শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিনিয়োগ খরা কাটাতে

সহজ শর্তে শিল্পঋণ নিশ্চিত করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

মধ্যআয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পথে দেশে বিদ্যমান বিনিয়োগ খরা যে বড় বাধা তা স্বীকার করে নিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর সাপোর্ট প্রজেক্টের দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে চার ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যআয়ের দেশে উন্নীত হতে হলে সরকারি ও বেসরকারি খাতে চলমান বিনিয়োগ খরা কাটিয়ে উঠতে হবে। উচ্চ সুদের হার নিয়ে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ আমলে নিয়ে তিনি বলেছেন, উচ্চ সুদের কারণেই উৎপাদনশীল খাতে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না। দেশের বিনিয়োগের হালহকিকত সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের বক্তব্যে বিদ্যমান বাস্তবতার যথার্থ চিত্রের প্রতিফলন ঘটেছে বলে মনে করা যায়। আমরা এ কলামে বারবার বলেছি দেশকে মধ্যআয়ের দেশে উন্নীত করতে হলে বিনিয়োগ ক্ষেত্রে গতিসঞ্চার করতে হবে। প্রতিবছর যে লাখ লাখ মানুষ চাকরির বাজারে হাজির হচ্ছে, তাদের কাজের নিশ্চয়তা দিতেও বিনিয়োগের বিকল্প নেই। কিন্তু সরকারের সঠিক কর্মপন্থার অভাবে এ ক্ষেত্রে গতি তো সৃষ্টি হচ্ছেই না, বরং বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও হতাশার সৃষ্টি হচ্ছে। উৎপাদনের ক্ষেত্রে তার কালো ছায়াও অনুভূত হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আয় আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পাওয়ার পেছনে বিনিয়োগ ক্ষেত্রের সংকট যে অনেকাংশে দায়ী তা সহজেই অনুমেয়। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, ব্যাংক সুদের উচ্চ হার এবং গ্যাস বিদ্যুৎ সংকটের কারণে। বাংলাদেশে শিল্প স্থাপনে ব্যাংক ঋণ পেতে হলে উদ্যোক্তাদের মাসের পর মাস ঘুরতে হয়, ঋণ পাওয়া গেলে তার সুদের হার এত বেশি যে তা দিয়ে ব্যবসা করে ঋণ শোধ করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এ সমস্যা মোকাবিলায় ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর সাপোর্ট প্রজেক্টের মাধ্যমে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা প্রশংসার দাবিদার। তবে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইলে সর্বক্ষেত্রে সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।  প্রকৃত শিল্পোদ্যোক্তারা যাতে ঋণ পায় সে দিকটিও নিশ্চিত করতে হবে। দেশে বিনিয়োগ সুবিধা নিশ্চিত হলে ২০২১ সালের আগেই যেমন মধ্যআয়ের দেশে উন্নীত হওয়া সম্ভব হবে, তেমনি সৃষ্টি হবে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ।

সর্বশেষ খবর