আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন— হে মুমিনগণ! আমি যা তোমাদেরকে দিয়েছি তা থেকে তোমরা দান কর; সেদিন আসার পূর্বেই যেদিন বেচাকেনা, কোনো বন্ধুত্ব এবং কোনো সুপারিশ থাকবে না। (সূরা আল বাকারা : ২৫৪)
যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায় দান করে, যারা ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করে এবং যারা মানুষকে ক্ষমা করে এসব নেককার লোককেই আল্লাহ ভালোবাসেন। (সূরা আলে-ইমরান : ১৩৪)
রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উম্মতদের একে অপরের প্রতি দয়ালু হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। আল্লাহ যাদের সম্পদ দিয়েছেন তারা যাতে আল্লাহর দেওয়া সম্পদ শুধু নিজে ভোগ না করে সমাজের অভাবী ও দুঃখী মানুষের কষ্ট লাঘবেও ব্যয় করে সে ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন। তিরমিযি শরিফের হাদিসে সাহাবি হজরত আবু কাবশা আনমারী (রা.)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, তিনি বলেছেন আমি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি তিনি বলেছেন, তিনটি বিষয়ের ওপর তিনি কসম খেতে পারেন। প্রথমত, দান-খয়রাত দ্বারা কোনো বান্দার সম্পদ হ্রাস পায় না। (অর্থাৎ আল্লাহর পথে সম্পদ ব্যয় করার কারণে কেউ কোনো দিন গরিব ও নিঃস্ব হয়ে যায় না, বরং তার সম্পদে আরও বরকত হয় এবং যার পথে সে দান-খয়রাত করে সেই মহান সত্তা তাঁর অসীম ভাণ্ডার থেকে তাকে আরও বেশি দিয়ে থাকেন)। দ্বিতীয়ত, কোনো বান্দা অত্যাচারিত হয়ে যদি এর ওপর সরব করে, তাহলে আল্লাহতায়ালা এর বিনিময়ে তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। (অর্থাৎ আল্লাহতায়ালা এ বিধান নির্ধারণ করে দিয়েছেন যে, যখন আল্লাহর কোনো বান্দার ওপর অন্যায়ভাবে জুলুম-নির্যাতন করা হয় আর সে সবর করে যায়, তখন আল্লাহতায়ালা এর বিনিময়ে দুনিয়াতেও তার সম্মান ও মর্যাদা বাড়িয়ে দেন।) তৃতীয়ত, কোনো বান্দা যখন ভিক্ষাবৃত্তির দ্বার উন্মুক্ত করে, তখন আল্লাহতায়ালা তার ওপর অভাবের দরজা খুলে দেন। (অর্থাৎ যে ব্যক্তি মানুষের সামনে ভিক্ষার হাত প্রসারিত করার পেশা অবলম্বন করবে, আল্লাহতায়ালার ফায়সালা অনুযায়ী দারিদ্র্য ও অভাব তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে। এ তিনটি বিষয়ে আল্লাহর এমন অনড় সিদ্ধান্ত যে, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমি এগুলোর ওপর কসম করতে পারি। উপরোক্ত হাদিসের আলোকে আল্লাহ আমাদের সবাইকে চলার তওফিক দান করুন।লেখক : ইসলামী গবেষক।