রবিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

গ্যাস লাইনে বিস্ফোরণ

দুর্ঘটনা এড়াতে চাই সতর্কতা

উত্তরায় গ্যাস লাইন বিস্ফোরণে পুরো একটি পরিবার ছারখার অবস্থার শিকার হয়েছে। মারাত্মকভাবে অগ্নিদগ্ধ গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। তাদের দুই ছেলে ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছে এ দুর্ঘটনায়। আরেকজন অগ্নিদগ্ধ হলেও তার অবস্থা কিছুটা আশঙ্কামুক্ত। ভোরে ঘুম থেকে উঠে গৃহকর্তার চা পানের অভ্যাসই তার পরিবারের সবার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াল। গ্যাসের চুলা জ্বালানোর জন্য ম্যাচের কাঠি ঠুকতেই মুহূর্তে পুড়ে যায় সব কিছু। স্বজনদের অভিযোগ, রান্নাঘরে গ্যাসের পাইপে ছিদ্র থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। মুহূর্তের মধ্যে পুড়ে গেছে একটি সুখের সংসার। রাজধানীতে গ্যাসের লাইনে ত্রুটি থাকার অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। গত আট মাসে গ্যাস দুর্ঘটনায় রাজধানীতে ২৭ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মারাও গেছেন। উত্তরায় এক পরিবারে সব সদস্যের অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনা গ্যাস ট্র্যাজেডির লাগাম টেনে ধরার প্রয়োজনীয়তা যেন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এমনিতেই গ্রাহকদের অভিযোগের অন্ত নেই। অবৈধ গ্যাস সংযোগের মাধ্যমে তিতাসের কর্মচারী-কর্মকর্তাদের একাংশ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার  কসরতে যে নিয়োজিত, এটি একটি ওপেন সিক্রেট। ফলে গ্রাহকসেবার বিষয়টি উপেক্ষিত হয় নিষ্ঠুরভাবে। যেনতেনভাবে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার ফলে প্রায়ই পাইপলাইনের ত্রুটি ধরা পড়ে। দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটে চললেও তা যেন দেখার কেউ নেই। উত্তরায় গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা যে ট্র্যাজেডির অবতারণা ঘটিয়েছে তার জন্য সংশ্লিষ্টদের অসতর্কতা ও অসচেতনতা অনেকাংশে দায়ী। গ্যাসের চুলা জ্বালানোর ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের যে নিয়ম রয়েছে তা মানা হলে এ বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হতো। বিশেষত বদ্ধ রান্না ঘর খুলেই সঙ্গে সঙ্গে গ্যাস জ্বালানো কী ধরনের ট্র্যাজেডির উদ্ভব ঘটাতে পারে একের পর এক দুর্ঘটনা তার প্রমাণ। আমরা আশা করব, দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ যেমন যত্নবান হবে, তেমন গ্রাহকদের পক্ষ থেকেও অবলম্বন করা হবে সতর্কতা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর