রবিবার, ৬ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

তাওহিদ বা একাত্ববাদ ইসলামী বিশ্বাসের মূল ভিত্তি

মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল খালেক

আল্লাহ এক এবং তিনি ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই এই তত্ত্বকে তাওহিদ বা একাত্ববাদ বলা হয়। নামাজ, রোজা, জাকাত, হজসহ সব ইবাদতের মূল লক্ষ্য তাওহিদের এই শিক্ষাকে ধারণ করা। তাকে নিরঙ্কুশভাবে জীবনের সর্বক্ষেত্রে পরস্ফুিট করা।

আল্লাহ এক এবং তার কোনো শরিক নেই এটি হলো ইসলামের মূল শিক্ষা। এ শিক্ষা প্রদানের জন্য আল্লাহ বিভিন্ন সময়ে মানব জাতির জন্য রসুল পাঠিয়েছেন। তারা মানুষকে আল্লাহমুখী অর্থাৎ মহান স্রষ্টার প্রতি আনুগত্যশীল হওয়ার দাওয়াত দিয়েছেন। সব নবী বা রসুলের মূল বক্তব্য ছিল ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই।

ইসলাম একাত্ববাদবিরোধী যে কোনো ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করে। কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ, কাউকে আল্লাহর সন্তান ভাবার কোনো অবকাশ নেই। ইসলামে পুরোপুরিভাবে নিষিদ্ধ। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনের সূরা আল আম্বিয়ার ২২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যদি আল্লাহ ব্যতীত বহু মাবুদ থাকত তবে উভয়ই ধ্বংস হয়ে যেত।’ পবিত্র কোরআনের এ বক্তব্য বাস্তবতার সঙ্গেও সঙ্গতিপূর্ণ। কারণ সৃষ্টিকর্তা বা মহাবিশ্বের নিয়ন্ত্রকের সংখ্যা একাধিক হলে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকত। এ দ্বন্দ্ব সৃষ্টি জগতের শৃঙ্খলাকে বিনষ্ট করত। তাতে ধ্বংস অনিবার্য হয়ে উঠত।

তাওহিদের ওপর বিশ্বাস ইসলামের মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত। এ বিশ্বাস বা ইমান আনার মাধ্যমে বান্দা তার স্রষ্টার প্রতি যথার্থ আনুগত্যের প্রকাশ ঘটাতে পারে। তাওহিদ অর্থাৎ একাত্ববাদের শিক্ষা মানুষকে সত্যাশ্রয়ী হতে শিক্ষা দেয়। আল্লাহর প্রতি তার আনুগত্যকে নিরঙ্কুশ করে। অন্য কারও কাছে মাথা নত করার নির্বুদ্ধিতা এবং হীনম্মন্যতা থেকে রক্ষা করে।

একাত্ববাদ অর্থাৎ আল্লাহ এক এবং সব কিছুতে তার নিরঙ্কুশ থাকায় বিশ্বজগতের সব কিছু সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হয়। কোথাও কোনো অসঙ্গতি চোখে পড়ে না। মাবুদের সংখ্যা একাধিক হলে শৃঙ্খলা লোপ পেত। সূরা মুমিনুনের ৯১ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোনো ইলাহ্ নেই। যদি থাকত তবে প্রত্যেক ইলাহ স্বীয় সৃষ্টি নিয়ে পৃথক হয়ে যেত এবং একে অপরের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করত।’

নিজেদের মুসলমান হিসেবে প্রমাণ করতে হলে তাওহিদ অর্থাৎ একাত্ববাদকে হৃদয়ে আঁকড়ে ধরতে হবে।  আল্লাহ আমাদের সে তৌফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর