রের চাকা। ফলে সুশাসন, জবাবদিহিতা, দায়বদ্ধতার জায়গা কেবলই শূন্য হয়ে আসছে রাজপথে বিরোধী জোটের কোনো স্বতঃস্ফূর্ত অবস্থান না থাকার কারণে। রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রাম না থাকলেও রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে সংঘটিত নানা ঘটন-অঘটনের মাধ্যমে একটা থমথমে ও অস্থির ভাব যে লক্ষণীয় তা বোধ করি অসত্য নয়। বিষয়টি নিয়ে কমবেশি সবাই উদ্বিগ্নও বটে। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ওপর থেকে শান্ত দেখালেও ভিতরে যে তুষের আগুনের মতো জ্বলছে তা হয়তো কেউ অস্বীকার করবে না। এর কিছু অন্তর্গত ও অমীমাংসিত কারণ রয়েছে। রাজনীতির গতিপথ কোনদিকে যাচ্ছে সেটাও এ সময়ে ভারি স্পষ্ট। একটি বিষয় আরও স্পষ্ট যে, বিরোধী জোটের রাজনৈতিক কর্মসূচি না থাকলেও সরকার তার দমন-পীড়ন বা প্রতিপক্ষের প্রতি নিপীড়নমূলক আচরণ থেকে সামান্যতম সরে আসেনি। বরং নতুন নতুন কৌশলে দমন-পীড়ন করা হচ্ছে। কখনো কখনো মনগড়া বক্তব্য দিয়েও বিরোধী দলকে মনস্তাত্তি¡কভাবে চাপের মুখে রাখা হচ্ছে। আবার সামান্য অজুহাতেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। এদিকে বিএনপি তথা বিরোধী জোটের নেতা-কর্মীদের বড় অংশই অবশ্য এখন কারাগারে। দুই-চারজন যারা বাইরে আছেন রাজপথ তো দূরে থাক, কথা বলার সাহসও তাদের নেই। মামলা-হামলা মোকাবিলা আর আদালতের বারান্দায় ঘুরতে ঘুরতে বেশির ভাগ নেতা-কর্মীই এখন ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত। অনেকেই তাই রাজনীতি থেকে অলিখিত ছুটি নিয়েছেন বললেও ভুল হবে না।  পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদগুলোর মতে, বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রতিপক্ষ বিএনপিকে মার্জিনালাইজড বা ক্রমশ আরও দুর্বল করে তুলছে। ‘বিভক্ত করো এবং শাসন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখো’Ñ এ নীতির একটি প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। এরকম ছক কষেই সরকার নানা পন্থা অবলম্বন করে এগোচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। এর মধ্যে অন্যতম পন্থা হলো বিএনপি নেতা-কর্মীদের নামে যত খুশি তত মামলায় অভিযুক্ত করা। বিএনপিকে অবদমিত করতে মামলাই এখন মুখ্য। মামলা দিলে নেতা-কর্মীরা মামলা সামলাতেই ব্যস্ত থাকবেন, আন্দোলনের কথা ভুলে যাবেন। এটাই হলো মূল কৌশল। মামলা থেকে তাই রেহাই দেওয়া হচ্ছে না বিএনপির ওপর থেকে নিচ সারির কোনো নেতা-কর্মী বা সমর্থককেই। বিএনপির চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামও এখন নানা মামলায় জর্জরিত। একের পর এক মামলায় তাদের জড়ানো হচ্ছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতর সূত্রে একটি শীর্ষ গণমাধ্যম জানিয়েছে, শুধু এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত ২১ হাজার ৬৮০টি মামলা হয়েছে দলের কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এতে আসামির সংখ্যা ৪ লাখ ৩ হাজার ৮৭৮ জন। এর মধ্যে বেগম খালেদা জিয়াসহ কেন্দ্রীয় ১৫৮ জন নেতার বিরুদ্ধে আছে ৪ হাজার ৩৩১টি মামলা। আর দলের স্থায়ী কমিটির ১২ জন সদস্যের বিরুদ্ধেই আছে ২৮৮টি মামলা। মামলা থেকে আসলে কেউই রেহাই পাননি। বিএনপির চেয়ারপারসন, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব, যুবদল, ছাত্রদল এবং বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী সবাই-ই কোনো না কোনো মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন। মামলার ধারাবাহিকতা এখনো চলছে। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও বিএনপির নেতা-কর্মীদের ৫৪ অথবা অন্যান্য ধারায় গ্রেফতার করা হচ্ছে। সর্বশেষ মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার উপজেলা চেয়ারম্যান বদরুল আলম হীরোকে বিনা কারণেই গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। এই গ্রেফতার কার্যক্রম চলমান রয়েছে সর্বত্র। কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক মামলা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার বাণিজ্যও এখন ওপেনসিক্রেট। গ্রেফতার বাণিজ্যের কারণে বহু নিরীহ মানুষকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়েছে। গ্রেফতার বাণিজ্য এখন আরও দৃঢ়ভাবে চলমান। এটা এখন মহামারী আকার ধারণ করেছে। এদিকে অনেক জায়গায়ই বিশেষ করে গ্রামে আবার বিএনপির অনুসারীদের আওয়ামী লীগের কথিত নেতা-কর্মীদের খুশি করে এলাকায় থাকতে হচ্ছে। এরকম হাজার হাজার ঘটনার নজির রয়েছে। আসলে গণতন্ত্রের নামে এ ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড কখনো সুস্থ রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ হতে পারে না। এটি রাজনৈতিক অসহিষ্ণু আচরণ এবং প্রতিহিংসার প্রতিফলনই তৈরি করবে। মামলা আতঙ্ক বিএনপি নেতা-কর্মীদের এখন এতটাই তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে যে, কেউ-ই এখন নিজ বাসা-বাড়িতে পর্যন্ত ঘুমাতে পর্যন্ত পারছেন না। অনেকেরই ছেলেমেয়ের লেখাপড়া দারুণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনেকেরই সংসার এলোমেলো হয়ে গেছে। এ সময় একটা বিষয় লক্ষ্য করছি, দেশে কোনো কিছু হলেই ঢালাওভাবে প্রতিপক্ষকেই কেবল দোষারোপ এবং টার্গেট করে গ্রেফতার করা হচ্ছে। কিন্তু কোনোভাবেই মূল ঘটনা উম্নোচন করা হচ্ছে না। সম্প্রতি দেশে সংঘটিত পরপর দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডের বেলায়ও সেরকম দেখতে পাচ্ছি। দুই বিদেশি খুনের ঘটনা নানা প্রশ্নের জম্নদিয়েছে। প্রথমত এ ধরনের খুনের ঘটনা যারাই ঘটিয়ে থাকুক তারা চরম ঘৃণ্য ও নিন্দনীয় কাজ করেছে। ২৮ সেপ্টেম্বর গুলশানের ক‚টনৈতিক পাড়ায় কঠোর নিরাপত্তা জোনের মধ্যে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন ইতালিয়ান এনজিও কর্মকর্তা তাভেলা সিজার। এরপর রংপুরে নিহত হন জাপানি এক নিরীহ নাগরিক হোশি কোনিও। ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এ ঘটনার পর স্ব স্ব দেশ তাদের দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশে সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরার নির্দেশও জারি করেছে। এই দুই খুনের ঘটনার পর ক‚টনৈতিক পাড়ায় যেমন পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে তেমনি বিদেশিদের চলাফেরার ওপরও সতর্কবার্তা রয়েছে। আমার মনে হয় বাংলাদেশের সব মানুষই চায় এই দুটি খুনের ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তারা গ্রেফতার হোক এবং মূল ঘটনা উদ্ঘাটিত হোক। কিন্তু এখানেও দেখা যাচ্ছে শাসক দলের শীর্ষ নেতারা বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের অভিযুক্ত করেই বক্তব্য প্রদান করছেন। বিদেশি খুনের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জড়িয়ে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে তা প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। আমাদের দেশের মাটিতে কোনো বিদেশির খুনের ঘটনা আমাদের সম্মান-মর্যাদাকে বিশ্বদরবারে দারুণভাবে ব্যাহত করেছে। এ ঘটনায় আমাদের সুনাম নষ্ট হয়েছে। আমাদের সবাইকে এ বিষয়ে আরও সতর্ক ও সহনশীল হতে হবে। বাংলাদেশের মাটিতে দুর্বৃত্তের হাতে কোনো বিদেশি খুনের ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এখন সবাই উদ্বিগ্ন। সমাজের প্রতিটি স্তরে আজ বিশৃঙ্খলা ও অস্থিতিশীলতা বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশ আজ সন্ত্রাস ও গণতন্ত্রের মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছে। গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে সন্ত্রাসকে অবশ্যই রুখতে হবে। আবার সন্ত্রাসকে রুখতে হলে গণতন্ত্রের সঠিক চর্চায় ফিরে যেতে হবে। যা বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় জনগণের ঐকান্তিক প্রত্যাশা। কোনোভাবেই জবরদস্তিমূলক আচরণ কাম্য হতে পারে না। যে কথা আগেই বলেছি বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃও্বাধীন জোট সরকার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপিকে মার্জিনালাইজড করতে চায়। সরকার এমনই একটা ছক কষে এগোচ্ছে এ কথা বলছেন দেশের বিষয় বিশেষজ্ঞ এবং উদ্বিগ্ন সমাজ। আর এ কারণেই সরকারের মধ্যে সমঝোতামূলক রাজনৈতিক আচরণ ও স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরিতে কোনো কিছুই করতে দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু এটি তো সত্য, দেশের দ্বিদলীয় বৃত্তের বাইরে যে সাধারণ জনগণ বা নাগরিক সমাজ রয়েছে তারা সত্যিকার অর্থেই সারা দেশে একটি শান্তিময় রাজনৈতিক অবস্থান দেখতে আগ্রহী। সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে জোরজবরদস্তি করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় হয়তো টিকে থাকা যায় কিন্তু গণতন্ত্র, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয় না।

