মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলা

১১ আসামির কারাদণ্ড অভিনন্দনযোগ্য

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের পৃথক দুই মামলায় বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার আবদুর রশীদসহ ফ্রিডম পার্টির ১১ নেতা-কর্মীকে কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছে ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত। মহানগর দায়রা জজ মো. জাহিদুল কবির হত্যাচেষ্টা মামলায় ১১ আসামিকে ২০ বছর করে এবং বিস্ফোরক মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। ১৯৮৯ সালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ হাসিনার বাড়িতে গুলি ও বোমা হামলার ঘটনায় এ মামলা করা হয়। এ মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনের দুই ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। বিচারে সাজাপ্রাপ্ত ১১ আসামি হলেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার আবদুর রশীদ, মো. জাফর আহম্মদ, হুমায়ুন কবির ওরফে হুমায়ুন, মিজানুর রহমান, শাজাহান বালু, গাজী ইমাম হোসেন, খন্দকার আমিরুল ইসলাম কাজল, গোলাম সারোয়ার ওরফে মামুন, ফ্রিডম সোহেল, সৈয়দ নাজমুল মাকসুদ মুরাদ ও জর্জ মিয়া। সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে রশীদ, জাফর ও হুমায়ুন কবির ওরফে হুমায়ুন পলাতক। শাজাহান বালু জামিনে ছিলেন। তার অনুপস্থিতিতেই রায় ঘোষণা করে আদালত। জামিনে থাকা মিজান, ইমাম হোসেন, কাজল রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। কারাগারে থাকা মামুন, সোহেল, মুরাদ ও জর্জ মিয়াকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হত্যাচেষ্টা ছিল তৎকালীন সামরিক স্বৈরশাসনামলের এক কলঙ্কিত ঘটনা। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের নেতৃত্বাধীন ফ্রিডম পার্টিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে অনুমোদন দেয় এরশাদ সরকার। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তাদের লেলিয়ে দেওয়া হয় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায়। ১৯৮৯ সালে বঙ্গবন্ধু ভবনে ফ্রিডম পার্টির নেতৃত্বে হামলা চালানোর উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গবন্ধুকন্যাকে হত্যা করা। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনীতি স্তব্ধ করা। এ হামলার পর বঙ্গবন্ধু ভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা একজন পুলিশ কনস্টেবল এ ব্যাপারে জিডি করেন পরে তা মামলায় রূপান্তর হয়। লজ্জাজনক বিষয় হলো, এরশাদ আমলে মামলার তদন্তে হত্যাচেষ্টাকারীদের রেহাই দিতে আদালতে পুলিশ যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে তাতে বলা হয়, অভিযোগের প্রমাণ তদন্তে পাওয়া যায়নি। পরে ১৯৯৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়। দীর্ঘ ২৭ বছর পর হত্যাচেষ্টা মামলার আসামিদের জন্য ঘোষণা করা হলো শাস্তির রায়। অভিনন্দনযোগ্য এ রায় হত্যা ষড়যন্ত্রের অপরাধ রোধে অবদান রাখবে— এমনটিই কাম্য।

 

 

সর্বশেষ খবর