মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান তাত্পর্যপূর্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাখাইনে নির্যাতন বন্ধ ও রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে মিয়ানমারকে চাপ দিতে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। রবিবার জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্সের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর অমানবিক নির্যাতন এবং তাদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করা শুধু এ অঞ্চলে নয়, এর বাইরেও অস্থিরতা তৈরি করছে। মিয়ানমার সরকারের আচরণের কারণে সে দেশ থেকে ৬ লাখ ২২ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ১৯৭৮ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে আসা আরও প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়— এই নীতির ভিত্তিতে আমাদের পররাষ্ট্রনীতি পরিচালিত হয়। বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আমরা সব সময়ই সুসম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এর ফলে আমরা ভারতের সঙ্গে গঙ্গা নদীর পানিচুক্তি এবং স্থলসীমান্ত চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের বিদ্যমান বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি করতে পেরেছি। একইভাবে মিয়ানমার এবং ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়েছে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূলে প্রধানমন্ত্রী কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর প্রতি একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে এ বিষয়ে তার সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, কিছু মানুষের অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ডের ফলে নিরীহ মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। জঙ্গিবাদ আজ আর কোনো নির্দিষ্ট দেশের সমস্যা নয়, এটি বৈশ্বিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্সের উদ্বোধনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান বিশেষ তাত্পর্যের দাবিদার। আশা করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর এ আহ্বানের ফলে কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্সে রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়টি আলোচ্যসূচিতে না থাকা সত্ত্বেও মানবিক কারণে গুরুত্ব পাবে। সমস্যার সমাধানে কমনওয়েলথ দেশগুলোর ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায়ও অবদান রাখবে। প্রধানমন্ত্রী তার উদ্বোধনী ভাষণে বাংলাদেশে সংসদ ও বিভিন্ন স্তরের স্থানীয় সরকারসহ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার বিষয়টিও তুলে ধরেছেন। বলেছেন নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গবৈষম্য নিরসনে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার ভিত শক্তিশালী করার মাধ্যমে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর