বুধবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

ইসলাম আল্লাহর মনোনীত ধর্ম

মুফতি আবু হোরাইরা রায়পুরী

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য ধর্ম একমাত্র ইসলাম’ (সূরা আলে-ইমরান-১৯)। কোরআনের পরিভাষায় ‘দ্বীন’ সেসব মূলনীতি ও বিধিবিধানকে বলা হয় যা হজরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে হজরত মুহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত সব নবীর মধ্যে সমভাবেই বিদ্যমান রয়েছে। এতে বোঝা যায়, সব নবীর দ্বীনই এক ও অভিন্ন ছিল। সাধারণত ওই দ্বীন ও শরিয়তকেই ‘ইসলাম’ বলা হয়, যা নিয়ে সবার শেষে হজরত মুহাম্মদ (সা.) আগমন করেছেন এবং বিগত সব শরিয়তকে রহিত করে দিয়েছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত যে দ্বীন কায়েম থাকবে। তাই রসুল (সা.) ইসলামের ব্যাখ্যায় বলেন, এ কথার স্বীকৃতি দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহতায়ালার রসুল, নামাজ কায়েম করা, জাকাত আদায় করা, রমজান শরিফের রোজা রাখা, সম্পদ থাকলে হজ করা। এ ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন তিনি জিব্রাইল (আ.)-এর প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে (বুখারি ও মুসলিম)। রসুল (সা.) আরও বলেন, এখন হজরত মূসা (আ.) জীবিত থাকলে আমার অনুসরণ ছাড়া তার গত্যন্তর ছিল না (বায়হাকি)। এ অর্থের দিক দিয়ে ‘ইসলাম’ শব্দটি দ্বীনে মুহাম্মদী ও উম্মতে মুহাম্মাদিয়ার এক বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়েছে। মোট কথা এই যে, প্রত্যেক পয়গাম্বরের আমলে তার আনীত দ্বীনই ছিল দ্বীনে ইসলাম এবং আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য। পরে এগুলো একের পর এক রহিত হয়েছে এবং দ্বীনে মুহাম্মদী ‘ইসলাম’ নামে অভিহিত হয়েছে। যা কিয়ামত পর্যন্ত কায়েম থাকবে। সুতরাং উল্লিখিত আয়াতের দ্বারা প্রমাণিত হয়, একমাত্র ইসলাম ছাড়া এই পৃথিবীতে তথাকথিত যত ধর্ম ও মতবাদ আছে কোনোটাই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয় এবং গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। যারা ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ভ্রান্ত ধর্ম অবলম্বন করে সফল হতে চায় তাদের সম্পর্কে অন্য আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন : ‘যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম সন্ধান করে, কস্মিনকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে হবে ক্ষতিগ্রস্ত’ (সূরা আলে ইমরান-৮৫)। ইসলামের পরিপূর্ণতা পবিত্র কোরআনে বারবার ঘোষিত হয়েছে। অতএব, যারা ব্যক্তিগত জীবনে ইসলামকে মানতে রাজি অথচ সমাজ ও জাতীয় জীবনে ইসলামের প্রতিফলন দেখতে নারাজ তারা ইসলামের কিছু অংশের প্রতি বিশ্বাস করে আর কিছু অংশের প্রতি অবিশ্বাস করে, আল্লাহতায়ালার কাছে খণ্ডিত ইসলাম গ্রহণযোগ্য নয়। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, প্রতিটি মানুষের কবরে তিনটি প্রশ্ন করা হবে— ১. তোমার রব কে? ২. তোমার দ্বীন কী? ৩. এই ব্যক্তি কে? যাকে তোমাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। যে ব্যক্তি জবাবে বলবে, আমার প্রভু আল্লাহ! আমার ধর্ম ইসলাম। তিনি হলেন মহানবী (সা.)! সে ব্যক্তিই সেদিন মুক্তি পাবে। আর যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো পথ অন্য কোনো মতাদর্শ গ্রহণ করেছিল তারা কবরে জবাব দিতে ব্যর্থ হবে।  ফলে তাদের কঠিন পরিণতির সম্মুখীন হতে হবে।

     লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর