বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন প্রকল্প

সময়সীমা বৃদ্ধির ‘ছলাকলা’ রোধ করুন

দেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন বলে বিবেচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চার লেন প্রকল্পের কাজ নিয়ে চলছে ছলাকলা খেলা। ঠিকাদার এবং সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের কারসাজিতে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা তা চলতি বছরেও অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা এক বছর বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের কাছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সময় বাড়ানোর প্রস্তাব ইতিমধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছেন। বলেছেন, বাড়াবাড়ি করলে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্মর্তব্য, ১৯২ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১০ সালের জানুয়ারিতে। জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন চার লেন প্রকল্প ১০টি প্যাকেজে ভাগ করে সাত প্যাকেজের কাজ দেওয়া হয় চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশনকে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় সময় বাড়ানো হয়। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে ব্যয়ও। কিন্তু তারপরও পরিবর্তিত সময়সূচি অনুযায়ী শেষ করা যায়নি এ প্রকল্পের কাজ। সরকারের এ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পটি নানা সমস্যা ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় বাধাগ্রস্ত হয়েছে, এ অজুহাত খাড়া করা হয়। তৃতীয় দফায় সময় বাড়ানো হয় চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেও ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন প্রকল্পের ৩০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের কাজ বাকি থাকায় নতুন করে আরও এক বছর সময় চেয়েছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। অজুহাত দেখিয়ে সওজের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা বৃদ্ধি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সময়সীমা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়ানো হচ্ছে প্রকল্প ব্যয়। প্রকল্পের ঠিকাদাররা ব্যয় বাড়ানোর জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতার আশ্রয় নেয় এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। সওজের কর্তাব্যক্তিদের যোগসাজশে সময়সীমা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রতিটি প্রকল্পের ব্যয় অবিশ্বাস্য হারে বাড়ানো হয় এবং বৃদ্ধিপ্রাপ্ত অর্থের একটা অংশ সওজ কর্তাদের পকেটে যায় এমন অভিযোগও ওপেন সিক্রেট। আমরা আশা করব, শুধু চার লেন প্রকল্প নয়, প্রতিটি প্রকল্পের সময়সীমা বৃদ্ধির বিরুদ্ধেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কঠোর মনোভাব দেখাবে। জনগণের ট্যাক্সের টাকার অপচয় রোধে এটি মন্ত্রণালয়ের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর