শুক্রবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

প্রধানমন্ত্রীর ডেনমার্ক সফর

সহযোগিতার দ্বার খুলে দিক

বাংলাদেশের ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে নেদারল্যান্ডস। প্রধানমন্ত্রীর নেদারল্যান্ডস সফরকালে তাকে দেওয়া এ আশ্বাসকে আশাজাগানিয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে। দুনিয়ার যেসব দেশ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে সংকটাপন্ন বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। নেদারল্যান্ডসের অবস্থানও অভিন্নও। সে দেশের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা সমুদ্রপৃষ্ঠের চেয়ে নিচু হওয়ায় বন্যার ঝুঁকির মধ্যে। তবে নেদারল্যান্ডস ১৯৫৩ সালে নেওয়া ৬০ বছরের ডেল্টা প্ল্যানের মাধ্যমে তাদের দেশকে বন্যার ঝুঁকি থেকে যেমন রক্ষা করতে পেরেছে তেমন সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ভূমি উদ্ধার করে দেশের আয়তন বাড়ানোর কৃতিত্ব দেখিয়েছে। রাজধানী আমস্টারডামে চার মিটার নিচু হারলেম লেক ভরাট করে বিমানবন্দর নির্মাণ করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে তারা। বাংলাদেশের আয়তন গত চার দশকে প্রায় এক হাজার বর্গকিলোমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে সাগরপৃষ্ঠে দ্বীপ সৃজন ও বনায়নের মাধ্যমে। এসব প্রকল্পেও নেদারল্যান্ডসের সহযোগিতা ছিল চোখে পড়ার মতো। আশা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় নেদারল্যান্ডসের দেওয়া সহযোগিতা পানি ব্যবস্থাপনা ও বন্যা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য নিশ্চিত করবে। বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকাকে বন্যার ঝুঁকি থেকে রক্ষার পাশাপাশি সাগরপৃষ্ঠ থেকে ভূমি উদ্ধারের মাধ্যমে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। অভিন্ন সমস্যার কারণে নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশের প্রতি বরাবরই সহানুভূতিশীল ভূমিকা পালন করেছে। তাদের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশকে সমুদ্রপৃষ্ঠের ভূমি উদ্ধারের ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের পথ দেখিয়েছে। ইউরোপে ব্যাপকভাবে প্রচলিত প্রবচন হলো সৃষ্টিকর্তা পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন আর ডাচরা সৃষ্টি করেছেন নেদারল্যান্ডস। নেদারল্যান্ডসের সহযোগিতায় ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হলে বাংলাদেশের সমুদ্রপ্রান্ত থেকে লাখ লাখ একর জমি উদ্ধার করা সম্ভব হবে। বনায়ন, কৃষি এবং শিল্পায়নে উদ্ধারকৃত জমির ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে দেশের অর্থনৈতিক চালচিত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে। অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে যার কোনো বিকল্প নেই বললেই চলে।  আমাদের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর চলমান ডেনমার্ক সফর দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অন্যান্য ক্ষেত্রেও সহযোগিতার দ্বার উন্মোচন করবে।

সর্বশেষ খবর