মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

জালেমের সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই

মাওলানা মুহাম্মদ জিয়াউদ্দিন

মুক্তিযুদ্ধে যারা দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে জালেমের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল তারা নিন্দনীয়। হাদিসে নির্যাতনকারীদের ধিক্কার দেওয়া হয়েছে এবং তাদের সঙ্গে যে ইসলামের সম্পর্ক নেই তা স্পষ্ট করা হয়েছে।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জালেমদের সঙ্গে চলাফেরা করবে, তাদের অত্যাচারে সহায়তা করবে এবং তাদের মিথ্যাচারকে সমর্থন করবে, সে আমার দলের নয়, আমিও তার সঙ্গে নেই। আর যে লোক অত্যাচারী থেকে দূরে সরে থাকবে, অত্যাচারের সহযোগী হবে না, সে আমার প্রিয়জন, আমিও তার দলের।’ —আহমদ ইবনে হেব্বান।

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, ‘যে লোক কোনো জালেমকে সহায়তা করবে, অন্য কোনো না কোনো জালেমকে তার ওপরও চাপানো হবে।’ হজরত সাইদ ইবনুল মুসাইয়ার (র.) বলেন, ‘জালেম ও জালেমের সহযোগীদের দিকে অন্তরের ঘৃণা ও বিদ্বেষের দৃষ্টি ছাড়া অন্য কোনো দৃষ্টিতে তাকিও না, অন্যথায় তোমাদের নেক আমলগুলো বরবাদ হয়ে যেতে পারে।’ মাকহুল দামেশকি (র.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন যখন এই বলে ডাকা হবে, জালেম ও তার সহযোগীরা কোথায়? তখন জালেমের কলমে যে ব্যক্তি কালি ভরে দিত, এমনকি আরও ছোটখাটো বিষয়ে যে সাহায্য করত, সেও পরিত্রাণ পাবে না, তাকেও জালেমের সঙ্গে একত্রে জাহান্নামে ফেলে দেওয়া হবে।’ হজরত সুফিয়ান সাওরির কাছে এক দর্জি এসে বলল, আমি (জালেম) বাদশার পোশাক তৈরি করি, আমিও কি তার জুলুমের অংশীদার? সাওরি (র.) বললেন, তুমি নিজে তো জালেমই, এমনকি তারাও জালেম যারা তোমাদের মতো মানুষের কাছে সুই-সুতা বিক্রি করে।

অন্য এক হাদিসে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কেয়ামতের দিন তারাই সর্বপ্রথম জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে, জালেমের পক্ষে যারা অস্ত্র বহন করত এবং অকারণে মানুষকে তা দিয়ে আঘাত করত।’ হজরত ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন জালেমের সহযোগীরা জাহান্নামের কুকুরে পরিণত হবে।’ আরেক হাদিসে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে স্থানে মজলুমের ওপর নির্যাতন চালানো হয় বা তাকে হত্যা করা হয়, তোমরা কেউ সে স্থানে অবস্থান করো না। কেননা, সে স্থানে থেকেও যারা তা প্রতিহত করে না, তাদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হয়।’

লেখক : ইসলামী গবেষক

সর্বশেষ খবর