রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

রাজধানীতেও জঙ্গি স্থাপনা

জননিরাপত্তার জন্য হুমকি

রাজধানীর মিরপুরে জেএমবির জঙ্গি আস্তানায় ১৪ ঘণ্টা ধরে অভিযান চালিয়ে গত বৃহস্পতিবার গোয়েন্দা পুলিশ তিন জঙ্গিসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে। উদ্ধার করা হয়েছে ১৬টি গ্রেনেড, বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক এবং কয়েকটি সুইসাইড ভেস্ট। আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক প্রবীণ নেতার বাড়ির ছয়তলার দুটি রুম ছাত্র পরিচয়ে ভাড়া নিয়েছিল জঙ্গিরা। সেখানে তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে গড়ে তোলে গ্রেনেড তৈরির কারখানা। আটক এক জেএমবি সদস্যের কাছ থেকে জঙ্গিদের গ্রেনেড তৈরির কারখানার সন্ধান পায় গোয়েন্দা পুলিশ। জঙ্গি আস্তানায় বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক থাকতে পারে এমন আশঙ্কায় তারা অভিযানের আগে সব ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়। বাড়িটির অন্য সব ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের সরিয়ে এনে নিরাপদ স্থানে রাখা হয়। তারপর চালানো হয় অভিযান। রাজধানীতে আরও একটি জঙ্গি আস্তানার সন্ধান লাভ এবং সফল অভিযানের মাধ্যমে গ্রেনেড ও বিস্ফোরকসহ জঙ্গিদের গ্রেফতার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য নিঃসন্দেহে একটি সাফল্য। তবে জঙ্গিরা রাজধানীতেও যে ইতিমধ্যে তাদের থাবা বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে সে সত্যটিও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এ ঘটনায়। নিজেদের কার্যক্রমকে সন্দেহমুক্ত রাখার জন্য একজন আওয়ামী লীগ নেতার বাসা ভাড়া নেওয়াও যে তাদের কৌশলের অংশ সে বিষয়টিও স্পষ্ট। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তীক্ষ নজর এড়িয়ে সাম্প্রতিক সময়ে দুটি পুলিশ চেকপোস্টে কুপিয়ে দুই পুলিশ সদস্যকে হত্যা, তাজিয়া মিছিলে গ্রেনেড হামলা এবং দুজন প্রকাশকের ওপর একই সময়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর আগে একজন বিদেশি নাগরিক এবং এক পীরের হত্যাকাণ্ডেও জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার সন্দেহ রয়েছে। জঙ্গিবাদের কালো থাবা ঠেকাতে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা উপেক্ষিত হচ্ছে। রাজধানীর ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে পুলিশ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের উদ্যোগ নিলেও সেখানে রয়েছে নানা ফাঁকফোকর।  জননিরাপত্তার স্বার্থেই এসব ফাঁকফোকর বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে নাগরিক সচেতনতাও গড়ে তুলতে হবে।

সর্বশেষ খবর