বুধবার, ৫ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

অত্যাচারীদের আখেরাতে কঠিন সাজা পেতে হবে

মোহাম্মদ ওমর ফারুক

অত্যাচারীদের আখেরাতে কঠিন সাজা পেতে হবে

ন্যায়ের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকতে বলে ইসলাম। এ ক্ষেত্রে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি আপসহীন। ইসলাম এমন একটি সমাজ বিনির্মাণের তত্ত্ব তুলে ধরেছে যে সমাজে অন্যায় ও অবিচারকে ধিক্কারের চোখে দেখা হয়। যারা অত্যাচারী, নিপীড়নকারী ইহজগতে যেমন তাদের মানুষের অভিশাপ ভোগ করতে হবে তেমনি আখেরাতে আল্লাহর নির্ধারিত কঠিন সাজা পেতে হবে। ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী, আল্লাহ ন্যায়ের উৎসস্থল। আল্লাহর প্রতি যারা আনুগত্য পোষণ করেন তারা ন্যায়ের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ হতে নৈতিকভাবে বাধ্য।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উনাইস (রা.) বলেন : রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমি বলতে শুনেছি, ‘কেয়ামতের দিন আল্লাহর বান্দাদের খালি পায়ে ও বিনা খাতনা অবস্থায় সমবেত করা হবে। এ সময় এত জোরে একটি আওয়াজ ধ্বনিত হবে, যা কাছের ও দূরের সবাই সমানভাবে শুনতে পারবে। ঘোষণা দেওয়া হবে : ‘আমি সূক্ষ্ম প্রতিফল প্রদানকারী রাজাধিরাজ। কোনো জান্নাতির পক্ষে সম্ভব নয়, সে জান্নাতে প্রবেশ করে এবং কোনো জাহান্নামির পক্ষেও সম্ভব নয় সে জাহান্নামে যাবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না মজলুমের প্রতি তাদের জুলুমের প্রতিশোধ না নেব, এমনকি তা যদি একটি চড়-থাপ্পড় অথবা তার চেয়েও ছোট কোনো বিষয় হয়। তোমার পালনকর্তা কারও ওপর (সামান্য পরিমাণও) অত্যাচার করেন না।’ আমরা বললাম : ইয়া রসুলুল্লাহ! তা কীভাবে সম্ভব? আমরা সবাই তো খালি পায়ে নগ্নাবস্থায় থাকব? রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘প্রত্যেকের কৃত পাপ-পুণ্যের বিনিময়ে প্রতিশোধ নেওয়া হবে। তোমাদের পালনকর্তা কারও প্রতি অত্যাচার (বৈষম্য) করবেন না।’ —আহমদ, বোখারি, তাবারানি।

হজরত আবু উমামা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘কেয়ামতের দিন অত্যাচারী যখন পুলসিরাতে আরোহণ করবে, অমনি যাদের ওপর সে অত্যাচার চালিয়েছিল তারা এসে ক্ষতিপূরণ বাবদ তার নেক আমলসমূহ (ভাগ করে) নিয়ে নেবে। তার কাছে পর্যাপ্ত নেক আমল না থাকলে কৃত অত্যাচারের পরিমাণ মজলুমের পাপ তার ঘাড়ে চাপানো হবে। পরিশেষে তাকে জাহান্নামের অতল তলে ফেলে দেওয়া হবে।’ —তাবারানি।

আল্লাহ মানুষকে ক্ষমতা ও প্রভাব প্রতিপত্তি দেন। এ ক্ষমতা ও প্রভাব প্রতিপত্তিকে দায়িত্ব হিসেবে নিতে হবে। এটিকে আল্লাহর দয়া হিসেবে ভাবতে হবে। তার কাছে শোকরিয়া আদায় করতে হবে। যারা আল্লাহর শোকরিয়া আদায়ের বদলে ক্ষমতার দর্প দেখায় ও অত্যাচারী হিসেবে আবির্ভূত হয় তারা পরকালের জন্য দুর্ভাগ্যের অধিকারী।   আল্লাহ সবাইকে অত্যাচারী হওয়ার দুর্ভাগ্য থেকে নিজেকে রক্ষার তৌফিক দান করুন।

     লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর