১৪১০ খ্রিস্টাব্দে গিয়াসউদ্দীন আযম শাহ মৃত্যুবরণ করেন। গিয়াসউদ্দীন আযম শাহ একজন ন্যায়পরায়ণ, বিদ্বান, রসিক ও রুচিবান শাসক ছিলেন। পিতা ও ভ্রাতাদের হত্যা করার জন্য ইতিহাসে তার চরিত্র কলঙ্কিত হয়ে রয়েছে সত্য; কিন্তু পিতা ও ভ্রাতাদের বিরুদ্ধে তার মনুষ্যত্বহীনতার পশ্চাতে বিমাতার প্ররোচনাই বেশি কাজ করেছিল। মুসলিম শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশ এবং বাংলা সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতার জন্য গিয়াসউদ্দীন আযম শাহ বঙ্গের ইতিহাসে একটি বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে রয়েছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ত্রুটি-বিচ্যুতি ও ব্যর্থতা সত্ত্বেও তিনি বঙ্গের শ্রেষ্ঠ সুলতানদের অন্যতম এবং ইলিয়াস শাহী বংশের শেষ শ্রেষ্ঠ সুলতান ছিলেন। তার সম্বন্ধে ঐতিহাসিক এস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘লোকরঞ্জক ব্যক্তিত্বের দিক দিয়ে তার তুলনা হয় না। তার চরিত্রে নানারকম বৈশিষ্ট্যের সমাবেশ হয়েছিল। এ সুলতানের যেসব কার্যকলাপের বিবরণ পাওয়া যায়, প্রায় প্রতিটির মধ্যে একটি উন্নত বৈচিত্র্যপূর্ণ রুচিবান বিদগ্ধ মনের পরিচয় পাওয়া যায়।’
গিয়াসউদ্দীন আযম শাহের মৃত্যুর পর তার পুত্র সরফউদ্দীন হামযা শাহ সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি দুই বছর রাজত্ব করেন। তার মৃত্যুর পর তার পুত্র বায়েজীদ বাংলার মসনদে বসেন। ইলিয়াস শাহী সুলতানগণ হিন্দুদের প্রতি উদার মনোভাব পোষণ করতেন। তাদের পৃষ্ঠপোষকতার ফলে হিন্দুরা খুব ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠে। এ সময় গণেশ নামের এক হিন্দু জমিদার কর্তৃক বায়েজীদ শাহ ক্ষমতাচ্যুত হন।