শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প

পারমাণবিক যুগে বাংলাদেশ

পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুল্লি নির্মাণের মাধ্যমে পারমাণবিক বিদ্যুৎ যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বৃহস্পতিবার দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি থেকে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে জাতীয় গ্রিডে। ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে তা অবদান রাখতে সক্ষম হবে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের পরিচিতি গড়ে উঠবে নিউক্লিয়ার ক্লাবের সদস্য হিসেবে। বাংলাদেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ৩২তম দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে। দেশের উন্নয়নের অন্যতম বাধা ইন্ধন শক্তির সীমাবদ্ধতা। ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে পারমাণবিক বিদ্যুতের পথে পা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই বললেই চলে। সময়ের চাহিদা পূরণে সরকার সে পথই বেছে নিয়েছে। রূপপুরের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে এক লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি টাকা ব্যয় হবে। ৫ বছর ৮ মাসে শেষ হবে এর নির্মাণ কাজ। আশা করা হচ্ছে, এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে আরও একাধিক পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নেবে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল ১৯৬০ সালে। যে সময় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল বর্তমানের চেয়ে এক শতাংশেরও কম। তবে পাকিস্তান আমলে এ প্রকল্প এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সরকার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। তবে ঘাতকের হাতে সপরিবারে তার হত্যাকাণ্ডের পর সে প্রচেষ্টা থেমে যায়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর রূপপুরে বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের কাজ শুরু করে। রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের চুক্তিও হয়। পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণের কাজ শুরু করার মাধ্যমে তা বাস্তবায়নের প্রথম ধাপটিতে পা দেওয়া হলো। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য দেশে বড় মাপের বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কোনো বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্রহণযোগ্যতাও বেশি।  তবে এ ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনায় ঝুঁকিও রয়েছে। সে ব্যাপারে সর্বাত্মক সতর্কতা নিশ্চিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর