রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আল্লাহ দাম্ভিকদের পছন্দ করেন না

মাওলানা মুহম্মাদ আব্দুল খালেক

আল্লাহ দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না। এটি মহান আল্লাহর সুস্পষ্ট ঘোষণা। অহংকারী হওয়া মানেই আল্লাহর নির্দেশ অস্বীকার করা। বান্দা যাতে অহংকারী না হয় সে বিষয়ে পবিত্র কোরআনের একাধিক স্থানে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনের সূরা লোকমানের ১৮ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে— ‘অহংকারবশে কাউকে মুখ ভেঙচি দিও না, মানুষকে অবজ্ঞা কর না, নিশ্চয় আল্লাহ কোনো দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না।’

সূরা মুমিনের ২৭ নম্বর আয়াতেও অহংকারী হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে এভাবে— ‘মুসা বললেন, যারা হিসাব দিবসের প্রতি বিশ্বাস করে না, এমন প্রত্যেক অহংকারী থেকে আমার ও তোমাদের প্রভুর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে নিয়েছি।’

সূরা আন নহলের একটি আয়াত এ প্রসঙ্গে স্মরণযোগ্য। ইরশাদ করা হয়েছে— ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ অহংকারীদের ভালোবাসেন না।’

অহংকার মানুষের ইমান হরণ করে। বলা হয়, প্রথম পাপের ঘটনা ঘটেছিল অহংকারকে কেন্দ্র করে। আল্লাহপাক প্রথম মানব আদমকে সৃষ্টি করেন। আদমকে সেজদা করার জন্য ফেরেশতাদের নির্দেশ দেন। আদমের চেয়ে নিজেকে শ্রেষ্ঠ ভেবে ইবলিশ আল্লাহর এ নির্দেশ অমান্য করেন এবং সে শয়তান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। সূরা বাকারার ৩৪ নম্বর আয়াতে বিষয়টি তুলে ধরে ইরশাদ করা হয়েছে— ‘এবং আমি যখন ফেরেশতাদের বললাম আদমকে সেজদা কর তখন ইবলিশ ছাড়া সবাই সেজদা করল, সে নির্দেশ পালনে অস্বীকার করল এবং অহংকার করল। ফলে সে কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হলো।’

অহংকার করার যোগ্যতা একমাত্র আল্লাহই রাখেন। এটি মানুষের জন্য নিষিদ্ধ বা হারাম বিষয়। মানুষ সব ক্ষেত্রে আল্লাহর মুখাপেক্ষী। যে নিজেই অপরের মুখাপেক্ষী তার পক্ষে অহংকার শোভনীয় নয়। এ বিষয়ে মুসলিম শরিফের একটি হাদিস খুবই তাত্পর্যের দাবিদার। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহপাক বলেছেন, ‘শ্রেষ্ঠত্ব আমার পোশাক এবং অহংকার আমার চাদর। যে এ দুটি আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে চায়, তাকে আমি জাহান্নামে নিক্ষেপ করব।’

সোজা কথায় অহংকারীদের আল্লাহ জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। এ কঠিন সাজা থেকে রক্ষা পেতে হলে অহংবোধ থেকে দূরে থাকতে হবে। নিজেদের ক্ষমতা নিয়ে বড়াই করা বন্ধ করতে হবে।  আল্লাহ আমাদের সব ধরনের অহংবোধ থেকে দূরে থাকার তওফিক দান করুন।

     লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর