মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

সমাজতন্ত্রের বিকল্প সমাজতন্ত্রই

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

সমাজতন্ত্রের বিকল্প সমাজতন্ত্রই

প্রশ্ন থাকে যে, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনটা ঘটল কেন? হিটলার পারেননি, হেরে গেছেন; পুঁজিবাদীদের অবরোধ কাজে দেয়নি; দুর্ভিক্ষ, গৃহযুদ্ধ, অন্তর্ঘাত, হত্যা-প্রচেষ্টা, অনেক কিছুই চলেছে। মেনশেভিকরা বিপ্লবকে মেনে নেয়নি। সোস্যালিস্ট রেভলিউশনারিরাও বিরোধিতা করেছেন। বিপ্লবের কয়েক মাস পরই লেনিনের মাথায় পিস্তল ধরে গুলি করেছিল যে তরুণী সে ছিল ওই দলেরই সদস্য। ট্রাস্টি ছিলেন মনশেভিকদের দলে; বিপ্লবে লেনিনের নেতৃত্বকে মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন, কিন্তু স্ট্যালিনের সময় চক্রান্তই শুরু করেছিলেন। সবকিছু সামলে সাত দশক ধরে দাপট ও গৌরবের সঙ্গে টিকে ছিল যে সোভিয়েত ইউনিয়ন সে কেন ওভাবে, প্রায় নিঃশব্দে পড়ে গেল? অনেক কারণ নিশ্চয়ই আছে। মূল কারণটা রয়েছে ওই শ্রেণিতত্ত্বেই।

ভিতরে ভিতরে, গোপনে গোপনে, সুবিধাভোগী একটি শ্রেণি গড়ে উঠেছিল। এই শ্রেণিটির ভিত্তি যে ব্যক্তিগত সম্পত্তি ছিল তা নয়, ব্যক্তিগত সম্পত্তি ব্যবস্থা তো অবলুপ্তই করে দেওয়া হয়েছিল ওই দেশে। ভিত্তিটা ছিল আমলাতান্ত্রিক ক্ষমতা। রুশ বিপ্লবের সময়ই পার্টি আমলাতন্ত্রের বিকাশ ঘটানোর আশঙ্কাটা দেখা দিয়েছিল। লেনিনের সহযোদ্ধা ও সমবয়সী, অত্যন্ত দৃঢ় অঙ্গীকার ও জ্ঞানে-সমৃদ্ধ রোজা লুক্সেমবার্গ এ নিয়ে উদ্বেগে ছিলেন। সে কথা তিনি বলেছেনও। বলশেভিক পার্টি শৃঙ্খলাবদ্ধ; শৃঙ্খলা প্রয়োজন, কিন্তু শৃঙ্খলা যাতে স্বতঃস্ফূর্ততাকে রুদ্ধ না করে দেয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকার আবশ্যকতার কথা তিনি বলেছিলেন। বিপ্লবের সময় তিনি কারাগারে; তার পরে বের হতে পেরেছিলেন, কিন্তু ১৯১৯-এর জানুয়ারিতেই জার্মানির ফ্যাসিস্টরা তাকে হত্যা করে। জীবিত থাকলে পার্টি আমলাতন্ত্রের বিষয়ে লেনিনকে আরও পরামর্শ দিতে পারতেন।

বিপ্লবের পরই চারদিক থেকে নানাবিধ ঝড়ঝাপটা বিপদ-আপদ এসে হাজির হয়, সেগুলোর মোকাবিলায় বলশেভিক পার্টি যে বিস্ময়কর সাফল্যের পরিচয় দিয়েছিল তার অভাব ঘটলে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠার অল্প পরই সশব্দে ভেঙে পড়ত। কিন্তু সাফল্যের আড়ালে পার্টির অভ্যন্তরে যে আমলাতন্ত্র গড়ে উঠছিল, বিপদটা লুকিয়ে ছিল সেখানেই। লেনিনের মৃত্যুর পর স্ট্যালিনের সময় আমলাতন্ত্রের শক্তি আরও বৃদ্ধি পায়। ট্রটস্কিকে নির্বাসিত করার প্রয়োজনে ও প্রক্রিয়াতে পার্টিতে বিশুদ্ধকরণ দরকার হয়ে পড়ে। কাজটা যাদের করতে হয়েছিল তারা শক্তিশালী হয়ে ওঠে। স্ট্যালিনকে তারা ঘিরে রেখেছিল, স্ট্যালিনের মৃত্যুর পর রাষ্ট্রক্ষমতা তাদের হাতে চলে যায় এবং আমলাতন্ত্রীদের স্বভাব অনুযায়ী তারা পুঁজিবাদের দিকে রওনা দেয়। আমলাতন্ত্র সমাজতন্ত্রবিরোধী তো বটেই, গণতন্ত্রবিরোধীও। লেনিন চেয়েছিলেন গণতান্ত্রিক-কেন্দ্রিকতা, স্ট্যালিনের মৃত্যুর পরে তা পরিণত হয়েছিল আমলাতান্ত্রিক-কেন্দ্রিকতায়। পার্টি আমলারা কাজ করেছেন আদর্শবাদিতার জোর নিয়ে; অন্য জোরের চেয়ে ওটির ক্ষমতা যে অধিক তার সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে।

