তিন মাসের মধ্যে বেল্ট লোডারের আঘাতে আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশ বিমানের একটি বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ। তিন মাস আগে গত জুলাইয়ে বেল্ট লোডারের আঘাতে বাংলাদেশ বিমানের একটি ৭৭৭ উড়োজাহাজ অচল হলেও রহস্যজনক কারণে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সম্ভবত এ কারণেই যা ইচ্ছা তাই করাকে বেল্ট লোডারের চালকরা তাদের অধিকার হিসেবে ভেবে বসেছিলেন। ফলশ্রুতিতে গত মঙ্গলবার ঘটেছে একই ধরনের দুর্ঘটনা। বেলা ১১টায় বিমানের ঢাকা-নেপাল ফ্লাইটের বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজটি পূর্ণ আসন ভর্তি যাত্রী নিয়ে উড্ডয়নের অপেক্ষায় ছিল। ঠিক সেই মুহূর্তে লাগেজ ডোর বন্ধ করার জন্য বেল্ট লোডার ঘুরিয়ে সামনে আনার সময় উড়োজাহাজের ইঞ্জিনে সজোরে আঘাত লাগে। এতে মুহূর্তেই ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। বিকট শব্দে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পাইলট ককপিটে বসে বিষয়টি বুঝতে পেরে পাওয়ার অফ করে দেন। এ সময় যাত্রীদের জানানো হয়, ফ্লাইটটি নেপাল যাচ্ছে না। এরপর যাত্রীদের আনলোড করে অন্য একটি বোয়িংয়ে উঠানো হয়। আড়াই ঘণ্টা বিলম্বে ফ্লাইটটি নেপালের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যায়। উড়োজাহাজের লাগেজ ডোর বন্ধ করার সময় জোরে বেল্ট লোডার ঘুরানোর কারণে ইঞ্জিনে আঘাত লাগে। এতে ইঞ্জিনের অনেকগুলো ব্লেড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে ক্ষতিগ্রস্ত উড়োজাহাজটিকে নিয়ে যাওয়া হয় হ্যাঙ্গারে। বিমানের কর্তাব্যক্তিদের অজুহাত এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই পারে। এর আগেও গত জুলাইয়ে অনুরূপ ঘটনায় বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে ঘটনা নিয়ে কোনো হৈচৈ হয়নি। মঙ্গলবার বেল্ট লোডার ঘুরানোর সময় যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করলে দুর্ঘটনা যে এড়ানো যেত তা সহজেই অনুমেয়। কিন্তু দুর্ঘটনার জন্য কাউকে জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে না হওয়ায় বেল্ট লোডার চালক সতর্ক হওয়ার কোনো প্রয়োজনই মনে করেনি। বিমানের ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি থাকায় এটি সরকারি অর্থ অপচয়ের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। জন্ম থেকেই লোকশানের ঘানি টানছে জাতীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠানটি। মঙ্গলবারের দুর্ঘটনার জন্য তাত্ক্ষণিকভাবে বেল্ট লোডারের চালককে বরখাস্ত করা হয়েছে।
আমরা আশা করব এ দুর্ঘটনার জন্য আর কারোর দায় থাকলে তাদেরও জবাবদিহিতার মধ্যে আনা হবে।