সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

কী জবাব দেবেন নরেন্দ্র মোদি

সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত

কী জবাব দেবেন নরেন্দ্র মোদি

প্রায় ৯ মাস আগে গত বছর ৮ নভেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মধ্যরাতে ১০০০ ও ৫০০ টাকার নোট বাতিল করে দিয়েছিলেন। তখন তিনি দাবি করেছিলেন— (ক) কালো টাকা উদ্ধার হবে (খ) জাল কারেন্সি নোট উদ্ধার এবং (গ) সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করা। সংক্ষেপে এ তিনটিকে বলা হয় বিএফটি। ৯ মাস বাদে বর্তমান রিজার্ভ ব্যাংকের রিপোর্টে দেখা গেল, নোটবন্দী ছিল একটা বড় ধরনের হঠকারিতা। কোনো কালো টাকা তো উদ্ধার হয়নিই, জাল নোট উদ্ধার হয়েছে মাত্র ৪০ কোটি টাকার। আর সন্ত্রাসবাদ ৯ মাসে ৯ গুণেরও বেশি বেড়ে গেছে। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ নোবেল-জয়ী অমর্ত্য সেন তখনই বলেছিলেন, তলানিতে গিয়ে পৌঁছবে। উত্তরে মোদি উপহাস করে বলেছিলেন, হার্ভার্ড নয়, হার্ড ওয়ার্ক করে আমি কাজ করি। শুধু অমর্ত্য সেনই নন, বিশ্বের বাঘা বাঘা অর্থনীতিবিদ নোটবন্দীর সমালোচনা করেছিলেন, যার পরিণাম ভারতবাসী প্রতিদিন বুঝতে পারছেন। এই ধরনের হঠকারিতায় ভারতের আর্থিক পরিস্থিতি যে পর্যায়ে মোদি-জেটলিরা নিয়ে গেছেন, তা থেকে উঠে আসতে কত সময় লাগবে তা কেউই জানেন না। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৮৫-৯১ সালে বিভিন্ন সময় যে সরকার এসেছিল, তারাই ভারতের ৫০ টন সোনা ইংল্যান্ডের ব্যাংকে বন্ধক রেখে সেই টাকা দিয়ে দেশ চালাচ্ছিলেন। ’৯১ সালে কংগ্রেসের নেতৃত্বে পিভি নরসিমা রাও ও অর্থমন্ত্রী মনমোহন সিং সংস্কার ও বাজার অর্থনীতি চালু করে চার মাসের মধ্যে ইংল্যান্ডের ব্যাংক থেকে সোনা ফিরিয়ে আনেন। বড় অঙ্কের নোট বাজার থেকে নির্বিচারে তুলে নেওয়ার ফলে দেশের অর্থনীতি তছনছ হয়ে যেতে পারে তা আরও একবার বললেন রিজার্ভ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। তিনি বলেছেন, আমি আগেই বলেছিলাম কেন্দ্রীয় সরকারের নোটবন্দীর সিদ্ধান্তে অর্থনীতি তছনছ হয়ে যাবে। নোট বাতিলের সময় তিনি বলেছিলেন, দীর্ঘমেয়াদে এর সুফল মিললেও এখন তার জন্য যে খেসারত দিতে হবে তা ঢের বেশি। তিনি আরও বলেছেন, তিনি এবং রিজার্ভ ব্যাংক আপত্তি করা সত্ত্বেও সরকার জোর করেই নোট-বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

গত সেপ্টেম্বরেই রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নরের পদে ইস্তফা দিয়ে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর কাজে ফিরে যান রাজন। বর্তমানে তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বুথ স্কুল অব বিজনেসের প্রফেসর অব ফিন্যান্স।

রঘুরাম রাজনের একটি বই শিগগিরই প্রকাশিত হতে চলেছে। তাতেও আরও একবার নোট-বাতিল নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা বলেছেন রাজন। ওই বইয়ে আরবিআইয়ের প্রধান থাকাকালীন মোদি সরকারের সঙ্গে তার কথাবার্তার অনেকটাই জানিয়েছেন। ‘আই ডু হোয়াট আই ডু : অন রিফর্মস রেটোরিক অ্যান্ড রিজলভ’ শীর্ষক ওই বইয়ে রাজন লিখেছেন, এ নিয়ে প্রথমবার তিনি মতামত দিয়েছিলেন ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে। উল্লেখ্য, কালো টাকায় রাশ টানতে ও নোট জাল রুখতে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট তুলে নেওয়ার কথা আচমকাই ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আরবিআইয়ের সাম্প্রতিক হিসাবে ধরা পড়েছে, বাতিল নোটের ৯৯ শতাংশই ফিরে এসেছে সরকারের ঘরে। ফলে কালো টাকায় রাশ টানা নিয়ে সরকারের দাবি সত্যি হয়নি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এক সাক্ষাৎকারে রঘুরাম রাজন বলেছেন, মোদি সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে আরবিআই বলেছিল, ভালো প্রস্তুতি ছাড়া এই সিদ্ধান্ত নিলে ঠিক কী ক্ষতি হতে পারে। ৮০ শতাংশের বেশি নোট নাকচ করে যে অর্থনীতিতে তছনছ করে সাধারণ মানুষের, বিশেষ করে দরিদ্র ও ছোট ব্যবসায়ীদের জীবন যে দুর্বিষহ করে তুলতে পারে, সে কথাও রাজন জানিয়েছিলেন। এ ধরনের বিপর্যয় এড়াতে রাজনের পরামর্শ ছিল আগে পর্যাপ্ত পরিমাণে নতুন নোট ছাপিয়ে তার পরই পুরনো নোট বাতিল করা উচিত ছিল।

কেন্দ্রীয় সরকারের নোট-বাতিলের সিদ্ধান্তের পেছনে তার বা রিজার্ভ ব্যাংকের কোনো ভূমিকা ছিল না সে কথাও স্পষ্ট করে বলেছেন রঘুরাম রাজন। তিনি বলেছেন, নোট-বাতিলের পেছনে সরকারের উদ্দেশ্য ভালো হতে পারে, কিন্তু এই পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই বলা সম্ভব নয় যে, নোট-বাতিল আর্থিক দিক থেকে সফল হয়েছে। দীর্ঘ মেয়াদে এর কোনো সুফল পাওয়া যাবে কিনা তা ভবিষ্যৎই বলবে।

একদা দিল্লির মসনদে ছিলেন মহম্মদ বিন তুঘলক। একের পর এক কাণ্ডকারখানায় দেশবাসীর জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছিলেন তিনি। রাতারাতি নিজের মর্জিমাফিক রাজধানী ও সিংহাসন স্থানান্তরিত এবং পুনঃস্থানান্তরিত করে দেশবাসীকে অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টের মধ্যে ফেলেছিলেন। কাণ্ডজ্ঞানহীনতা ও খ্যাপামির জন্য ইতিহাসে ব্যতিক্রমী জায়গা রয়েছে মহম্মদ বিন তুঘলকের। তবে সেটা ইতিহাসের কথা। এতদিন পর আরও একজন তুঘলকি সম্রাটকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। যিনি নোট বাতিল করবেন বলে উঠেপড়ে লেগে গোটা দেশের মানুষকে কার্যত নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছেন। সেই নোট বাতিল ও তার আগে পরে একাধিক সমগোত্রীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে তাকে মহম্মদ বিন তুঘলকের নব্য সংস্করণ হিসেবে অভিহিত করা যায়। গত ৮ নভেম্বর রাতারাতি নোট বাতিল করে দিয়ে তিনি বলেছিলেন এর ফলে দেশের কালো টাকা বাজেয়াপ্ত করা যাবে। কাশ্মীর ও অন্যান্য জায়গায় উগ্রপন্থিদের হাতে টাকা পৌঁছানো আটকানো যাবে। কিন্তু বাস্তবে তার কিছুই হয়নি। উল্টো কালো টাকা উদ্ধার করতে গিয়ে সরকারের ভাঁড়ার থেকে বেরিয়ে গেছে আরও প্রচুর পরিমাণ টাকা। এ ব্যাপারে দেশের শীর্ষ ব্যাংক যে আর্থিক রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, নোট বাতিল করার পরেও ৯৯ শতাংশ পুরনো নোটই আবার সরকারের হাতে চলে এসেছে।

নোট বাতিল নিয়ে নরেন্দ্র মোদি ও অরুণ জেটলি ঢক্কানিনাদের স্বরূপ প্রকাশ করে দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক। দেশের শীর্ষ ব্যাংকের রিপোর্টে বলা হয়েছে, যে উদ্দেশে নোট বাতিল করতে আদাজল খেয়ে লেগেছিলেন অরুণ জেটলিরা, তার কিছুই পূরণ হয়নি। কালো টাকা বরবাদই হয়নি। ব্যাংক ব্যবস্থাতেই ফিরে এসেছে বাতিল হওয়া নোটের ৯৯ শতাংশই। দেশের বিরোধী দলগুলো এবং অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন, তাহলে নোট বাতিল করে লাভ কী হলো। এতদিন ধরে মানুষকে দিনের পর দিন লাইনে দাঁড় করিয়ে হয়রান করে কত কালো টাকা উদ্ধার হলো। নোট বাতিল করতে গিয়ে মানুষের রুটি-রুজিতে টান পড়েছে, ব্যাংকে এবং স্বল্প সঞ্চয়ে সুদের হার কমেছে। এমনকি নোট বদলানোর লাইনে দাঁড়িয়ে প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিক মানুষ। তার দায় কে নেবে?

গত সপ্তাহে ২০১৬-১৭ সালের আর্থিক রিপোর্ট পেশ করেছে ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক। তারা জানিয়েছেন, ৫০০ ও ১০০০-এর বাতিল নোটের মূল্য ছিল ১৫.২৮ লাখ কোটি টাকা। তার মধ্যে ব্যাংকে জমা না পড়া নোট ১৬ হাজার ৫০ কোটি। অর্থাৎ মোট অঙ্কের মাত্র এক শতাংশ। দেশের সমস্ত প্রান্ত থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নোট বাতিলের প্রয়োজন তাহলে হয়ে পড়েছিল কেন? কেনইবা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং অর্থমন্ত্রী নোট বাতিল করতে গিয়ে যুদ্ধকালীন তৎপরতা দেখিয়েছিলেন?

কালো টাকা ধরতে নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। গত বছর ৮ নভেম্বর আচমকা ভাষণে জানিয়েছিলেন, ওই দিন রাত ১২টার পর ৫০০ আর ১০০০ টাকার নোটের কোনো মূল্য থাকছে না। মোদিদের হিসাব ছিল যে কর ফাঁকি বা বেআইনি লেনদেনে জমা টাকা সরকারি স্তরে টাকার হিসাবে জানানো হয় না। তা জমা পড়বে না। অর্থাৎ জমা না পড়া টাকাই কালো টাকা হিসেবে গণ্য হবে। সেই হিসাব মাথায় নিয়েই ভারতের জনজীবন কার্যত বিকল করে দিয়েছিলেন মোদি-জেটলি জুটি। এখন বিরোধীরা অভিযোগ করছেন, কালো টাকা বরবাদির অংশ নগদের মাত্র এক শতাংশ। নগদে কালো টাকা সামান্যই থাকে। তবু অতীতের যে কোনো হিসাবে তা এত কম নয়। ফলে সংশ্লিষ্ট সব মহলই বলছে নোট বাতিলের ফলে আসলে বহু কালো টাকা সাদা করা হয়েছে।

সিপিআই(এম)-এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, এমন দেশবিরোধী কাজের জন্য মানুষ কখনো নরেন্দ্র মোদিকে ক্ষমা করবে না। গরিব, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছিলেন এই সিদ্ধান্তে। ব্যাংকের দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে ১০০-এরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিলেন। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেছেন, নোটবন্দীতে রিজার্ভ ব্যাংকের ১৬ হাজার কোটি টাকা লাভ হয়েছে। আর নতুন নোট বাবদ সরকারের খরচ হয়েছে ২১ হাজার কোটি টাকা। যে অর্থনীতিবিদরা প্রধানমন্ত্রীকে নোট বাতিলের পরামর্শ দিয়েছিলেন, তাদের নোবেল পুরস্কার দেওয়া উচিত। রিজার্ভ ব্যাংকের রিপোর্ট সামনে আসার পর নরেন্দ্র মোদি সরকারের সমালোচনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও।

রিজার্ভ ব্যাংকের এই রিপোর্ট একই সঙ্গে ফাঁস করে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সীমাহীন মিথ্যাচার। স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি দাবি করেছিলেন উদ্ধার হওয়া কালো টাকার মূল্য তিন লাখ কোটি টাকা। চিদম্বরম প্রশ্ন তুলেছেন, সব টাকাই তো সরকারের ঘরে ফিরে এলো। তাহলে নোট বাতিল কি কালো টাকা সাদা করার প্রকল্প ছিল। রিজার্ভ ব্যাংকের রিপোর্ট কি কোনো দুর্নীতির ইঙ্গিত দিচ্ছে?

রিজার্ভ ব্যাংকের হিসাব— ভারতে এক হাজার টাকার নোট চালু ছিল ৬৮৫.৫ কোটি। তার মধ্যে ৮.৯ কোটি সংখ্যার নোট জমা পড়েনি। ৫০০-এর নোট ছিল ১৭১৬.৫ কোটি। সব মিলিয়ে এই দুই নোটের মূল্য ছিল ১৫.৪৪ লাখ কোটি টাকা। নোট বাতিলের পরে ব্যাংকে জমা পড়ে গিয়েছে ১৫.২৮ লাখ কোটি টাকা মূল্যের নোট। এই বিপুল পরিমাণ নোট যে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ফিরে আসবে সেই অনুমান বিশেষজ্ঞ মহলে ছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৈরি বিশেষ দলও বলেছিল বেআইনি সম্পদের সামান্যই নগদে থাকে। বেশির ভাগটাই জমি-বাড়ি-গহনা বা অন্য সম্পত্তিতে রূপান্তরিত করে ফেলা হয়। উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে জমা পড়া নোটের হিসাব দিচ্ছিল না কেন্দ্রীয় সরকার ও রিজার্ভ ব্যাংক। রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর উর্জিত প্যাটেলও সংসদীয় কমিটির বৈঠকে হাজিরায় নিশ্চুপই ছিলেন।

সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি প্রশ্ন তুলেছেন, নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত কে নিয়েছিল? প্রধানমন্ত্রী নিজেই? সে কারণেই কি তৎকালীন গভর্নর রঘুরাম রাজনকে সরে যেতে হয়েছিল। রাজ্যসভায় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছিলেন, সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাংক। অথচ সংসদীয় কমিটির কাছে রিজার্ভ ব্যাংকের প্রধান বলে গিয়েছিলেন শীর্ষ ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নেয়নি। সরকারের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দেওয়া হয়েছিল, তা গ্রহণও করা হয়েছিল। তাহলে ওই নোটিসেরই বা কী হবে? এসব প্রশ্নের কী জবাব দেবেন নরেন্দ্র মোদি?

ইয়েচুরি বলেন, নোট বদলানোর লাইনে দাঁড়িয়ে শতাধিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল। তার দায় কে নেবে? একজনকেও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি কেন? এসব মৃত্যুর জন্য এফআইআর দায়ের করা হয়েছে কিনা তাও বোঝা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ভুটান, নেপাল ও সমবায় ব্যাংকগুলো থেকে ফেরত আসা টাকা জড়ো করলে ১০০ শতাংশের বেশি টাকা সরকারের ঘরে ঢুকেছে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে এ হলো বেআইনি টাকা বৈধ করার প্রকল্পই ছিল।

ইয়েচুরির আরও প্রশ্ন— নোট বাতিলের ঠিক আগে পশ্চিমবঙ্গসহ অন্যত্র বিজেপির অ্যাকাউন্টে বিপুল অঙ্কের নগদ জমা পড়েছিল। একে স্বাধীন ভারতের বৃহত্তম আর্থিক কেলেঙ্কারি বলা হবে না কেন? এটাই কি প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নমুনা? ৮ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে ডিজিটাল লেনদেনের কথা কোথাও ছিল না। কিন্তু নোট বাতিল প্রক্রিয়ার মধ্যেই কয়েকটি বাছাই করা বেসরকারি সংস্থাকে ডিজিটাল অভিযানের নামে সাহায্য করা হলো। প্রধানমন্ত্রী নিজে বেসরকারি সংস্থা পেটিএমের বিজ্ঞাপন করে বসলেন। কেন? রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা ঋণ নিয়ে ফেরত দেয়নি করপোরেটের একটা বড় অংশ। একটি হিসাবে সুদসহ তা ১১ লাখ কোটি টাকা। এই অনাদায়ী ঋণের ফলে বিপর্যয়ের মুখে পড়া ব্যাংকগুলোকে বাঁচাতেই কি এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল? বিজেপির শ্রমিক সংগঠনই জানিয়েছে, নোট বদলের ফলে ৫০ লাখ লোকের চাকরি গেছে।

লেখক : ভারতীয় প্রবীণ সাংবাদিক।

 

সর্বশেষ খবর