সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

দরুদ শরিফের বিস্ময়কর কাহিনী

মাওলানা আবদুর রশিদ

একদিন কুরাইশ নেতা আবু জেহেল কয়েকজন মুশরিককে নিয়ে এক স্থানে বসে গল্প-গুজব করছিল। একজন ভিক্ষুক এসে তার কাছে কিছু ভিক্ষার আবেদন করল। তারা তখন লোকটিকে ঠাট্টা করে বলল : এই যে দেখছ না। কাবা ঘরে আলী বসে আছে, তুমি তার কাছে গিয়ে ভিক্ষা চাও, সে বড় দানশীল। তোমাকে সে বহু মাল দান করবেন। কাফিরদের কথা ও পরামর্শ অনুযায়ী ভিক্ষুক  আল্লাহর নামে হজরত আলী (রা.)-এর কাছে ভিক্ষা চাইল। অথচ তখন তার কাছে এমন কোনো জিনিস ছিল না, যা দিয়ে ভিক্ষুককে বিদায় করবেন।

হজরত আলী (রা.) ভিক্ষুককে খালি হাতে ফিরিয়ে দিতে পারেন না। তাই তিনি ভিক্ষুকের উভয় হাতকে মুষ্টিবদ্ধ করিয়ে কিছু পড়ে ফুঁক দিয়ে বললেন : তুমি কাফেরদের সামনে গিয়ে তোমার হাত খুলবে, এর আগে খুলবে না। যখন সে কাফিরদের সামনে গিয়ে হাতের মুষ্টি খুলল, তখন তারা সবাই তার হাতে অতি মূল্যবান একটি মুক্তা দেখতে পেয়ে আশ্চর্য হয়ে গেল। কেননা, সে মুক্তাটির মূল্য তখন ছিল এক হাজার দিনার। তারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে ভিক্ষুককে জিজ্ঞাসা করল, কি ব্যাপার! আলী কোথা থেকে তোমাকে এত মূল্যবান মুক্তা দিল? ভিক্ষুক উত্তর দিল, তিনি আমার হাতে কেবল একটি ফুঁ দিলেন, আর তাতেই এ মুক্তাটির জন্ম হয়ে গেল। কিন্তু কাফিরদের মনে খটকা রয়েই গেল। তাদের সন্দেহ দূর হলো না। কারণ হজরত আলী তো এত ধনী ছিলেন না। তাই তারা হজরত আলী (রা.)-এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করল, পরিশ্রম ও কষ্ট ব্যতীত আপনার কাছে এত মূল্যবান মুক্তা কোথা থেকে এলো? তখন তিনি উত্তর দিলেন, যখন ভিক্ষুক আমার কাছে ভিক্ষা চাইল, তখন আমার কাছে কিছুই ছিল না, বরং আমার লজ্জা হতে লাগল যে, কেমন করে আমি ভিক্ষুককে রিক্ত হস্তে ফেরাব? সুতরাং আমি ভিক্ষুকের হাতে দরুদ শরিফ পাঠ করে ফুঁ দিয়ে দিলাম, এ দরুদের বরকতেই মহান আল্লাহতায়ালা মুক্তা সৃষ্টি করে দিয়েছেন। এ কথা শুনে কাফিররা অত্যন্ত বিস্মিত হলো, এমন কি সে সময় তিনজন কাফির পবিত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করল।

     লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর