শুক্রবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিমানের শিডিউল বিপর্যয়

অব্যবস্থাপনার দুর্নাম থেকে সরে আসতে হবে

শিডিউল বিপর্যয় যেন বাংলাদেশ বিমানের অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে। দুনিয়ার প্রায় সব দেশের উড়োজাহাজ চলে ঘড়ির কাঁটার দিকে লক্ষ্য রেখে। নির্দিষ্ট সময়ে যাত্রা শুরু এবং লক্ষ্যস্থলে পৌঁছানোকে তারা অলঙ্ঘনীয় কর্তব্য বলে ভাবে। যাত্রীদের আস্থা অর্জনে সময়ানুবর্তিতার বিকল্প না থাকলেও বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস যথেচ্ছতাকে তাদের বৈশিষ্ট্য হিসেবে বেছে নিয়েছে। ফলে বাধ্য না হলে কেউ বিমানে ভ্রমণ করেন না। যারা দেশপ্রেমের টানে জাতীয় পতাকাবাহী বিমানে ভ্রমণের আগ্রহ দেখান তাদের প্রতিনিয়তই হোঁচট খেতে হয়। যে দেশের প্রায় ৮০ লাখ মানুষ বিদেশে অবস্থান করে, সে দেশের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থার রমরমা ব্যবসা করার কথা থাকলেও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে লোকসান গুনতে হয় অব্যবস্থাপনার কারণে। শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে যাত্রীরা রসিকতা করেন ৯টার ফ্লাইট কয়টায় ছাড়বে। বুধবার বিমানের সিঙ্গাপুর রুটেও ঘটেছে শিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনা। সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটের ফ্লাইটের জন্য যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা হয়রানির সম্মুখীন হতে হয়। চার ঘণ্টা পর সে ফ্লাইট ছাড়ে ১২টা ৩৫ মিনিটে। যুক্তি দেখানো হয় অতিরিক্ত কুয়াশার জন্য ফ্লাইট ছাড়তে দেরি হয়েছে। অথচ এ সময় অন্যান্য বিমান সংস্থার উড়োজাহাজ শাহজালাল বিমানবন্দর ছেড়েছে স্বাভাবিক সময়ে। হজ মৌসুমের তিন মাস বিমানের শিডিউল ছিল লণ্ডভণ্ড। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটের বেশ কয়েকটি ফ্লাইট এ সময় বাতিলও করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এ ক্ষেত্রে কিছুটা সুস্থতা ফিরে এলেও আবারও শিডিউল বিপর্যয় যাত্রীদের আস্থায় চিড় ধরাচ্ছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হলে অন্যান্য বিমান সংস্থার মতোই সেবার মান নিশ্চিত করতে হবে। শুধু সময়ানুবর্তিতা নয়, লাগেজ হয়রানি, খাবারের নিæমান এবং অস্বাস্থ্যকর এয়ারবাস ব্যবহারের যে অভিযোগ রয়েছে তার অবসান ঘটাতে হবে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস যাতে সোনা চোরাচালান ও লুটপাটের আখড়া হিসেবে ব্যবহৃত না হয় সেটিও নিশ্চিত হওয়া দরকার।  অব্যবস্থাপনার দুর্নাম থেকেও সরে আসতে হবে। এটি বিমান সংশ্লিষ্ট সবার কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর