মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঢাকা মেডিকেলে হামলা

দোষীদের আইনের আওতায় আনুন

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার-নার্সদের ওপর রোগীর স্বজনদের হামলার ঘটনা নিন্দনীয় ও দুর্ভাগ্যজনক। হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে হূদরোগে আক্রান্ত এক রোগী মারা যান রবিবার দুপুরে। ডাক্তারদের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে— এ অভিযোগে তার স্বজনরা দেশের বৃহত্তম এই হাসপাতালের ডাক্তার ও রোগীদের ওপর চড়াও হন। তারা হাসপাতালে ভাঙচুরও চালান। কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা ডাক্তার ও নার্সদের রক্ষায় এগিয়ে এলে তাদের ওপরও চড়াও হন হামলাকারীরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, শনিবার রাতে পুরান ঢাকার নওশাদ নামে এক ব্যক্তি হূদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হন। তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। রবিবার দুপুরে তিনি মারা যান। মৃতের স্ত্রী আজমেরি আহমেদের অভিযোগ, ভুল চিকিৎসায় তার স্বামী মারা গেছেন। এরপর তার স্বজনরা ভবনটির তৃতীয় তলায় সিসিইউতে দায়িত্বরত চিকিৎসক ও নার্সদের ওপর চড়াও হন এবং তাদের মারধর করেন। হামলাকারীদের তাণ্ডবের পর হাসপাতালের সব ভবনের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় বিপাকে পড়েন চিকিৎসা নিতে আসা বহু রোগী ও তাদের স্বজনরা। পরিস্থিতি শান্ত হলে তিন ঘণ্টা পর বিকাল ৫টার দিকে জরুরি বিভাগ খুলে দেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন রোগীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যদের ওপর রোগীর স্বজনদের হামলা ও ভাঙচুর নিঃসন্দেহে গর্হিত ও নিন্দনীয় ঘটনা। রোগীর মৃত্যুর পেছনে চিকিৎসকদের অবহেলা দায়ী হলে আইনগত পদক্ষেপ না নিয়ে রোগীর স্বজনরা যেভাবে হাসপাতালে তাণ্ডব সৃষ্টি করেছেন তা অপরাধের নামান্তর। দেশের আইন কাউকে এ ধরনের তাণ্ডব চালানোর অধিকার দেয়নি এবং এমন আচরণ সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা দেশের হাসপাতালগুলোতে সেবার পরিবেশ গড়ে উঠুক এমনটিই দেখতে চাই। চিকিৎসাসেবার ক্ষেত্রে যেসব চিকিৎসকের গাফিলতি রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ারও পক্ষে। কিন্তু অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ার আগে যারা আইন হাতে নেন তাদের বাড়াবাড়িও কোনোভাবে মেনে নেওয়া উচিত নয়। আমরা আশা করব হাসপাতালে হামলার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে প্রাপ্য শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। ভবিষ্যতে কেউ যাতে এ ধরনের কাণ্ডজ্ঞানহীনতার পুনরাবৃত্তি না ঘটাতে পারে তা নিশ্চিত করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর