রবিবার, ২২ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

শবেবরাত : ক্ষমা পাওয়ার রাত

মাওলানা মুহম্মাদ আবদুল খালেক

ভাগ্যরজনী লাইলাতুল বারাত বা শবেবরাত আজ। শাবান পবিত্র বলে পরিচিত মাসগুলোর অন্যতম।  এ মাসকে রমজান আহ্বানকারী মাস হিসেবেও অভিহিত করা হয়। লাইলাতুল বারাত বা পবিত্র শবেবরাতকে ধারণ করছে এই মাস। রমজান মাস ছাড়া রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাবান মাসে সবচেয়ে বেশি নফল রোজা আদায় করতেন। শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাতকে রহমতের রাত হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ১৫ শাবানের রাতে মহান আল্লাহ তার সৃষ্টজীবের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেন এবং হিংসুক ও খুনি ছাড়া অন্য বান্দাদের ক্ষমা করে দেন। (মুসনাদে আহমদ)।

এই রাতে আল্লাহ বান্দাদের জন্য তার রহমতের দরজা খুলে দেন। এই রাতে আল্লাহ বান্দার ভাগ্য নির্ধারণ করেন। তাদের পাপকে ক্ষমা করেন। হজরত আলী (রা.) বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, শাবানের ১৫তম রাতে নামাজ পড় এবং পরবর্তী দিনে রোজা রাখ। কেননা সূর্যাস্ত থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত আল্লাহতায়ালা প্রথম আসমানে অবতরণ করেন এবং আহ্বান করতে থাকেন— আছে কি কোনো ক্ষমাপ্রার্থী, আমি তাকে ক্ষমা করে দেব? আছে কি কোনো রিজিক যাচনাকারী, আমি তাকে রিজিক দেব? আছে কি কোনো বিপদগ্রস্ত, আমি তাকে বিপদ থেকে মুক্তি দেব? আছে কি কোনো এমন কেউ এমন কেউ ইত্যাদি। (ইবনে মাজাহ, বায়হাকী)।

হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে— এ রাতে আল্লাহতায়ালা মাফ করে দেন উম্মতের গোনাহ্-খাতা; কিন্তু সাত শ্রেণির মানুষের এ রাতে কোনো প্রকার অংশ থাকে না। ১. জাদুকর, ২. শরাব খোর, ৩. জিনাকারী ৪. আত্মীয়তা ছিন্নকারী, ৫. মা-বাবার নাফরমান, ৬. পরনিন্দাকারী, ৭. কৃপণ; হিংসুক যে তিন দিনের বেশি অপর মুসলমান ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ রাখে। এদের কখনো মাফ করা হয় না।

শবেবরাতের করণীয় সম্পর্কে হজরত রসুলে আকরাম (সা.) ইরশাদ করেন, ১৫ শাবান রাতে তোমরা রাত জেগে ইবাদত কর এবং পরদিন রোজা রাখ। এই হাদিস থেকে জানা যায় শবেবরাত উপলক্ষে করণীয় দুটি। এক. রাত জেগে ইবাদত করা, যেমন নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, তাসবিহ তাহলিল, দোয়া, দুরুদ, তাওবা ইস্তেগফার ইত্যাদি।

আল্লাহর রহমত অর্জনের এই রাতে নফল ইবাদত করা উত্তম। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু নফল ইবাদত নিজ গৃহে করতেন। সেহেতু শবেবরাতে নিজ গৃহে ইবাদত করা উত্তম। এই পবিত্র রাতে কবর জিয়ারত করাও উত্তম। এই পবিত্র রাতে বাজি পোড়ানোসহ গর্হিত সব ধরনের কার্যকলাপ থেকেও বিরত থাকা উচিত। আল্লাহ আমাদের শবেবরাতে সুন্নাত অনুযায়ী ইবাদতের তৌফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর