বুধবার, ৯ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

ইসলামে সব ধরনের মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ

মাওলানা আবদুর রশিদ

পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ঘোষণা করেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ, মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য গণনা শয়তানের অপবিত্র কাজ। অতএব তোমরা এগুলো থেকে বেঁচে থাক, যাতে তোমরা সফলতা অর্জন করতে পার। শয়তান তো চায় মদ জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মধ্যে সংঘাত ও বিদ্বেষ ঘটাতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও সালাত থেকে তোমাদের বিরত রাখতে। তবু কি তোমরা বিরত হবে না। (সূরা মায়েদা-৯০-৯১)

মদ সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পেয়েছে উপরোক্ত আয়াতে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সব নেশাকারী বস্তুই মদ বা মাদক আর সব নেশাকারী বস্তুই হারাম। মাদকদ্রব্যকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। এর মধ্যে আছে প্রাকৃতিক মাদকদ্রব্য। যেমন— মদ, আফিম, তাড়ি, গাঁজা, চরস, হাশিশ ইত্যাদি। আর কাছে রাসায়নিক মাদক। যেমন— হেরোইন, কোকেন, ফেনসিডিল, প্যাথেড্রিন ইত্যাদি। সব ধরনের মাদকই ইসলামে নিষিদ্ধ। মাদকসেবীদের আখিরাতের জীবনে কঠিন সাজার সম্মুখীন হতে হবে। তাদের জায়গা হবে গাই নামের জাহান্নামের একটি গুহায়।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘গাই’ জাহান্নামের একটি গুহার নাম। জাহান্নামও তা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করে। আল্লাহতায়ালা যাদের জন্য এই গুহা প্রস্তুত করেছেন তারা হচ্ছেন যে জিনাকার জিনায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, যে মদ্যপায়ী মদ্যপানে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, যে সুদখোর সুদ গ্রহণ থেকে বিরত হয় না, যারা পিতা-মাতার অবাধ্যতা করে, যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় এবং যে নারী অপরের সন্তানকে তার স্বামীর সন্তানে পরিণত করে দেয়। (কুরতুরী)

যারা মদ পান করে তারা মুমিন থাকে না। হজরত আবু হুরাইরা থেকে বর্ণিত। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, চোর চুরি করার সময় মুমিন থাকে না, ব্যভিচারী ব্যভিচারে রত অবস্থায় মুমিন থাকে না, মদ্যপানকারী মদপানরত অবস্থায় মুমিন থাকে না, অতঃপর তওবা করলে মুমিন অবস্থায় ফিরে আসে। (বুখারি, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি)

মাদকদ্রব্য মানুষের স্বাভাবিক চেতনাকে লুপ্ত করে। তার মনুষ্যত্ব বোধ লোপ পায়। যে কারণে মাদকসেবী শুধু নয়, মাদক সম্পর্কিত সবাই ইসলামের দৃষ্টিতে ঘোরতর অপরাধী। হজরত ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদ পানকারী, মদ পরিবেশনকারী, মদ বিক্রেতা, মদ ক্রয়কারী, যার জন্য ক্রয়-বিক্রয় করা হয়, মদ উৎপাদনকারী, সংগ্রহকারী, পরিবহনকারী, যার জন্য বহন করা হয়, মদ বিক্রি থেকে অর্জিত অর্থ ভোগকারী সবার উপরেই অভিশাপ বর্ষণ করেছেন।  (আবু দাউদ, ইবনে মাজা)।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর