শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

পাটের সুদিন ফেরাতে

বহুমুখী ব্যবহারের উদ্যোগ নিন

ধান চাল গম ভুট্টা সার ও চিনি এ ছয়টি পণ্যে পাটের মোড়ক নিশ্চিত করতে আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযান শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে ১০টি মনিটরিং টিমও গঠন করা হয়েছে। যেসব এলাকায় ছয়টি পণ্য বস্তাজাত করা হয় বেশি সেসব এলাকায় অভিযান চালানো হবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। পাটকে এক সময় বলা হতো সোনালি আঁশ। বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরা বলে অভিহিত করা হতো পাটকে। কালের বিবর্তনে কৃত্রিম তন্তুর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাট তার কদর হারিয়েছে। পাটের দেশ বাংলাদেশেও কৃত্রিম তন্তুর কাছে মার খাচ্ছে সোনালি আঁশ। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পাট চাষিরা। যে পাট ছিল কৃষকদের নগদ অর্থ প্রাপ্তির উপায় তা প্রায়শই গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পাট চাষ করে ন্যায্যমূল্য পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে উঠছে। পাট উৎপাদনে অনীহা সৃষ্টি হওয়ায় দেশের পাটকলগুলোতে কখনো কখনো পাটের অভাবে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। পাটকলগুলোতে যে পাটের বস্তা ও অন্যান্য পণ্য উৎপাদন করা হয়, বিক্রির অভাবে স্থানাভাবের সংকটও দেখা দেয়। রপ্তানির অভাবে কিংবা দেশীয় বাজারে চাহিদা না থাকায় পাটকলগুলো লোকসান দিয়েও চালু রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে। হাজার হাজার চাষি ও পাট শ্রমিকের জীবন-জীবিকার ওপর হুমকি সৃষ্টি করেছে সোনালি আঁশের এই অকাম্য সংকট। ‘ম্যান্ডেটরি প্যাকেজিং অ্যাক্ট ২০১০’ অনুযায়ী ধান চাল গম ভুট্টা সার চিনি এই ছয়টি পণ্যে পাটের ব্যাগ ব্যবহার করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। পাঁচ বছর আগে প্রণীত আইনটি কার্যকর হলে দেশে পাটের ব্যবহার যেমন বাড়বে তেমন কৃত্রিম তন্তু ব্যবহারের কারণে পরিবেশগত যে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে তা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। পাটের ব্যাগের দাম দৃশ্যত কিছুটা বেশি হলেও তা বারবার ব্যবহারযোগ্য হওয়ায় প্রকৃত অর্থে সাশ্রয়ী। আমরা মনে করি পাটের ব্যবহার বাড়াতে শপিং ব্যাগসহ আরও কিছু ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা আরোপের কথা ভাবতে হবে।  পাটের বহুমুখী ব্যবহারে চালাতে হবে গবেষণা। সোনালি আঁশের সুদিন ফিরিয়ে আনতে যা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমাদের বিশ্বাস।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর