নজিরবিহীন সন্ত্রাস, কেন্দ্র দখল, ভোট ডাকাতি, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতিত্ব এবং রেজাল্টশিট পরিবর্তনসহ ত্রুটিপূর্ণ, অগ্রহণযোগ্য ব্যবস্থাপনার অভিযোগে পৌর নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। মেয়র পদে দল থেকে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তাদের কিন্তু পদত্যাগ করতে বলা হয়নি। কাউন্সিলর পদের নির্বাচন যদিও নির্দলীয় ভিত্তিতে হয়েছে, নব্বই শতাংশেরও অধিক নির্বাচিত হয়েছেন দল সমর্থকরা, বলা যায় দল কর্তৃক ঠিক করে দেওয়া প্রার্থীরাই। কাউন্সিলর পদেও বিএনপির বিপুলসংখ্যক পুরুষ ও মহিলা নেতা-কর্মী বিজয়ী হয়েছেন। তাদের ওপরও পদত্যাগের কোনো চাপ নেই। আওয়ামী লীগ যেসব আসনে জয় ‘করায়ত্ত’ করেছে, প্রত্যাখ্যান কি সেসব আসনের ফলাফল, না কি গোটা নির্বাচনের ফলাফল? নিজেদের যেসব প্রার্থী মেয়র পদে এবং স্বতন্ত্রভাবে কাউন্সিলর পদে বিজয়ী হয়েছেন বিএনপি তাদের পদ ছাড়তে বলবে বলে মনে হয় না। তাহলে ধরে নেওয়া যায় যে, নানা বিষয়ে কঠোর সমালোচনার পরও সামগ্রিকভাবে নির্বাচনটি তারা মেনে নিয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রাসঙ্গিক একটি বক্তব্য বেশ তাত্পর্যপূর্ণ। তিনি বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। ভোট গ্রহণের আগে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বারবার বলেছেন, এবার তারা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবেন। তারা কথা রেখেছেন। যে কজন দলীয় প্রার্থী ভোট গ্রহণ চলাকালে নির্বাচন থেকে সরে গেছেন তারা ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে তা করেছেন, দলীয় সিদ্ধান্তে নয়। বরং কিছু প্রার্থী মাঝপথে নির্বাচন বর্জনের জন্য দলীয় অনুমতি চাইলেও তা নাকচ করে ফলাফল যা-ই হোক নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকতে বলা হয়েছে বলে জানা গেছে। অর্থাত্ বিএনপি এখন থেকে নির্বাচনী রাজনীতিতে অবিচল থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে স্পষ্ট হয়েছে এই সিদ্ধান্তে। এটি একটি ভালো সিদ্ধান্ত। বিএনপি তো একটি নির্বাচনমুখী উদার গণতান্ত্রিক দল। ক্ষমতাপ্রত্যাশী দলও বটে! কিন্তু গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থায় রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা বা ক্ষমতায় যাওয়ার একমাত্র পথ তো হচ্ছে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের রায়। বলতেই হবে, এ ক্ষেত্রে বিএনপির স্খলন হয়েছিল। গণতান্ত্রিক সংগ্রামের সুপরিচিত ও সুরক্ষিত পথ পরিহার করে হিংসাত্মক পথে শক্তি প্রয়োগের পথ বেছে নিয়েছিল। সেই পথ গণনির্ভর পথ ছিল না। এতে জনগণের এমনকি দলের সব স্তরের সংগঠক নেতা-কর্মীদেরও সংশ্লিষ্টতা ছিল না। ‘সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচিটি একটি গণতান্ত্রিক কর্মসূচি ছিল। কিন্তু সে কর্মসূচি তারা সফল করতে পারেনি কেন্দ্রীয় ‘নেতৃত্বের’ ব্যর্থতায়। সরকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল, পার্টি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের সামনে। বালির ট্রাক এবং রায়টকার, জলকামান ও বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য দিয়ে সেখানে অবরোধ সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু গোটা ঢাকা শহর তো অবরুদ্ধ ছিল না। ঢাকা শহরে বিএনপি কর্মী-সমর্থক কম নয়। যেসব নেতা ওই কর্মসূচি সফল করার জন্য দায়িত্ব নিয়েছিলেন, অন্যভাবে বললে বলতে হয় যাদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছিল— যা সব রাজনৈতিক দলই কোনো কর্মসূচি সফল করার জন্য করে থাকে— সেসব নেতার কেউ দায়িত্ব পালন করেননি। দলীয় কৌশল গুলশান অফিস থেকে আগেই ফাঁস হয়ে যাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভয়ে মাঠে নামেনি কেউ। কারও টিকিটির নাগালও পাওয়া যায়নি। অথচ জানা যায়, সরকারি নানা প্রতিকূলতা সৃষ্টির মাঝেও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ঢাকায় এসেছিলেন। ঢাকার নেতাদের পলায়নী মনোভাব এবং পলাতক অবস্থানের কারণে ঢাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড-থানার কর্মীরাও মাঠে নামেনি। অথচ পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, এখনো ঢাকায় বিএনপির যে জনসমর্থন আছে, তাতে রাজধানীর ৯৩ ওয়ার্ডের প্রতিটিতেই বড়সড় মিটিং-মিছিল করার মতো অবস্থায় আছে। নেতৃত্বের ব্যর্থতা এবং আন্দোলনের কর্মসূচি ও কর্মকৌশল নির্ধারণের অযোগ্যতার কারণে সেই নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনটি ব্যর্থ হয়। সাম্প্রতিককালের তিনটি ঘোষিত কর্মসূচির বাকি দুটি ছিল হঠকারী কর্মসূচি। হেফাজতে ইসলামীর কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বড় রকমের একটি ভুল করেছিল বিএনপি। হেফাজতের অবস্থান কর্মসূচিকে মনে হয়েছিল তা বুঝি বেগম খালেদা জিয়ার কর্মসূচি। তা না হলে তাদের সমর্থনে তিনি দলের সব স্তরের নেতা-কর্মী এবং ঢাকাবাসীকে রাজপথে নামার আহ্বান জানিয়েছিলেন কেন? পাঠক, আপনাদের মনে আছে যে, হেফাজতে ইসলামী ঘোষণা করেছিল, তাদের মহাসচিব বাবুনাগরী পরদিনই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। কেউ কেউ রসিকতা করে বলেছিলেন, বেগম জিয়া কি তাহলে আল্লামা শফীর হাতে বায়াত নিয়ে হেফাজতের হেফাজতে গিয়ে নিজে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করলেন? যাদের জন্য নিজের এবং নিজের দলের আলটিমেট ক্ষতিটা করলেন, সেই হেফাজত এখন কি তার সঙ্গে আছে? হেফাজত ‘এপিসোড’ শেষে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচির নামে আরেক হঠকারী কর্মসূচি দলটিকে আরও বড় প্রশ্নের মধ্যে ফেলে। হরতাল, অবরোধ, অসহযোগ কর্মসূচি আমাদের দেশে আগে অন্য কেউ পালন করেননি, তা নয়। কিন্তু তা গণতান্ত্রিক চরিত্রের সীমা লঙ্ঘন করে সহিংস রূপ নিলে তার পরিণতি কর্মসূচি পালনকারীদের জন্য শুভফল বয়ে আনে না। বঙ্গবন্ধুর ডাকে অসহযোগ আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। তাও কতদিন? বেগম খালেদা জিয়ার প্রথম শাসনামলে আওয়ামী লীগ, জামায়াতে ইসলামী, এরশাদ জাপা অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছিল ২৮ দিন। দুই কর্মসূচির কোনোটিতেই পেট্রলবোমার ব্যবহার এবং ব্যারিকেড সৃষ্টির জন্য হাজার হাজার বৃক্ষ নিধনের ঘটনা ঘটেনি। বিরোধী দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এত নিরীহ মানুষের প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেনি। তিন মাস চলা অবরোধে সংঘটিত সব অপরাধের সঙ্গে বিএনপি জড়িত কিনা, তাতে জামায়াতের ভূমিকা এবং সরকারের কোনো কূটকৌশলও ছিল কিনা তা এখনো আইন-আদালতে প্রমাণ হয়নি সত্য, কিন্তু সব মর্মান্তিক ঘটনা তো ঘটেছে তিন মাসের অবরোধ কর্মসূচির আচরণে। ২০ দলীয় জোটের প্রধান শরিক হিসেবে বিএনপি এবং এর নেত্রী বেগম জিয়া এ দায় এড়াবেন কী করে? সহিংসতা, নাশকতা যেই ঘটাক, এর মাত্রা যখন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছিল, তখন বেগম খালেদা জিয়া সেই কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিলেন না কেন? এই দুই কর্মসূচি দেশে-বিদেশে বিএনপির ভাবমূর্তি যেমন প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, একইভাবে দলেরও সর্বনাশ করেছে। সারা দেশে দল ও বিভিন্ন অঙ্গদলের হাজার হাজার কর্মী কারারুদ্ধ, আরও বেশি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা-মোকদ্দমার খড়গ, গুম, গ্রেফতার, মামলা-হামলা আতঙ্কে অসংখ্য নেতা-কর্মীর রাতের ঘুম হারাম। অনেকে আপনজনের মুখ দেখে না কতদিন! বিএনপির মতো একটি উদার গণতান্ত্রিক দল এমন ধকল সইতে পারে না। তাই দল আজ অনেকটাই লণ্ডভণ্ড। রাজনৈতিক দল ভুল করে, আবার ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আত্মশুদ্ধির চেষ্টা করে। বিএনপি এখন সে চেষ্টা করছে বলে মনে হচ্ছে। আগেই উল্লেখ করেছি, বিএনপি একটি নির্বাচনমুখী উদার গণতান্ত্রিক দল। এর সঙ্গে আরও একটি অলঙ্কার জড়িয়ে আছে; তা হচ্ছে, দলটির প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন কিংবদন্তি নায়ক জেনারেল জিয়াউর রহমান— যার কণ্ঠে একাত্তরের অপ্রস্তুত, অসংগঠিত ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় জাতি শুনেছিল রক্তে অস্তিরতার ঢেউ তোলা ‘আমি মেজর জিয়া বলছি...।’ বঙ্গবন্ধুর পক্ষের কণ্ঠস্বরটিও ছিল ‘মেজর’ জিয়ার— কোনো রাজনৈতিক নেতার নয়। জেনারেল জিয়া, জেনারেল মীর শওকত আলী, উইং কমান্ডার হামিদুল্লাহর মতো সেক্টর কমান্ডার, বহু সাব-সেক্টর কমান্ডারসহ অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার সমন্বয়ে গঠিত এই দল। গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, এই দুই অবস্থানেই অটল থাকার কথা বিএনপির। দলের ঘোষণাপত্রের শুরুতেই অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলা হয়েছে, ‘ঐতিহাসিক মুক্তি সংগ্রামের সোনালি ফসল বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আমাদের পবিত্র আমানত এবং অলঙ্ঘনীয় অধিকার। প্রাণের চেয়ে প্রিয় মাতৃভূমির এই স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সুদৃঢ়-সুরক্ষিত করে রাখাই হচ্ছে আমাদের কালের প্রথম ও প্রধান দাবি।’ ঘোষণাপত্রের তৃতীয় ও চতুর্থ ধারায় ব্যক্ত করা হয়েছে জনগণের গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার। কাজেই স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা এবং গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার থেকে সরে গেলে বিএনপি আর জিয়াউর রহমানের বিএনপি থাকে না। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, দুটি ক্ষেত্রেই বিএনপির বিচ্যুতি ঘটেছে। জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে নির্বাচনী জোটের নামে প্রায় আদর্শিক ঐক্য গড়ে তোলা, রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রণয়নে মৌলবাদী ঝোঁকের প্রতি দুর্বলতা এবং নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের পথ পরিহার করে হঠকারী রাজনৈতিক লাইন গ্রহণ এই বিচ্যুতিকে স্পষ্ট করেছে। গণতান্ত্রিক পন্থায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অদল-বদলে যারা বিশ্বাস করে তারা এমন সর্বনাশা পথে হাঁটতে পারে না। এতে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দলটি। দলের অনেক অনুরাগী-সমালোচক বলেন, ‘আমাদের প্রিয় জাতীয়তাবাদী দল এখন জামায়াতীয়তাবাদী দলে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। জোটবদ্ধ আন্দোলনের নামে বিভিন্ন সেক্টরের নেতৃত্ব জামায়াতে ইসলামীর রোকনদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। বিএনপির তৃণমূলসহ বিভিন্ন স্তরকে তারা জামায়াতের কর্মী, নিদেনপক্ষে সমর্থক তৈরির ‘টার্গেট, গ্রুপ’ হিসেবে ব্যবহার করছে। বিএনপিকে আবার তার প্রতিষ্ঠাকালীন অঙ্গীকারের কাছে ফেরত আনতে হবে, অর্থাত্ বর্তমান অবস্থা থেকে জিয়ার বিএনপিতে ফেরত আনতে হবে।
পৌর নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করল বিএনপি। কিন্তু ফলাফল আরও একটু ভালো করার জন্য বিএনপি কি তার সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে? ২৩৪ পৌরসভার কয়টাতে ভোটারদের কাছে গিয়েছিলেন দলের কেন্দ্রীয় ‘নেতারা’। অথচ ১০টি টিম ছড়িয়ে পড়লে সারা দিনে সবকটি পৌরসভায় পৌঁছতে পারতেন তারা। দায়িত্বপ্রাপ্তদের দুই-চারজন কিছু কিছু জায়গায় গেছেন যেখানে থাকা-খাওয়ার সুবন্দোবস্ত ছিল। এক জায়গা থেকে অনেক জায়গায় সংযোগের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। সবাই ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করলে কর্মীরা সাহস পেত, সমর্থকরা উদ্বুদ্ধ হতো, সাধারণ ভোটাররা বিএনপির ধানের শীষে ভোট দিতে উত্সাহিত হতো। দায়িত্বপ্রাপ্তদের মনে সর্বদা ‘পুলিশ পুলিশ’ ও পলায়নী মনোভাব না থাকলে এবং এ নির্বাচনেও নমিনেশন বেচা-কেনার অভিযোগ না থাকলে, পকেটম্যান তৈরির ঘৃণ্য প্রবণতা কাজ না করলে জামায়াতের সমর্থন ছাড়াই বিএনপি ৭০-৮০টি পৌর মেয়র পদে জিততে পারত বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন সরকারি কারসাজি, কেন্দ্র দখল, জালভোট, সিল মারামারির এত শত অভিযোগ এবং মিডিয়ার নানা সচিত্র তথ্য প্রকাশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতেও বিএনপি আওয়ামী লীগের ম্যানেজ করা ৫২% ভোটের বিপরীতে ২৮% ভোট পেয়েছে। ভোট পুরোপুরি স্বচ্ছ হলে এবং বিএনপির নির্বাচনী দায়িত্ব সঠিক ব্যক্তিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হলে ভোট প্রাপ্তির হার নিশ্চয়ই আরও বেড়ে যেত। একটি ভালো নির্বাচনে একক লড়াইয়েও বিএনপির বিপুল জনসমর্থন লাভের সম্ভাবনার ইঙ্গিত আছে এ নির্বাচনে। পৌর নির্বাচনই শেষ নির্বাচন নয়। এ নির্বাচন একটি বার্তা অবশ্যই দিয়েছে যে, ভবিষ্যতে অন্য সব নির্বাচনও অংশগ্রহণমূলক হবে। তবে যে কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হলে শুধু অংশগ্রহণমূলক হয়ে লাভ নেই। এ জন্য সব পক্ষের দায়িত্বশীল ভূমিকা অপরিহার্য। বিএনপির নির্বাচনে আসাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে আশু অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের একটি ইঙ্গিতবহ শুভ বার্তা বলে কি আমরা একে ধরে নিতে পারি? বলা চলে, ভোটে হেরেও রাজনীতিতে জিতেছে বিএনপি। অনুকূল একটি পরিবেশ অন্তত তৈরি করতে পেরেছে দলটি। বেগম খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশে রাজতন্ত্র কায়েমের অভিযোগ করেছেন। প্রশ্ন উঠতেই পারে, তিনি যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন কি দেশে, এমনকি দলেও গণতন্ত্র ছিল? এখনো কি আছে? কথায় আছে ‘আপনি আচরি ধর্ম পরেরে শেখাও’।
লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট।
ই-মেইল : [email protected]