গণতন্ত্র, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে সরকারের উচিত যত দ্রুত সম্ভব আরেকটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের রায়কে সম্মান জানানো। আমরাই বলি ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। কিন্তু বর্তমান সময়ে জনগণের অধিকার কতটা প্রতিপালিত হচ্ছে? জনগণ কতটা স্বাধীন মনোভাব ব্যক্ত করতে পারছে? কী চিত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি সর্বত্র। ভঙ্গুর গণতন্ত্র আর আইনের শাসনের অভাবই যেন এখন জনগণের কপালের লিখন। সুশাসনের বালাই নেই কোথাও। ভোটের অধিকার রক্ষিত হচ্ছে না। জাতীয় নির্বাচন তো দূরে থাক ছোটখাটো স্থানীয় নির্বাচনেও আমরা দেখতে পাচ্ছি জনগণ তাদের পবিত্র ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছে না। অথচ বেগম খালেদা জিয়ার প্রথম আমলে এক মাগুরা উপনির্বাচনকে ইস্যু করে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ সরকারকে বাধ্য করেছিল তও্বাবধায়ক সরকার বিল পাস করাতে। আজ মাগুরা উপনির্বাচনের মতো দৃষ্টান্ত শত শত। ভোট হলেই সেখানে কারচুপি, নইলে জোরজবরদস্তি করে দখল। কিন্তু এ নিয়ে কোথাও কোনো শোরগোল নেই। এসবই গণতন্ত্রের জন্য এক ভয়াবহ অশনি সংকেত। এ থেকে উত্তরণের পথ আর ভবিষ্যতে থাকবে কিনা সেটা নিয়েও আজ সবার মনে সংশয় তৈরি হয়েছে। সরকার হয়তো ভাবতে পারে ক্ষমতায় থাকলে মানুষ হয়তো ভুলে যাবে তাদের আমলে সংঘটিত সব অপকর্ম ও অনিয়মের কথা। সময়ক্ষেপণের ফলে হয়তো মা ভুলে যাবেন নিখোঁজ সন্তানের কথা, বাবা ভুলে যাবেন পুলিশের গুলিতে নিহত সন্তানের কথা, বিধবা নারী ভুলে যাবেন তার স্বামী হারানোর কথা। সাধারণ জনগণ ভুলে যাবে হলমার্ক, ডেসটিনি, বেসিক ব্যাংক, শেয়ার কেলেঙ্কারির কথা। আসলে ইতিহাস কী কখনো এভাবে রচিত হয়েছে? ইতিহাস কী পুরোটাই পাল্টে ফেলা যায়? মনে আছে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সাবেক প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমেদ গুম হলে তার স্ত্রী একদিন প্রেসক্লাবে আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘একটি জলজ্যান্ত মানুষ গুম হলো অথচ কেউ কিছুই বলছে না’। এখন অনেক কিছুই ঘটছে কিন্তু আসলে কেউ কিছুই বলছে না। হয়তো কিছু বলার দায়িত্বও মানুষ হারিয়ে ফেলেছে। আর তাই তো আমরা দেখছি শিশু শাহাদতের হাঁটু থেকে বয়ে পড়া রক্তের কোনো দাম নেই। রাজনের আহাজারি আর রক্তের দাম নেই। দাম নেই পুরান ঢাকার সেই টগবগে তরুণ বিশ্বজিতের রক্তের। ইলিয়াস আলীর মতো নেতাদের জীবনেরও কোনো দাম নেই। এখনো গুম হয়ে যাওয়া সন্তানদের খোঁজে যে পিতা-মাতা কেবলই চোখের জল ফেলছেন সে জলেরও কোনো দাম নেই। আসলেই গণতন্ত্র, রক্ত আর জীবনের দাম কেবলই কমে আসছে।

সবশেষে বলব, বাংলাদেশকে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনাটাই এখন সবচেয়ে জরুরি বিষয়। সেখানে জয়-পরাজয় বড় কথা নয়, বড় কথা হলো গণতন্ত্র সমুন্নত ও মর্যাদাশীল রাখা। তাহলেই কেবল সংকট উত্তরণের টেকসই সমাধান সম্ভব। বর্তমান প্রেক্ষিতে সরকার যতই বলুক দেশ এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে কিন্তু বিভাজনের ভয়ানক চিত্রটাও আমরা দেখছি। এই চিত্র থেকে বেরিয়ে আসার পথই হলো দেশে গণতন্ত্র আরও সুসংহতকরণ এবং অসহিষ্ণু আচরণ থেকে বেরিয়ে আসা। একটি বিষয় পরিষ্কার যে, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন এদেশের সব মানুষের অংশগ্রহণের নির্বাচন নয়। আর তাই অবশ্যই সব মানুষের অংশগ্রহণের নির্বাচনের পথ উম্নুক্ত করার প্রয়োজনীয়তাটাই এখন বেশি।  আমার মনে হয় সেটি উম্নুক্ত হলেই আমাদের অনেক জাতীয় বিষয়ের মীমাংসা ও সুরাহা হবে।  ক্ষমতাসীন দলের উচিত হবে সেই পরিবেশ তৈরিতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা।

লেখক : চেয়ারম্যান, ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ও অভিবাসন বিশ্লেষক।

সর্বশেষ খবর