আমলাতন্ত্রের পক্ষে পুঁজিবাদী হওয়ার একাধিক কারণ ছিল। আমলারা পুঁজিবাদী বিশ্বের সংস্পর্শে এসেছেন; ওই বিশ্বের জৌলুস ও ভোগবাদিতা তাদের ওপর প্রভাব ফেলেছে, তাদের হীনমন্য করে তুলেছে। সেই সঙ্গে এই শ্রেণি আবার আকৃষ্ট হয়েছে ব্যক্তিগত সম্পত্তির দিকে। রাশিয়ার চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ ব্যক্তিগত সম্পত্তির প্রতি মানুষের আকর্ষণকে স্বভাবগত বলেছেন। সেটা খুবই সত্য কথা। মানুষ সামাজিক প্রাণী ঠিকই, কিন্তু সে আবার বিশুদ্ধ প্রাণীও বটে। ওই প্রাণীটি নিজের সুখ ও নিরাপত্তার কথা ভাবে, ভাবে তার সন্তান-সন্ততির ভবিষ্যতের কথাও। রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘সাধারণ মানুষের পক্ষে আপন সম্পত্তি তার আপন ব্যক্তিস্বরূপের ভাষা— সেটা হারালে সে বোবা হয়ে যায়।’ কমিউনিস্ট ইশতেহারে এর সুন্দর জবাব আছে; বলা হয়েছে যে সাধারণ মানুষের তো সম্পত্তিই নেই, সে আবার হারাবেটা কী? তা সম্পত্তি নেই বটে, কিন্তু সম্পত্তিতে লোভটা তো আছে। লোভটা জেগে ওঠে ঈর্ষায়, অনুকরণে, সর্বোপরি নিরাপত্তাবোধের অভাবে। সোভিয়েত ইউনিয়নে ব্যক্তিগত সম্পত্তি ছিল না ঠিকই, কিন্তু বাইরের বিশ্বে সম্পত্তিওয়ালাদের ভোগবাদী উজ্জ্বলতার খবর ভিতরের মানুষদের চঞ্চল করেছে। বিশেষ করে পার্টি আমলাদের। তারা ভেবেছে তারা যে ক্ষমতা আজ ভোগ করছে তাকে স্থায়ী করলে ভালো হয়। তারা যখন থাকবে না তখন তাদের সন্তানরা সুযোগ-সুবিধাগুলো থেকে বঞ্চিত হবে কেন? ফলে শ্রেণি গঠনের পক্ষে সুবিধা হয়েছে। এর থেকে মুক্তির জন্য দরকার ছিল সমাজতান্ত্রিক সংস্কৃতির অব্যাহত চর্চা। সে-চর্চা চলছিলও, কিন্তু শ্রেণি গঠনের চাপে তা শক্তি হারিয়েছে, দুর্বল হয়েছে। এই বিপদটার খবর মাও সে তুং রাখতেন, যেজন্য তিনি তার দেশে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। ওই বিপ্লবের প্রধান লক্ষ্য ছিল পার্টি-আমলাতন্ত্রকে ভেঙে দিয়ে আবার জনগণের কাছে চলে যাওয়া। পর্যাপ্ত সময় পাননি, তার আগেই তিনি চলে গেছেন। সাংস্কৃতিক বিপ্লবের বিরোধীরা ক্ষমতায় রয়ে গেছে এবং তারা সোভিয়েত আমলাতন্ত্রের মতোই রাষ্ট্রকে পুঁজিবাদের অভিমুখে পরিচালনা করে ইতিমধ্যেই গন্তব্যে পৌঁছে গেছেন। রবীন্দ্রনাথের ধারণা ছিল ‘ব্যষ্টিবর্জিত সমষ্টির অবাস্তবতা কখনই মানুষ চিরদিন সইবে না।’ রাশিয়ার চিঠিতে যে কথা তিনি পরিষ্কার করে বলেছেন। সমাজতন্ত্র কিন্তু ব্যষ্টিবর্জিত সমষ্টিব্যবস্থা কায়েম করে না, বরং ব্যষ্টিকে রক্ষা করার জন্য সমষ্টিকে নিয়ে আসে। উপমা দিয়ে বলা যায় মাছের যেমন পানির দরকার হয় বাঁচার জন্য; ব্যক্তিরও তেমনি সমষ্টিকে চাই, বাঁচার প্রয়োজনে। পুঁজিবাদই বরং অস্বাভাবিকতা তৈরি করে, ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে আসে সমষ্টির কাছ থেকে; তাকে একাকী, বিচ্ছিন্ন ও ভোগবাদী করে তোলে। মাছ দেখে নদীর পানিতে কোনো প্রবাহ নেই, নদী যাচ্ছে শুকিয়ে। পুঁজিবাদের মনুষ্যবিদ্বেষী অস্বাভাবিকতাকে ঢাকবার জন্য তার মুরব্বিরা নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে; ঘুষ দেয়, ছাড় দেয়, আপস করে, যুদ্ধ বাধায়, নানাবিধ সংঘর্ষ তৈরি করে। এখনো করছে। সমানে। পুঁজিবাদের এখন শেষ দশা। আত্মরক্ষায় তার পদক্ষেপগুলো তাই বীভৎস আকার ধারণ করেছে।

সোভিয়েত পতন তো ঘটেছে। প্রশ্ন ওঠে এই পতনকে কীভাবে দেখব? বলব কি সমাজতন্ত্রের পতন ঘটেছে? যেমনটা পুঁজিবাদীরা বলছে। তারা প্রচার করছে পুঁজিবাদ চূড়ান্তভাবে জয়ী হয়েছে, ফলে ইতিহাস পৌঁছে গেছে তার গন্তব্যে। এ দুই দাবির কোনোটিই সত্য নয়। পুঁজিবাদের জয়টা সাময়িক; সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েতের পতনও একটি রাষ্ট্রের পতন বটে, সমাজতন্ত্রের পতন নয়। আর ইতিহাস কখনো থেমে থাকে না, সে এগোয়। এবং এগোবেই। পুঁজিবাদের সঙ্গে সমাজতন্ত্রের লড়াইটা চলবেই। পুঁজিবাদের জয়টা আসলে একটি খণ্ডযুদ্ধে সমাজতন্ত্রের সাময়িক পরাজয় মাত্র। মূল যুদ্ধ অব্যাহত আছে। পুঁজিবাদ যত দিন টিকে আছে সমাজতন্ত্র তত দিন অবশ্যই থাকবে— আদর্শ হিসেবে, স্বপ্ন হিসেবে, রূপায়িত বাস্তবতা হিসেবেও। কারণ পুঁজিবাদই সমাজতন্ত্রের আবশ্যকতা সৃষ্টি করেছে, উল্টোটা ঘটেনি। লড়াইটা চলবে, কারণ পুঁজিবাদ ইতিমধ্যেই মানবসভ্যতার নিকৃষ্টতম শত্রু হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে; তার আবরণগুলো খুলে গেছে; সে বর্ণবাদ, ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা, জাতিবিদ্বেষ ইত্যাদির দুর্গে ঢুকে আত্মরক্ষার চেষ্টা করছে। নানা ধরনের যুদ্ধ বাধাচ্ছে। রণোন্মাদনা তৈরি করছে, যাতে অস্ত্র ব্যবসায় সুবিধা হয় এবং সাধারণ মানুষকে তাদের দুর্দশা সম্পর্কে অসচেতন করে রাখা যায়। এসব কৌশল ব্যর্থ হচ্ছে এবং ব্যর্থ হতেই থাকবে। ইতিমধ্যে পুঁজিবাদ ফ্যাসিবাদের রূপ নিয়েছে; এবং তার ফ্যাসিবাদী থাবা সমাজের সর্বত্র বিস্তৃত করে ফেলেছে। সহিংসতা, সংঘর্ষ, নির্যাতন, কণ্ঠরোধ এখন যত্রতত্র এবং সার্বক্ষণিক। গৃহযুদ্ধ এখন ঘরে ঘরে। এ ব্যবস্থা মানুষ মানবে না। একে ভাঙবেই।

কত যুগ আগে, কোরীয় যুবকটি রবীন্দ্রনাথকে বলেছিল তাদের আশার কথা। বলেছিল দ্বন্দ্ব চলছে; কারণ মানুষ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে, শাসক ও শাসিতে, শোষক ও শোষিতে। সে জানিয়েছে, ‘ধনিকেরা এক হতে পারবে না। স্বার্থের দুর্লঙ্ঘ্য প্রাচীর আছে, আমরা মিলিত হতে পারব। আজ দুঃখদৈন্যেই আমরা মিলিত হব, আর ধনের দ্বারাই ধনী হবে বিচ্ছিন্ন। [...] দুঃখী আজ নিজেকে বিরাট করে দেখতে পারছে, এইটে মস্ত কথা। [...] আগেকার দিনে দুঃখজীবী নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে দেখেছে বলেই কোনোমতে নিজের শক্তিরূপ দেখতে পায়নি— অদৃষ্টের ওপর ভর করে সব সহ্য করেছে। [...] পৃথিবীজুড়ে দুঃখজীবীরা বেড়ে উঠেছে।’

দুঃখজীবীরা আসলে মেহনতি মানুষ। উৎপাদন তারাই করে। তারা একতাবদ্ধ হলে পুঁজিবাদীরা পালাবার পথ পাবে না। ওই ঐক্য যাতে না ঘটে তার চেষ্টা নানাভাবে চলছে। বিভেদের নানা মন্ত্র ও কৌশল প্রয়োগ করা হচ্ছে। কিন্তু মেহনতিরা যে জেগে উঠেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ওই জাগরণের ফলেই রাশিয়া, চীন, কিউবা ও ভিয়েতনামে বিপ্লব ঘটেছে এবং সমাজতন্ত্রের পক্ষের শক্তি প্রতিটি দেশে শক্তিশালী হয়ে উঠছে। পুঁজিবাদীরা আরেকটি কাজ করছে, তারা হতাশা ছড়াচ্ছে। যুদ্ধক্ষেত্রে হতাশার চেয়ে মারাত্মক দুর্বলতা আর হয় না। পুঁজিবাদীরা তা জানে। সৌভাগ্যক্রমে জানে তা সমাজতন্ত্রীরাও।

শেষ কথায় আসি। রাশিয়ার চিঠিতে রবীন্দ্রনাথের শেষ কথাটা ছিল, ‘সমবায় জয়ী হোক’। অক্টোবর বিপ্লবের ভিতর থেকে যে আওয়াজটা বের হয়ে এসেছে তা হলো, ‘বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক’। পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় সমবায় যে সফল হবে না, তার প্রমাণ বিশ্বের সর্বত্র পাওয়া গেছে, পাওয়া যাচ্ছে বাংলাদেশেও। সমবায় নয়, সামঞ্জস্যও নয়, প্রয়োজন সামাজিক বিপ্লবের। তার জন্য বিশ্বজুড়ে লড়াই চলছে, লড়াইতে আছি আমরাও, বাংলাদেশের মানুষেরাও।

রাষ্ট্রের সঙ্গে এ দেশের মানুষের দ্বন্দ্বটা পুরনো। রাষ্ট্র ছিল অত্যন্ত বৈরী স্বভাবের। আন্দোলনের ফলে রাষ্ট্র ভেঙেছে ১৯৪৭-এ; ভাঙল আবার ১৯৭১-এ; কিন্তু তার জননিপীড়নকারী চরিত্র অক্ষুণ্ন রয়েছে। এর কারণ সমাজ বিপ্লব ঘটেনি। নেতৃত্বে থেকেছে জাতীয়তাবাদীরা; তারা ছিল পেটি বুর্জোয়া স্বভাবের; তাদের লক্ষ্য ছিল বুর্জোয়া হওয়া। একাত্তরের যুদ্ধে সমাজতন্ত্রীরা ছিলেন; লড়াই করেছে মেহনতিরা, তারাই ছিল প্রধান। কিন্তু তাদের সুসংগঠিত পার্টি ছিল না। সমাজতন্ত্রীরা লড়েছেন, কিন্তু নেতৃত্ব দিতে পারেননি।

যুদ্ধ শেষে পেটি বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদীরা ক্ষমতায় বসে গেছে এবং রাষ্ট্রক্ষমতাকে ব্যবহার করে তারা তাই করেছে, আগের শাসকরা যা করেছে। রাশিয়ার জারের শাসনের সঙ্গে এদের স্বৈরশাসন পরিমাণের বিবেচনায় পৃথক হলেও, গুণের দিক থেকে অভিন্ন। মানুষ অপেক্ষায় আছে সমাজ বিপ্লবের জন্য।

লেখক : ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আহ্বায়ক, অক্টোবর বিপ্লব শতবর্ষ জাতীয় কমিটি।

সর্বশেষ খবর