শিরোনাম
সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিজিএমইএ ভবন ভাঙা হয়নি

আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে

সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও হাতিরঝিলে অবৈধভাবে নির্মিত বিজিএমইএ ভবন ভাঙা হয়নি নির্দিষ্ট সময়সীমায়। আপিল বিভাগের দেওয়া এ সংক্রান্ত রায়ে ছয় মাসের মধ্যে ভবন ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং গতকাল ছিল সে সময়সীমার শেষ দিন। বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ অবশ্য নতুন ভবন নির্মাণে সময় লাগবে এ যুক্তি দেখিয়ে অবৈধভাবে নির্মিত ভবন ভাঙার জন্য এক বছরের সময় চেয়েছে। স্মর্তব্য, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৬ সালে ভবনটি উদ্বোধন করা হয়। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর অভিযোগ ছিল, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না নিয়ে এবং উন্মুক্ত স্থান ও প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ লঙ্ঘন করে সোনারগাঁও হোটেলের পাশে বেগুনবাড়ী খালের একাংশ ভরাট করে ওই ভবন তোলা হয়েছে। ভবন নির্মাণে রাজউক অনুমোদিত নকশাও অনুসরণ করা হয়নি। বিষয়টি নজরে এলে ২০১০ সালের ৩ অক্টোবর হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করে। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিজিএমইএ ভবনকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাই কোর্ট। পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হিসেবে বিজিএমইএর আইনের প্রতি আরও বেশি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত ছিল। তারা তা না করে আইনকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছে। বিজিএমইএ ভবনটি সৌন্দর্যমণ্ডিত হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যান্সারের মতো। এ ধ্বংসাত্মক ভবন অচিরেই বিনষ্ট না করা হলে এটি শুধু হাতিরঝিল প্রকল্পই নয়, পুরো ঢাকা শহরকে সংক্রমিত করবে। হাতিরঝিলে প্রাকৃতিক জলাশয়ের ওপর অবৈধভাবে ভবন নির্মাণ করে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ যে আইনের লঙ্ঘন করেছে তা আদালতের রায়ে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে রিভিউ করার পরও তা খারিজ হয়ে যায়। এরপর আর আইনি লড়াইয়ের কোনো সুযোগ না থাকলেও ভবন ভাঙার নির্দেশ পালন না করে তা রক্ষার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করা নিঃসন্দেহে এক নজিরবিহীন ঘটনা। দেশের ব্যবসায়ীদের একটি নেতৃত্বস্থানীয় সংগঠন আইন ও আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে এমনটিই কাঙ্ক্ষিত। অবৈধভাবে বিজিএমইএ ভবন নির্মাণে শ্রদ্ধার যেমন ব্যত্যয় ঘটেছে তেমন আদালতের রায় এড়িয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তারা যে বাজে নজির স্থাপন করেছেন তা অপ্রত্যাশিত। আইনের শাসনের স্বার্থেই এ ধরনের দুর্বিনীত আচরণের অবসান হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর