বুধবার, ৯ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

সবার শীর্ষে বাংলাদেশ

বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন এখন বাস্তবতা

রাষ্ট্রক্ষমতায় নারীর অবস্থান বিবেচনায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বের এক নম্বরের দেশ। বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাবান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড ও ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে প্রণীত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘দ্য গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০১৫’তে রাষ্ট্রক্ষমতায় নারীর অবস্থান বিবেচনায় এক নম্বরে উঠে এসেছে বাংলাদেশের নাম। এদিক থেকে ইউরোপের সবচেয়ে সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশ জার্মানির অবস্থান ১২তম আর বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ৬৪তম। যুক্তরাষ্ট্রকে বলা হয় উদার গণতন্ত্রের দেশ। নারী পুরুষের সমানাধিকারের প্রবক্তা হিসেবেও তারা দাবিদার। কিন্তু সে দেশেও কোনো নারী এ যাবৎ সর্বোচ্চ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পারেননি। অদৃশ্য পুরুষতন্ত্র তাতে বাদ সেধেছে। ক্লিনটন যখন প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থী হন সে সময়ও তার চেয়ে বেশি পরিচিত ছিলেন তার স্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। দীর্ঘ ৮ বছর তিনি ফার্স্টলেডি হিসেবে উজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছেন। আট বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিলারি ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হওয়ার লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সে সময় বারাক ওবামা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় অপরিচিত। আর হিলারি শুধু যুক্তরাষ্ট্রে নয়, দুনিয়াজুড়ে পরিচিত। তারপরও হিলারি মনোনয়ন লড়াইয়ে হেরে যান। এ বছরও তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন প্রেসিডেন্ট পদে দলীয় মনোনয়নের জন্য। বাংলাদেশের নারীরা অবশ্য এদিক থেকে ভাগ্যবতী। নব্বই দশকের শুরুতেই দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভানেত্রী পদে অধিষ্ঠিত হন শেখ হাসিনা। তার কয়েক বছর পর আরেক শীর্ষ দল বিএনপির শীর্ষে আসেন বেগম খালেদা জিয়া। ১৯৯১ সালের পর থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধীদলীয় নেতার পদটি নারী নেত্রীদের হাতে। রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান এখন নবম এবং নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে অষ্টম। জাতীয় সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব বিবেচনায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ৭৬তম। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের অবস্থানও বাংলাদেশের পেছনে। বেগম রোকেয়া ১১০ বছর আগে এমন এক দেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন সেখানে সব কিছুর শীর্ষে থাকবে নারীরা। নারীকে ঘুম থেকে জাগাতে তিনি এই স্বপ্নকল্প ছড়িয়ে দিয়েছিলেন।  বাংলাদেশের নারীরা শত বছর পর জেগে উঠলেও নিরাপত্তাহীনতা এখনো এদেশের নারীদের নিত্যসঙ্গী। আপন মহিমায় ভূমিকা পালনের স্বার্থে নিরাপত্তাজনিত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর